জানালার ওপাশে সাদাত হোসাইন Pdf Download
জানালার ওপাশে সাদাত হোসাইন Pdf book Download
(অনেক পুরাতন একটা বই)
লেখকের নাম: সাদাত হোসাইন
ক্যাটাগরি: সমকালীন গল্প
১ম সংস্করণ: ২০১৩
জানালার ওপাশে বই রিভিউঃ
এ আর্টিকেল দ্বারা জানতে পারবেন লেখক সাদাত হোসেনের বেড়ে উঠার গল্প:
হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার পেল সাদাত হোসাইন
বাংলাদেশে কথাসাহিত্যের আকাশে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে ওঠার জানানটা সাদাত দিয়েছিল সেই ‘১৫ সালে। মানে ২০১৫ সালে যখন তার ‘আরশিনগর’ উপন্যাসটি সে লিখে ফেলেছিল। এর আগে খুবই ছোটো আকারের দুইটি গদ্যের বই প্রকাশ হয়েছিল তার। ছোটোগল্প সংকলন ‘জানালার ওপাশে’ এবং প্রথম উপন্যাস ‘আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই’।
বই দুটির মূল্য ছিল ১৫০ টাকার মধ্যে। কিন্তু পরের বছরই ও যখন একটি ঢাউস আকারের বই প্রকাশের জন্য এলো, প্রকাশক হিসেবে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এত অল্প বয়সে লেখা এত বড়ো আকারের বই! পাঠক কিনবে তো? কিন্তু সাদাত দমে যাবার পাত্র নন। আমাকে অভয় দিলো। সেই প্রথম বইয়ের মতোই।
ভাইয়া, ‘আপনি বইটি প্রকাশ করেন। বিক্রি হয়ে যাবে। আমার লেখার ওপর আমার বিশ্বাস আছে।’
হ্যাঁ, সাদাতের আত্মবিশ্বাস আর তার পরিশ্রম তাকে খুব বেশিদিন অন্তরালে রাখতে পারেনি। ২০১২ থেকে ২০১৯। মাত্র সাত বছরের যাত্রাপথ।
২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘অন্দরমহল’ বইটি যখন পাঠক দীর্ঘ লাইন দিয়ে তার অটোগ্রাফের জন্য অপেক্ষা করত, দৃশ্যটি আমার মতো অনেককেই আশান্বিত করেছিল। বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে একজন নতুন নক্ষত্র উদিত হলো বলে অনেকেই বলতে লাগলেন। কিন্তু মিডিয়া তখনও নিরব। সাংবাদিক কাম লেখক অনেকের চেহারাই মনে পড়ে। মনে পড়ে অনেক প্রকাশকের মুখও। নতুন একজন লেখককে নিয়ে আমরা মিথ্যাচার করছি, অল্প অল্প মুদ্রণ করে তাকে বেস্টসেলার বানিয়ে দেয়া হচ্ছে, ব্লা ব্লা ব্লাা… না মিডিয়াগুলো তখনও মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। তরুণ অনেক অনেক লেখক তখনও মিডিয়ার আলোয় উদ্ভাসিত।
বছর বছর বাড়তে থাকে নতুন নতুন পুরস্কারের মঞ্চ। একটির সঙ্গে অন্যটি পাল্লা দিয়ে বাড়ায় পুরস্কারের অর্থমূল্যও। অভিভাবক হিসেবে সাদাতকে বলেছিলাম, এইসব পুরস্কার নিয়ে মোটেও মাথা ঘামিও না। তোমার পুরস্কার তুমি পেয়ে গেছ। তোমার মতো তরুণ একজন লেখকের বই পাঠক লাইন দিয়ে কিনছে ঢাকা কিংবা ঢাকার বাইরে, দেশ কিংবা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও। একজন লেখকের সবচাইতে বড়ো পুরস্কার তার পাঠকের ভালোবাসা। তবে সঙ্গে এও বলেছিলাম, আমাদের দেশের পুরস্কারের মঞ্চগুলো একসময় তোমার কাছে ছুটে আসবে, আসবেই।
আজ সাদাত পুরস্কার পেল। হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার। এক্সিম-ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার। একটি বড়ো পুরস্কার। আমার কাছে এই পুরস্কারটি বড়ো, কারণ পুরস্কারের নামকরণ। বাংলাদেশের কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নামে প্রবর্তিত এই পুরস্কারের নবীন শাখায় সাদাত হোসাইন-ই সবচাইতে বড়ো দাবিদার। আরও আগে পেলে আরও ভালো লাগত। কিন্তু এখনও আনন্দ কম হচ্ছে না।
সাদাতের এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে আমার, আমাদের ভালোলাগা আরও বেশি।
জেনে ভালো লাগছে ভাষাচিত্র থেকে প্রকাশিত ‘নিঃসঙ্গ নক্ষত্র’ বইটির জন্য পুরস্কার পেয়েছে সাদাত। প্রকাশক হিসেবে এটি আনন্দের। আরও একটি আনন্দযোগ আছে আমার। এই বইটির প্রচ্ছদ আমার করা। যদিও সাদাতের একান্ত ইচ্ছা ও অনুরোধেই প্রচ্ছদটি করেছিলাম। সাদাত তার আত্মবিশ্বাসের জোরেই এই ধরনের কাজগুলো করে সবসময়। কিছুতেই প্রচ্ছদ পছন্দ হচ্ছিল না আমার আর সাদাতের। বেশ কটি প্রচ্ছদ করার পর আমরা এই প্রচ্ছদটি নির্বাচন করেছিলাম। তাই এই বইটির প্রতি আমার আলাদা একটি দরদ কাজ করে সবসময়।
বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব জুড়েই নিউমিডিয়ার প্রভাব। অনেকেই আজকাল বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ঘটে গেছে বিশ্বজুড়ে। আর সেটা এই নিউমিডিয়ার কারণেই। আমাদের দেশে এই নিউ মিডিয়ার প্রভাব, লাভ কিংবা ক্ষতি নিয়ে আমরা কে কতটুকু মাথা ঘামাই তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু এই নিউ মিডিয়ার যুগে, আমাদের প্রকাশনা জগতে খুব নীরবে, খুবই নীরবে একজন সাদাত হোসাইন-এর আবির্ভাব। একসঙ্গে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছি। সাদাতের চোখে সবসময় একটা বিস্ময় কাজ করে। অনেক অনেক কিছু জয় করার নেশা তার মন ও মননে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বসভায় তার চোখ।
একজন প্রকাশক হিসেবে নয়, একজন বড়োভাই, একজন অভিভাবক হিসেবেও আমি বিশ্বাস করি সাদাতের এই স্বপ্ন একদিন বাস্তবায়ন হবে।
কারণ মাত্র সাত বছরের পথচলায় যেভাবে সে তার আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম, মেধা আর যোগ্যতার প্রমাণ করে চলেছে, তাতে আমাদের বিস্ময় লাগে, বিস্ময় জাগে।
প্রিয় সাদাত, তোমার এই পুরস্কারপ্রাপ্তি তোমার নতুন স্বপ্নে আরও আরও পালক যোগ করবে এটা প্রত্যাশা করি।
শুভকামনা নিরন্তর।
(ভাষাচিত্র পরিবার থেকে তাকে লেখা)