Others PDF Books

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ হুমায়ূন আহমেদ Pdf

Aaj Dupure Tomar Nimantron humayun ahmed Pdf free  

বইয়ের নাম: আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
ক্যাটাগরি: উপন্যাস
ফাইল: Pdf
file size: 12 mb
পেজ: ১১২

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ রিভিউ:
বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ূন আহমেদের “আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ “এটি গল্প গ্রন্থ। ১৩ টি গল্পের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর রচনা কৌশল ভালোভাবেই তুলে ধরেছেন।

১ম গল্প – মিস মনোয়ারা
ইমন আর শারমিনের বিয়ে হয়েছে ১৫ মাস হয়। শারমিন সব কিছু করে তার রুবি খালার পরামর্শে। রুবি খালা মিসেস মনোয়ারার কাছে শরীর মেস্যাজ করান তাই শারমিনও মেস্যাস করাবে ঠিক করে এবং প্রতি সপ্তাহে একদিন করে মেস্যাজ শুরু করে। এর এক মাস পরে শারমিনের হাসবেন্ড ইমন খবরের কাগজে দেখতে পায় একজন লোক মিস মনোয়ারা নাম নিয়ে মেয়ে সেজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের মেস্যাজ করায়। গ্রেফতার করার পরেও পুলিশ সেই লোককে ছেড়ে দিয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো মেয়ে স্বাক্ষি দিতে রাজি হয়নি। খবরটা ইমন শারমিনকে দেখায়।
সপ্তাহের সেই বিশেষ মেস্যাজের দিনটা এলে শারমিন অস্থির হয়ে উঠে, এক সময় সে মিস মনোয়ারাকে ফোন দিয়ে আসতে বলে তার শরীর মেস্যাজ করানোর জন্য।

২য় গল্প – কাকারু
আশরাফুদ্দিন তার দুই বছরের মেয়ে সুমীর জন্ম দিনে ৫৭০ টাকা দিয়ে একটি কাক কিনে উপহার দেন। যেদিন তিনি কাকটি কিনে আনেন সেদিন বাড়িতে কেউ ছিল না, তিনি রাতে যখন শুতে যান তখন কাকটি মানুষের গলায় কথা বলে উঠে।
আশরাফুদ্দিন একটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে এ্যাসিস্টেন্ট কেশিয়ারর চাকুরী করেন। লেজার বুকের একটা হিসাব তিনি মিলাতে পারছেন না বলে প্রতিদিনই তার বেরহতে দেড়ি হচ্ছে।
তাদের সংসার সুমীর বড় মামা মুমিনের নির্দেশে চলে। কারণ তারা থাকেন মুমিন সাহেবের ফ্লাটে, বিপদে আপদে মুমিন সাহেব সাহায্য করেন। অফিস থেকে ৫,২৬,০০০/= টাকা একবার হারিয়ে ফেললেন আশরাফ সাহেব, সেই টাকা মুমিন দিয়ে দিলো।
কাকটার সাথে তিনি তার টাকা হারানোর কথাটা বললেন। কাকটা বলল টাকা নিয়েছে হেড ক্যাশিয়ার। কাকের পরামর্শে তিনি তার বসকে ফোন করে বলেন “কা – কা – কা তুই গু খা”। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন কাকটি নেই পালিয়ে গেছে। পরদিন রাতে তিনি যখন আবার শুতে গেলেন তখন কাকটি তার জানালায় এসে বসলো। আবার তার সাথে কথা বলতে শুরু করলো, কাকের চাপা চাপিতে তিনি আবার হেড ক্যাশিয়ারকে ফোন করে বললেন “কা – কা – কা তুই গু খা”।
পরদিন অফিসে গেলে বড় সাহেব তাকে ডেকে পাঠান। তিনি স্বীকার করেন যে তিনি রাতে হেড ক্যাশিয়ারকে ফোন দেন, এবং তার সন্দেহ হেড ক্যাশিয়ার টাকাটা চুরি করে তাকে ফাঁসিয়েছে।
নতুন করে আবার তদন্ত হয় আর তাতে প্রমাণ হয় হেড ক্যাশিয়ারই টাকা চুরি করেছে। হেড কেশিয়ারর চাকরি চলে যায়। আশরাফ সাহেব হেড ক্যাশিয়ার হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি তার নিজের ফ্লাটে উঠেন আর মুমিন সাহেবের টাকাটাও ফেরত দিয়ে দেন। কিন্তু সেই কাকটি আর ফিরে আসে না।

