Screenshot 09 12 2023 19.40.02

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ, আরবি, অর্থ এবং ফজিলত (A to Z সব জানুন)

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ-  দুরুদ শরীফের ফজিলত – দুরুদ শরীফ সমূহ – দুরুদে ইব্রাহীম বাংলা উচ্চারণ সহ – ছোট দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ – ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ – দুরুদে ইব্রাহীম durud sharif bangla – দুরুদ শরিফ ছোট দরুদ শরীফ

দুরূদ শরীফের অর্থ হলোঃ

 শুভকামনা, গুণকীর্তন, রহমত, দয়া, করুণা, তাসবীহ, ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রর্থনা করা ইত্যাদি ইত্যাদি। এই দুরুদ পড়ে আমরা আমাদের বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদের (সাঃ) এর শান্তি প্রার্থনার জন্য। এই পোস্টটি পড়ে জানতে পারবেনঃ দুরুদ শরীফ আরবিতে, দুরুদ শরীফের বাংলা উচ্চারণ, দুরুদ শরীফের বাংলা অর্থ, দুরুদ শরীফের ফজিলত এছাড়াও আরো অনেক কিছু।

নামাজে তাশাহহুদের (আত্তাহিয়াতুর) পর শেষ নবী প্রিয় হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হয়। আর এটি পাঠ না করলে নামাজ হয়না, তাই শুদ্ধভাবে তেলাওাত এবং অর্থ বুঝে পড়া উচিত।

দূরূদ শরীফ আরবিতেঃ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ. وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ’ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ. اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ. وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ. اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

দুরুদ শরীফ বাংলায় উচ্চারণঃ

°আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।°

 °আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মদিউ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মদিম, কামা বারাকতা আলা ইবরাহীমা, ওয়া আলা আলি ইবরাহিমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ°

দুরুদ শরীফের অর্থ হলোঃ

°হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশধরের প্রতি রহমত নাযিল করো। যেমন, রহমত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর বংশধরের প্রতি।

 নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশধরের প্রতি বরকত নাযিল করো যেমন বরকত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান°। [সহীহ বুখারী, হাদীস:২৯৭০]

দুরূদ শরীফের ফজিলতঃ

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) নির্দিষ্ট কোন জাতির জন্য আমাদের মাঝে আসেনি তিনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত হয়ে এসেছেন/ আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন, একথা আমরা সকলেই জানি। এ সম্পর্কে সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ “আর আমি তো আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।”

বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গী হওয়ার সবচেয়ে অধিক উপযুক্ত সেই ব্যক্তি হবে, যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করে। (তিরমিজী শরিফ)

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর ১বার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, এবং ওই ব্যাক্তির ১০টি গুনাহ মাফ করবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-২০৫৬)

নবী (সাঃ)আরও ইরশাদ করেন —-“ঐ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে ব্যাক্তি দুনিয়াতে থাকতে আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পাঠ করতো।” (তিরমিজী শরিফ)

দরুদ শরীফ পড়ার নিয়মঃ

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি দরুদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে এসেছে “অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ দরুদ ও সালাম পেশ করো” (সূরা: আহজাব, আয়াত: ৫৬)

দুরুদ শরীফ মানে হলো আমার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর  উপর সালাম পেশ করা / রহমত, বরকত ও শান্তির জন্য দোয়া করা।

দরুদ শরীফ পড়ার নিয়ম

১। দরুদ শরীফ অত্যন্ত আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সঙ্গে খুব ধীরস্থিরভাবে পড়া উচিত।
২। জীবনে একবার দরুদ-সালাম পাঠ করা ফরজে আইন।
৩। নবীজি (সা.) এর নাম এক বৈঠকে বারবার লিখলে প্রথমবার দরুদ লিখা আবশ্যক (ওয়াজিব)
৪। দরুদ শরীফ পড়ার সময় অধিক নড়াচড়া, মাথা দুলানো, চিৎকার বা উঁচু আওয়াজ করা যাবে না।
৫। নবীজির রওজা শরিফ জিয়ারত ও তার নাম বলা বা শোনার সময়।
৬। দোয়া বা মোনাজাতের আগে ও পরে।
৭। একই বৈঠকে একাধিকবার নবী (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে প্রথমবার সবার জন্য দরুদ পাঠ করা আবশ্যক (ওয়াজিব)
৮। আজানের পর দোয়ার আগে।
৯। অজুর শেষে, চিঠিপত্র বা অন্য কিছু লিখার আগে।
১০। মসজিদে প্রবেশের সময় ও বের হওয়ার সময়।
১১। কোরআন তেলাওয়াত বা অন্য কোনো বইপুস্তক পাঠের আগে।
১২। অজু ছাড়া যে দুরূদ পড়া যাবে না এমন নয়। যে কোনো অবস্থায় দরুদ শরীফ পাঠ করা যাবে। বিশেষ করে অজু অবস্থায় এবং আদবের সঙ্গে দরুদ পড়া উত্তম।
১৩। কোনো বৈঠক থেকে ওঠার সময়।
১৪। দুনিয়া আখিরাতের কল্যাণ ও সব রকমের বিপদ আপদ, বালা মুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সব সময় বেশি করে দরুদ পড়ুন।
১৫। জুমা বা ঈদের খুতবায় নবী (সা.) এর নাম এলে মনে মনে দরুদ পড়বে, মুখে উচ্চারণ করবে না। এছাড়া নিম্নোক্ত অবস্থায় দরূদ পড়া যাবে।

মিথ্যা – বানোয়াট কিছু দুরুদ শরীফের নাম দেওয়া হলোঃ

  • ১। দুরুদে নারিয়া
  • ২। দুরুদে হাজারী
  • ৩। দুরুদে লাখী
  • ৪। দুরুদে মাহী
  • ৫। দুরুদে তুনাজ্জিনা
  • ৬। দুরুদ তাজ ইত্যাদি।


উপরোক্ত ৬টি  দরূদ শরীফ মানুষের বানানো এগুলো পড়লে কোন সওয়াব বা লাভ নেই বরং বেদআত, এতে গুনাহ হবে। দুরুদ শরীফের মাঝে সবচেয়ে উত্তম হলো দরুদে ইব্রাহীম। এটা আমরা নামাজে পড়ি। একবার এ দরুদ পড়ে আল্লাহ তা’আলা ১০ বার রহমত করেন।

মূলত আমাদের দেশের মা-বোনেরা ওযীফার বই থেকে বেদআতী দোয়াগুলো বেশি পড়ে থাকে। আপনারা এসব বই পড়বেন না। যেসব হাদিস সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত সেসব দোয়া পাঠ করুন।

(বিদ্রঃ এই ৬টি দুরুদের ব্যাপারে অভিঙ্গ আলেম ভাইদের কাছ থেকে জেনে নিবেন এগুলো কি পড়লে সওয়াব বা লাভ হবে কিনা, না গোনাহ হবে; সবকিছু জেনে নিবেন দয়াকরে। আপনরা অনলাইনে যা পড়েন বা শোনেন তা সত্যি না ও হতে পারে, আমরা যারা এ ধরনের পোস্ট লিখি তারা প্রত্যকে তো হুজুর বা আলেম নই। আমাদের পোস্ট লেখার জন্য অন্যান্য ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পোস্ট পড়ে জ্ঞান আহরন করে লিখতে হয়, আশাকরি বুঝেছেন প্রিয় ভাই / বোন।)

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *