Others PDF Books

নিজের কাউন্সেলিং নিজে করুন pdf (eBook)

  •  বইয়ের নাম: নিজের কাউন্সেলিং নিজে করুন
  • লেখক: ড. গার্গী দত্ত
  •  পাবলিকেশন্স: দীপ প্রকাশন (ভারত)
  • ধরণ: পশ্চিমবঙ্গের দর্শন সম্বন্ধীয় বই

bangla self help book pdf : মুল লিংক 

যত দিন যাচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সংকট তত বাড়ছে। এর একটা বড় উদাহরণ শিশুদের বা অপেক্ষাকৃত কমবয়েসীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। কী ভয়ানক সংকট। এ

কটি শিশু জীবনটাকে সম্পূর্ণ বোঝবার আগেই তার সমাপ্তির কথা ভাবছে! এর কারণ কিন্তু অনেকাংশেই আমরা নিজেরা। শরীরটাকে ভালো রাখবার জন্য যে সময় বা চিন্তী আমরা ব্যয় করি মনটার জন্য তা করি কি? একটা ফল যেমন, তাকে পেকে উঠবার জন্য একটা স্বাভাবিক সময় দিতে হয় মনটাকে তার মতো করে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আমরা তা দিই না, দিচ্ছি না।

সবটাই কেমন যেন একটা তড়িঘড়ির মধ্যে চাইছি।আনেকটা ‘হাই-ব্িড-এর মতো। ফলটা দীড়াচ্ছে, প্রাকৃতিকভাবেই একটা শিশুমনের যে ইচ্ছেঅনিচ্ছে সেগুলোকে বিন্দুমাত্র আমল না দিয়ে, আমাদের চাওয়া-পাওয়াগুলোকে জোর করে চাপিয়ে চলেছি। হাই-বিড ফসল যেমন গুণগত মানে ভালো হয় না এক্ষেত্রেও ফলটা দাঁড়াচ্ছে একইরকম। মনে, বিশেষ করে শিশুমনে, কিশোর মনে, নানান বৈকল্য দেখা দিচ্ছে। বাবামা-দের ছুটতে হচ্ছে ডাক্তারের কাছে সেজন্যই আমার মনে হয়, সন্তানের চেয়েও, এখন বাবা-মা বা অভিভাবকদের জন্য কাউন্সেলিং বেশি জরুরি।

একটি পাচ বছরের শিশুকে কিন্তু কখনোই আমি “শিশু” ভাবি না। ভাবি পাঁচ বছরের একজন পূর্ণ মানুষ । এখনকার মতো, এ পাঁচবছরেই তার যাবতীয় পূর্ণতা। দশ বছর হলে, দশ বছরের। যেমন একটি ছইঞ্চি স্কেল এবং একটি একফুট স্কেল- দুটোর মধ্যে কোন্টি বড়? সাধারণভাবে আমরা একফুট স্কেলটিকেই বড় বলব।

কিন্তু আমাদের এইভাবে ভাবা উচিত যে, ছইঞ্চির স্কেলটি ছইঞ্চিতে সম্পূর্ণ এবং একক। এক ফুটেরটি এক ফুটে সম্পূর্ণ। কেউ কারও চেয়ে ছোট বা বড় নয়। আমার কাছে যেসব ছোট ছোট ছেলেমেয়ে
শিখতে আসে- তাদের কখনো আমি শিশু-চিত্রশিল্পী ভাবি না। ভাবি তাদের মতো করে এক-একজন সম্পূর্ণ শিল্পী। ওদের ভাবনার স্বাধীনতাকে আমি ওদের ইচ্ছেমতো ওড়াতে সাহায্য করে যাই।

একবার একটি ছেঁট ছেলেকে আমি তার ইচ্ছেমতো ছবি আঁকতে বলায় সে কয়েকটি ড্রাম এঁকেছিলো এবং এমনভাবে এঁকেছে যেন মনে হবে ড্রামগুলি রাস্তায় দীড়িয়ে নাচছে। আমি প্রশ্ন করেছিলাম__দ্রামগুলি নাচছে কেন? সে উত্তর দিয়েছিলো, আসলে এখন ট্রাফিক পুলিশগুলোর ডিউটি নেই তো- সেজন্য ড্রামগুলো আনন্দে নাচছে। এই যে ছোট ছেলেটি, তার নিজস্ব ভাবনায় সম্পূর্ণ নয় কি?

আর একটা জিনিস আমরা খেয়াল করি না যে, সন্তান কোনো সম্পত্তি নয়। সন্তান হচ্ছে একটা স্পন্দন। জীবনের চলার একটা ছন্দ। তাকে আপন খুশিতেই, আপন নিয়মেই চলতে দিতে হয়। তার চলায় তাকে ঠিক ঠিক সাহায্য করাটাই আমার কাজ। কোনো শিশুকেই বলতে নেই, ও জানে না। আমি বলি ও ওর মতো জানে। ওদের কখনো তুল্যমূল্য বিচারে যেতে নেই।

কারণ প্রতিযোগিতার এই খেলায় ওদেরকে সামিল করতে গেলে বিপত্তি ঘটে। আমার আর একটি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এ প্রসঙ্গে বলি। একবার এক বাড়িতে গিয়ে দেখি, মা ছেলেকে খুব বকছে। কারণ, সে পাশের বাড়ির বাবুয়ার মতো বেশি নম্বর পায়নি। বকছে তো বকছেই। হঠাৎ ছেলেটি জবাব দিল- বাবুয়া যদি চুরি করে? মা-এর জবাব আরও সুন্দর-_করে তো করে। কিন্তু ফার্্ট তো হচ্ছে! এই হল সমস্যা, সংকটটা আজ এইখানে এসে দীড়িয়েছে। ভাবতে হচ্ছে যে, একটি ছেলে বা মেয়ের মানসিক বৈকল্যের কারণ সে নিজে নাকি অন্য কোনো চাপ? সে বিপথগামী হচ্ছে, কী অপরাধপ্রবণ হচ্ছে, কী আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে_এর আসল কারণটি কোথায়? কাউন্সেলিংটা আগে সেইখানে করা দরকার বলে আমি মনে করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!