৩য় গল্প – পঙ্গু হামিদ
হামিদ মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত, আসলে সে ছিল একজন রাজাকার। যুদ্ধের সময় সে অন্য এলাকাতে রাজাকার হিসেবে নাম লিখায়। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে সে নিজের এলাকাতে ফিরে সবাইকে বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে সে পঙ্গু হয়নি, বরং কদিন আগে কাঁঠাল গাছ থেকে পরে সে পঙ্গু হয়েছে। তার এক নাতনি আছে দু’বছর বয়সী, নাম সুধা। যুদ্ধের সময় রাজাকার ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা রাধা নামের একটি মেয়ের সাথে সুধার অনেক মিল। রাধা হাতিদের মুখে থুতু দিতো, সুধাও সেই একই ভঙ্গিতে তার মুখে থুতু দেয়। এই কারণে হামিদের মনে শান্তি নেই। শেষ পর্যন্ত হামিদ তার নাতনি সুধাকে কুয়ার জলে ফেলে দেয়ে।

৪র্থ গল্প – ফরটি নাইন
ডা. মাসুম রহমানের কাছে ববিচিত্র একজন রোগী আসেন আসাদুজ্জামান নামে। তার বক্তব্য তিনি প্রতিনিয়ত খাটো হয়ে যাচ্ছেন। বিয়ের সময় তার হাইট ছিল ৫ফুট ৭ইঞ্চি, আর তার স্ত্রীর মৃত্যুর ৫ বছর পরে আজ তার উচ্চতা ৪ফুট ৯ইঞ্চি। ডা. রোগীর কথা কিছুই বিশ্বাস করলেন না। কিন্তু রোগী নাছরবান্দার মতো তার পিছনে লেগে রইল। বিশেষ বিশেষ দিনে তাকে কার্ড পাঠাতে শুরু করলো, প্রতি মাসে চিঠি লেখা শুরু করলো। বছর খানেক পরে মাসুম সাহেব দেশের বাইরে চলে গিয়ে রেহাই পেলেন। কিন্তু অনেক অনেক বছর পরে হঠাত করে তিনি লক্ষ্য করলেন তার উচ্চতা কমতে শুরু করেছে। কমতে কমতে তার উচ্চতা এখন ৪ফুট ৯ইঞ্চিতে এসে গেছে।

৫ম গল্প – সগিরন বুয়া
সগিরন টুটুল নামের একটি বাচ্চাকে দিনের বেলা দেখাশোনা করে, তার কাজই হচ্ছে টুটুলকে দেখে রাখা। সগিরনের একটি মেয়ে ছিল, প্রচণ্ড অভাবের কারণে সেই মেয়েকে বেচে দিতে হয়ে ছিল। সেই মেয়ের সাথে মনে মনে মিল খোজে টুটুলের।

৬ষ্ঠ গল্প – নয়া রিকশা
কুদ্দুস ও জাহেদার প্রথম সন্তান ছেলে হয়েছে। কুদ্দুস ভাড়ায় রিকশা চালায়। ছেলেকে নিয়ে তাদের স্বপ্নের শেষ নাই। হঠাত করেই নবজাতক বাচ্চার একটা অভিনয়ের জন্য জাহেদার কাছে তার ছেলেকে চায়। জাহেদা ছেলেকে দিতে রাজি হয়। কিন্তু শুটিং চলাকালীন হাত থেকে পরে বাচ্চাটি মারা যায়। ছবির ডাইরেক্টর সাহেব জাহেদাকে দশ হাজার টাকি দিয়ে বলেযান বাচ্চা মারা গেছে হার্ট এ্যাটাক করে।

