হাজার বছর ধরে Pdf Download – Hajar bochor dhore pdf
book | হাজার বছর ধরে |
Author | জহির রায়হান |
Publisher | অনুপম প্রকাশনী |
ISBN | 9789844043572 |
Edition | 5th Print, 2012 |
Number of Pages | 64 |
Country | বাংলাদেশ |
Language, file type | বাংলা Pdf Download |
হাজার বছর ধরে উপন্যাস এর চরিত্র সমূহ- মন্তু, টুনি, মকবুল, আম্বিয়া, রশিদ, আবুল, সুরত আলী ইত্যাদি।
হাজার বছর ধরে উপন্যাস রিভিউ কাহিনী সংক্ষেপ:
একটি দীঘিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি গ্রাম। দিঘীর নাম পরির দীঘি। সেই দীঘিকে ঘিরে কিছু রূপকথার গল্প। দীঘির পাড়ে একটি গ্রামের বাড়ির ছোট ছোট খুপরি ঘরে আটটি পরিবারের খেঁটে খাওয়া মানুষের বাস। সেই বাড়ির নাম শিকদার বাড়ি। যেখানে কেউ নিজের স্ত্রীদের দিয়ে কায়িক শ্রম দিয়ে উপার্জন করে, কেউ অন্যের জমিতে চাষ করে, আবার কেউবা এত পরিশ্রমের মাঝেও পুঁথি পাঠ করে অন্যদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। অন্যদিকে তাঁদের পরিশ্রান্ত জীবনাচরণ যার অনেকটাই কুসংস্কার প্রভাবিত।
এই উপন্যাসের নায়ক মন্তু। শিকদার বাড়ির একমাত্র অকৃতদার পুরুষ। বাড়ীর প্রধান অভিভাবক মকবুল বুড়োর কনিষ্ঠা স্ত্রী টুনি বয়সের কারণেই সম্ভবত মন্তুর মাঝে নিজের বন্ধু খুঁজে নিয়েছিলো। সেই নিদ্রাহীন মাছ ধরার রাত গুলোতে। বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার নৌকাযাত্রায় মন্তু টুনিকে এতটা কাছে পেয়েও নিজের সীমা লঙ্ঘনের চিন্তা মনে ঠাই দেয়নি। একজন অশিক্ষিত গ্রামের খেঁটে খাওয়া যুবকের সহিষ্ণুতার মাঝে আমরা দেখতে পাই এদেশের লক্ষ মন্তুকে যাদের কাঁধে রেখে আজ নিঃশ্বাস ফেলে অর্জিত নব্য সভ্যতা। কিন্তু আজ তথাকথিত শিক্ষিত পুরুষেরা যখন নারীদের অসম্মান করে তখন ঐ হাজার বছরের পুরাতন মন্তুর কাছে তারা যে কিভাবে হেরে যায় তারা হয়তো সে খবর রাখেনা।
পরপর দুই স্ত্রীকে হত্যা করার পর আবুলের তৃতীয় স্ত্রী হালিমা যখন মৃত্যুর মুখে ঢলে পরে আমার খারাপ লাগেনি। কারণ হালিমার অতীত হয়নি তারা আজও বর্তমানকে দখল করে রেখেছে। হাজার বছর ধরে পশুরা পশুই রয়ে গেছে। তাই আজও প্রতিদিন কোন না কোন হালিমা কোন না কোন আবুলের হাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে নিঃশব্দে।
বুড়ো মকবুলের মৃত্যুর পর যখন মন্তু টুনিকে যখন শান্তির হাঁটে নিয়ে বিয়ে করতে চাইলো। তখন টুনি অতিচাপা স্বরে ফিসফিস করে বলেছিল, “না তা আর হয়না মিয়া। তা আর হয়না”। কেন টুনি তার আরাধ্য প্রেমকে প্রত্যাখান করেছিল যার জন্য সে প্রতিবেশী রশীদের স্ত্রী সালেহাকে নির্মমভাবে প্রহার করতেও দ্বিধা করেনি?
