লালসালু সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ bangla pdf Download
Lalsalu Syed Waliullah Book Bangla pdf free download
বইয়ের নাম: লালসালু(lal shalu)
ক্যাটাগরিঃ সামাজিক উপন্যাস
প্রকাশনীঃ ঢাকার কমরেড পাবলিশার্স
প্রথম প্রকাশঃ ১৯৪৮ সাল
লালসালু উপন্যাস সংক্ষেপে:
তাছাড়া ‘লালসালু’ উর্দু,ফরাসি ও ইংরেজি অনুবাদে প্রকাশিত হয়।
লালসালু উপন্যাসের প্রধান চরিত্র: মজিদ চরিত্র। মজিদ হচ্ছে উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। গল্পে শ্রাবনের শেষে নিরাক পড়া এক মধ্যাহ্নে দেখা যায় মহব্বত নগর গ্রামে প্রবেশ করে এক ভন্ড ও প্রতারক, যার নাম মজিদ।মাছ শিকারের সময় তাহের ও কাদের দেখে যে,মতিগঞ্জের সড়কের ওপর একটি অপরিচিত লোক মোনাজাতের ভঙ্গিতে পাথরের মূর্তির মতোন দাঁড়িয়ে আছে।পরে দেখা যায়,ওই লোকটিই গ্রামের মাতব্বর খালেক ব্যাপারীর বাড়িতে সমবেত গ্রামের মানুষকে তিরষ্কার করছে,’আপনারা জাহেল,বেএলেম,আনপাড়হ্ ইত্যাদি শব্দে।মোদাচ্ছের পিরের মাজারকে আপনারা এমন করি ফেলি রাখছেন?’
অলৌকিকতার অবতারণা করে মজিদ নামের ওই ব্যক্তি জানায় যে,পিরের স্বপ্নাআদেশে মাজার তদারকির জন্য জন্যে তার এ গ্রামে আগমন।মজিদের তিরষ্কার ও স্বপ্নাআদেশের বিবরণ শুনে গ্রামের মানুষ ভয় ও শ্রদ্ধায় এমন বিগলিত হয় যে তার প্রতিটি হুকুম তারা পালন করে গভীর আগ্রহে।গ্রাম প্রান্তের বাঁশঝাড় সংলগ্ন কবরটি দ্রুত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়।ঝালরওয়ালা লালসালুতে ঢেকে দেওয়া হয় কবর।তারপর আর পিছু ফেরতে হয় না।কবরটিই হয় মজিদের শক্তির উৎস।মাজারের আয় দিয়ে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মজিদ ঘরবাড়ি ও জমিজমার মালিক হয়ে বসে এবং তার মনোভূমির এক অনিবার্য আকাঙ্ক্ষায় শক্ত-সমর্থ লম্বা চওড়া একটি বিধবা যুবতীকে বিয়ে করে ফেলে।
এরইমধ্যে পাশের গ্রামের এক নতুন পীর আসে।যার ফলে,মজিদের
দিন-দিন মজিদের ভন্ডামি বাড়তে থাকে।একসময় গ্রামের সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী প্রধান হয়ে উঠে মজিদ।খালেক ব্যাপারীর বউ আমেনার চরিত্রে কলঙ্ক আরোপ করে খালেক ব্যাপারীকে তালাক দিতে বাধ্য করে মজিদ।
লালসালু উপন্যাসের সমাজ বাস্তবতাঃ
মজিদের এই মাজারকে কুসংস্কার বলে গ্রামবাসীকে শিক্ষার আলোতে আলোকিত করার জন্য জ্বলে উঠে তরুণ শিক্ষিত যুবক আক্কাস।কিন্তু,মজিদ এমন কূটনৈতিক খেলা খেলে যে আক্কাসকে গ্রাম ছাড়তে হয়।এইভাবেই চলতে থাকে মজিদের ভন্ডামি, আর সাথে যেই কেউ মজিদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তখন মজিদ কূটবুদ্ধির দ্বারা তাকে হেনস্তা করে ছাড়ে।
#প্রশ্নঃ
মজিদ কি এইভাবেই মহব্বত নগর গ্রামকে তার ভন্ডামির মাধ্যমে চালিয়ে যাবে, নাকি আক্কাস কিংবা আক্কাসের মতো কেউ শিক্ষার আলোয় এই গ্রামকে আলোকিত করবে?নাকি শুরু হবে আরেক সমস্যা?আরেক মজিদের আরেক ভন্ডামি?
লালসালু উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে প্রিয় চরিত্রঃআক্কাস
মজিদের ভন্ডামির ফলে গ্রাম যখন মজিদের তৈরী কথাগুলোকে বিশ্বাস করতে থাকে,তখনই আক্কাস আসে গ্রামকে মজিদ মুক্ত করতে।গ্রাম থেকে কুসংস্কার দূর করতে।গ্রামকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে অন্য দশটা শিক্ষনীয় গ্রামের মতো!
যার স্বপ্ন ছিলো গ্রামের মধ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠান করার!আর যাতে করে গ্রাম হয়ে উঠবে শিক্ষিত মানুষে পরিপূর্ণ।
#পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ
‘লালসালু’একটি সামাজিক উপন্যাস। একটি সামাজিক উপন্যাস বলতে বুঝি যে,যে উপন্যাসে সামাজিক বিষয়,রীতি-নীতি, ব্যক্তি মানুষের দ্বন্দ্ব, আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রাধান্য থাকে তাকে সামাজিক উপন্যাস বলা হয়।
লালসালু’উপন্যাসে যা সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তুলিয়েছেন লেখক।লালসালুতে আছে যুগ যুগ ধরে আবহমান শেকড়গাড়া কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও ভয়ভীতি।গ্রামবাসীর সরলতা ও ধর্মবিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ভন্ড ধর্মব্যবসায়ী মজিদ প্রতরণার বিস্তারের মাধ্যমে কীভাবে নিজের শাসন ও শোষনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে তারই বিবরণে সমৃদ্ধ উপন্যাস এই ‘লালসালু’।
‘লালসালু’লেখকের প্রথম উপন্যাস।কিন্তু প্রথম উপন্যাস হলেও লেখক এমনভাবে সাজিয়েছেন যে, এটা লেখকের প্রথম উপন্যাস কেউ বলবে কি-না আমার মনে হয় না।এমন একটি
উপন্যাসে ভুলত্রুটি ধরা আমার পক্ষে সম্ভব নয়!সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ যে অসাধারণ কুশলী শিল্পী তা তাঁর ‘লালসালু’ উপন্যাসের চরিত্রগুলি বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়।
#শিক্ষনীয়_দিকঃ
‘লালসালু’ যেহেতু একটি সার্থক সামাজিক উপন্যাস। তাই এর মধ্যে রয়েছে সমাজের সবকিছু।উপন্যাসটি পড়ার মাধ্যমে আমরা সমাজ ও কুসংস্কার সম্পর্কে জানতে পারবো। লালসালু উপন্যাস hsc সিলেবাসে আছে, এখান থেকে mcq নোট করে রাখতে পারেন।