৭ম গল্প – আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ
মীরা তার হতদরিদ্র প্রেমিককে দুপুরে খাবার নিমন্ত্রণ দেয়। সে তার বাবার সাথে গিয়ে নানা ধরনের মাছ কিনে নিয়ে আসে। সেগুলি রান্নাও হয়, কিন্তু মীরা তার বাবার ভয়ে তার প্রেমিককে বাসায় নিতে পারে না, কারণ তার বিয়ে ঠিক করা আছে এক ডাক্তার ছেলের সাথে। তাই সে তার প্রেমিক যখন তার বাড়ির কাছে আসে তখন তার হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে বলে সামনের রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিতে। এদিকে মীরার কান্না দেখে তার বাবা সেই ছেলেকে রেস্টুরেন্ট থেকে ডেকে বাসায় নিয়ে যায় খেতে।

৮ম গল্প – আনোভা
মকবুল আমেরিকায় ট্যাক্সি চালায়। এক তুষার পাতের রাতে সে নিউইয়র্ক ফেরার সময় রাস্তা থেকে এক মহিলা আর তার বাচ্চা মেয়েকে গাড়িতে নেয়। কিছু দূর এসে খাবার দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে সে দেখে গাড়িতে শুধু মেয়েটি বসে আছে, তার মা চলন্ত গাড়ি থেকে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মেয়েটির নাম আনোভা।
মকবুল পুলিশে ফোন করে জানায় ঘটনাটি। পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে যায় কিন্তু তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বের করতে পারে না। পরে মকবুল আনোভার সাথে দেখা করতে গেলে আনোভা জানায় যে তার মায়ের সাথে মকবুলের আবার দেখা হবে। তারপর থেকে মকবুল সেই বিশেষ রাতে সেই একই রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে আনোভার মায়ের দেখা পাওয়ার জন্য।

৯ম গল্প – তিনি
হঠাত করেই লক্ষ্য করলেন তিন এ্যালিফেন্ট রোডে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি কে, তার নাম কি, কোথায় থাকেন কি করেন, এখানে কেন এসেছেন কিছুই মনে করতে পারছেন না। এদিক সেদিক ঘুরে তার সারাটা দিন কেটে গেল, কিন্তু কিছুই মনে পড়লো না। দুপুরে পার্কে ঘুমিয়েছেন, ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার পকেটে অল্প যে কটা টাকা ছিল সেটাও কেউ নিয়ে গেছে। এক সময় রাত নেমে আসে, শুরু হয় বৃষ্টি। তিনি এ্যালিফেন্ট রোডের বন্ধ দোকানের সামনে একা দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকেন।আসলে তিনি কে!!

১০ম গল্প – আলাউদ্দিনের ফাঁসি
জজ নুরুল হক সাহেবের সামনে কাঠ দগড়ায় দাঁড়ানো আলাউদ্দিন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ একটি শিশুকে অপহরণের পরে হত্যা করার। বাচ্চাটিকে অপহরণের পরে ২০লাখ টাকা মুক্তিপন চায় সে। বাচ্চাটির পরিবার ১০ লাখ টাকা দেয়ার পরে বাকি ১০ লাখ টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পরে সে। এদিকে বাচ্চাটির লাশ পাওয়া যায় আশুলিয়ায় বস্তা বন্দি অবস্থায়। সেই ছবি আসে পত্রিকাতেও। পুলিশ আলাউদ্দিনের বাসা থেকে বাচ্চাটির পায়ের জুতা উদ্ধার করে আদালতে জমা দেয়। এ দিকে পত্রিকাতে বাচ্চাটির লাশের যে ছবি আসে সেখানে দেখা যায় বাচ্চাটির পায়ে জুতা আছে। জজ সাহেব বুঝতে পারেন যে কেসটি পুলিশ সাজিয়েছে আলাউদ্দিনকে ফাঁসানোর জন্য, তাই তিনি আলাউদ্দিনকে খালাস করে দেন।
কদিন পরে আলাউদ্দিন জজ সাহেবের বাসায় এসে বলে যে বাচ্চাটির যে জুতা তার বাসায় পাওয়া গেছে সেই জুতা সে নিজেই বাজার থেকে কিনে এনে রেখে ছিল। বাচ্চাটিকে আসলে সেই অপহরণ করে হত্যা করেছে।