হাজার বছর ধরে উপন্যাস জহির রায়হান pdf পাঠ প্রতিক্রিয়া:
শীত যায়, আসে বসন্ত। আসে নতুন যুগ। হাজার বছরের পরম্পরায় ভাঁটা দিয়ে এসেছে একাবিংশ শতাব্দী। অন্ধকার রাত্রি পেরিয়ে এই শতাব্দীর নিজেকে আলোর স্বত্বাধিকারী দাবী করে। কিন্তু আলো মানে কি শুধু যন্ত্রের উৎকর্ষতা। মানে কি শুধু ভালো খাওয়া, ভালো পরা। নতুন শতাব্দীর আলো যদি তরুণের মাঝে মন্তুর মত সহিষ্ণুতা, সম্মানবোধ জাগ্রত করতে না পারে, টুনির মত জীবনকে বিবেকের দৃষ্টিতে না দেখতে না পারে, সুরত আলীর পুঁথি পাঠের মত স্বস্তি না দিতে না পারে সেই আলো ব্যর্থ। ছোট একটি বইয়ে গ্রামের বিভিন্ন বিষয় যেন চলে এসেছে। যৌতুক প্রথা, গ্রামে নারীদের নির্যাতন, বিভিন্ন রোগ, কুসংস্কার, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, মানুষে মানুষে বিবাদের মতো গ্রামের বিভিন্ন নেতিবাচক দিকে উঠে এসেছে।।
আর গল্পের মাঝখানে মাঝখানে যে “পুঁথি” গুলো, আহা!!
এক কথায় গ্রামের মানুষের মানসিকতা, তাদের জীবনযাপন, নেতিবাচক বিভিন্ন দিক, তাদের সংস্কৃতি, নদী-নৌকা-জেলে সহ বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে এই একটি বইয়ে।
একটি সাধারণ গ্রামের মানুষদের সুখ দুঃখের কাহিনী- গ্রামের মানুষদের নিজেদের মধ্যকার সত্বেও তাদের পারস্পরিক সম্মান সূচক সম্পর্কগুলো- বুড়ো মকবুল,রশিদ, আবুল, সুরত আলী এবং মন্তুর মাঝে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে।মন্তুর প্রতি টুনির অগাধ ভালোবাসা যেন ভালোবাসার নতুন এক সংজ্ঞা তৈরি করে। উপন্যাসটিতে জহির রায়হানের লেখা গ্রাম ও গ্রামের পরিবেশের বর্ণনা খুবই ভাললাগে। পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল যেন সেই গ্রামে হারিয়ে গিয়েছি। গ্রামের পরিবেশে মাধুর্যতা থাকলেও নারীর কোন অধিকার নেই। সেখানে নারী পুরুষের হাতের পুতুল মাত্র। এছাড়াও আছে বহুকাল ধরে চলে আসা নানা ধরনের কুসংস্কার। সবকিছু মিলিয়ে বই পড়া শেষে করে অন্য রকম একটা মায়া কাজ করে।
উপন্যাসটির একটা বিশেষ ব্যাপার হচ্ছে সহজপাঠ্য আর কাহিনীর স্বাচ্ছন্দে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা।
সুখের সন্ধানের মানুষ আজ স্বস্তির অর্থ ভুলে গেছে। আজও মন্তুর ঐ ছাউনি দেয়া ছোট্ট নৌকাটায় টুনিকে নিয়ে কখনো স্রোতের অনুকূল আবার কখনো প্রতিকূলে ভেসে বেড়ানো, মাঝপথে মুঠো মুঠো শুকনো চিড়ে নিঃশেষ করার মাঝেই সুখ লুকিয়ে বাঁকা হাসি হাসে। আর সবাই তাঁকে দাম দিয়ে কেনা মানুষের ভিড়ে খুঁজে মরে।
কিছু উপন্যাস শুধু বইয়ের পাতায় নয় বরং মানুষের জীবনে মিশে থাকে। উপন্যাসগুলো পড়ে মনে হয় মানুষের জীবনের প্রতিফলন দেখা যায়। “হাজার বছর ধরে” এমনই একটি উপন্যাস
হাজার বছর ধরে উপন্যাসের সেরা উক্তি
“ধীরে ধীরে রাত বাড়তে লাগলো। চাঁদ হেলে পড়লো পশ্চিমে। উঠোনের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলো। পরীর দীঘির পারে একটা রাতজাগা পাখির পাখা ঝাপটানোর আওয়াজ শোনা গেলো। রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত।”
বই: হাজার বছর ধরে pdf
লেখক: জহির রায়হান
প্রকাশনায়: অনুপম প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৬৪
মুদ্রিত মূল্য: ১৩০
Hajar bochor dhore pdf link-