১১তম গল্প – ভালোবাসা
আবুল কাশেমের সাথে বিয়ের পরে সুইটি বেশ কিছু দিন গ্রামের বাড়িতেই ছিল। তখন কাশেম সুইটির হাত খরচা হিসেবে প্রতিমাসে ৭০০ টাকা পাঠাতো। কিছু দিন পরে সুইটি যখন তার স্বামীর সংসার করতে ঢাকায় আসলো তখন দেখল সংসার বলতে তেমন কিছু নেই। কদিন পরেই জানতে পারলো তার স্বামী আসলে মলম পাটির লোক। কিন্তু তার পরেও সে তার স্বামীকে ছেড়ে যেতে পারলো না। সে তার স্বামীর প্রেমে পরে গেছে। ভালোবাসা এমনই হয়।আহা ভালোবাসা!!

১২তম গল্প – টিকটিকি
জহির তার স্ত্রীকে খুন করে, আর একজন পুলিশ অফিসার তাকে প্রশ্ন করে খুব সহজেই সেটা ধরে ফেলে।

১৩তম গল্প – ভূত
ইসলাম উদ্দিন চাকুরী থেকে রিটায়ার্ড করার পরে চলেছেন নিজের গ্রামের বাড়িতে। তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। পেনশনের টাকা দিয়ে উত্তরায় একটা জমি কিনেছিলেন, সেটার দখল পাননি। ব্যবসায় করার জন্য বন্ধুর সাথে পাটনার হিসেবে ৪ লাখ টাকা খাটিয়ে ছিলেন সেটাও ভরা ডুবি যায়। তিনি যখন তার গ্রামের পরিত্যক্ত ভাঙ্গা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন চারধার অন্ধকার হয়ে গেছে। তিনি প্রচণ্ড তৃষার্ত ছিলেন, ঠিক সেই সময় তার পেছন থেকে একটি ছোট ছেলে বলে উঠলো ডাব খান। তিনি ডাব খেতে খেতে ছেলেটির সাথে আলাপ করে জানতে পারলেন ছেলেটি তার বাড়িতেই একা একা থাকে। রাতে তিনি খিচুরি রাঁধলেন, কিন্তু গোসল করে এসে দেখেন ছেলেটি কোথাও নেই, আবার শোয়ার সময় দেখলেন ছেলেটি তার পাশে শুয়ে আছে, কিন্তু সকাল হতেই আবার ছেলেটি নেই হয়ে গেল। কদিনের মধ্যেই ছেলেটির সাথে তার ভীষণ ভাব হয়ে গেল, ছেলেটিকে তিনি বক্র বলে ডাকেন। এই কদিন তিনি এটাও নিশ্চিত হলেন যে বক্র আসলে মানুষ না, অন্য কিছু। বক্র মাঝে মাঝেই তার জন্য নানান জিনিস নিয়ে আসে নদীর তলা থেকে, সবই স্বর্ণের। কিন্তু তার কোনো লোভ হয় না, তিনি সব আবার আগের যায়গায় রেখে আসতে বলেন। বছর ৫ পরে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পরে। সেই সময় তার ব্যবসার পাটনার তার সাথে দেখা করতে আসেন। ১০ হাজার টাকা তাকে দিতে চান কিন্তু তিনি তা নিতে রাজি হন না। রাতে বক্র আসে তার জন্য মাছ নিয়ে, সেই মাছ আগুনে পুরিয়ে লবণ মেখে তিনি খান। তিনি ছাড়া আর কেউই বক্রকে দেখতে পায় না।

পাঠপ্রতিক্রয়াঃ
হুমায়ূন আহমেদের লেখার চমৎকারিত্ব সব স্থানে একই।তাই এই বইটিতে নিজস্ব ধারার স্বাদ পাবেন,এই কথা বলা যায়।গুনি মানুষের লেখা নিয়ে আমার মতো ছোটো মানুষের বলার কিছু থাকে না।শুধু বলতে চাই পড়ে ফেলুন,মুগ্ধ হবেন। আর হ্যা আজ দুপুরে তোমার/ আপনার নিমন্ত্রণ কিন্তু  এই বইটি পড়ার নিমন্ত্রণ।

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ Aaj Dupure Tomar Nimantron pdf লিংক: click here

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ pdf

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!