পেতবত্থু by অভীক সরকার Pdf Download
বইয়ের নাম: Petbutthu ( পেতবত্থু ) pdf
লেখকের নাম: অভীক সরকার (Avik-Sarkar)
ধরণ/ক্যাটাগরি: ভুতের গল্প
ফাইল ফরম্যাট: Bangla Anubad Pdf free Download(পিডিএফ)
ফাইল সাইজ: 503 KB
১ম প্রকাশঃ সাল
মোট পেজ সংখ্যাঃ 94 পৃষ্ঠা
ভাষাঃ বাংলা (Bangla/Bengali)
লেখক বলেন- আজ থেকে বছর দুয়েক আগেকার কথা। জনৈক বাংলা টিভি চ্যানেলের কর্তাব্যক্তিরা আমার কাছে আসেন টাইম ট্রাভেল বা প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে ওয়েব সিরিজের উপযুক্ত একটি গল্প লিখে দেওয়ার অনুরােধ নিয়ে। প্রস্তাবটি শুনে ভারী উৎসাহিত বােধ করি। তার কারণ, যৌবনের প্রারম্ভে পপুলার সায়েন্স নিয়ে সবিশেষ আগ্রহী ছিলাম।
স্টিফেন হকিং বা কার্ল সাগানকে মনে হতাে ঈশ্বরের সাক্ষাৎ বরপুত্র। পথিক গুহ’র প্রায় কোনও লেখাই ছাড়তাম না। ফলে সেই বিষয় নিয়ে লেখার প্রস্তাব এলে পুলকিত হওয়ার কারণ থাকে বইকি!
কিন্তু সে তাে আগেকার কথা। এরমধ্যেই বিজ্ঞান এগিয়ে গেছে অনেকখানি। তাই পুরােনাে বইপত্র ঝেড়েঝুড়ে নামাতে হল। স্কুল কলেজের ভুলে যাওয়া বন্ধুবান্ধবদের সাহায্যও নিতে হল অনেক। ফেসবুক সূত্রে আলাপ হয়েছিল বঙ্গবাসী কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পার্থ ঘােষের সঙ্গে। পার্থদা প্রচুর তথ্য দিয়ে অনেক সাহায্য করলেন, এমনকী লেখার খানিকটা পড়ে কিছু পরামর্শও দিলেন।
কিন্তু এতসবের পরে যখন লেখা তৈরি, তখন জানা গেল সেই কর্তাব্যক্তিরা চাকরি ছেড়ে অন্যত্র বাসা বেঁধেছেন। অতঃকিম? লেখাটা তখনকার মতাে ধামাচাপা রইল।
এর বছরখানেক পরে আমি এবং আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু পাবলিকেশন শুরু করি।
প্রথমেই ঠিক হয় যে দু’হাজার উনিশ সালের দুর্গাপূজার সময়ে আমাদের প্রকাশনা থেকে একটি পূজাবার্ষিকী সংখ্যা বেরােবে। আমার ওপর দায়িত্ব পড়ে তার জন্য একটি উপন্যাস
লিখে দেওয়ার। সেই সঙ্গে সম্পাদকদের কড়া আদেশ ছিল উপন্যাসটি আগমবাগীশ সিরিজের হতেই হবে।
সেই দিনই আমি পেতবখুর সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ছকে ফেলি। ইতিমধ্যেই আমি দেবী ছিন্নমস্তা এবং দেবী মাতঙ্গীকে নিয়ে দুটি কাহিনি লিখে ফেলেছি। কাহিনিদুটি পাঠকমহলে সমাদৃতও হয়েছে। সেই সূত্রেই মাথায় এল দশমহাবিদ্যা’র সবচেয়ে বিখ্যাততম দেবী কালী’র কথা। দেবী কালী শুধু যে কৈবল্যদায়িনী তাই নন, তিনি সময় তথা কালের
অধিষ্ঠাত্রী দেবীও বটে। মহানির্বাণতন্ত্রমতে শিব জগতের সকল প্রাণীকে কলন বা গ্রাস করেন বলেই তিনি মহাকাল। আর এই মহাকালকেও যিনি গ্রাস করেন, তিনিই মহাকালী।
কাল সংগ্ৰহণাকালী সর্বের্ষমােদিরূপিনী। কালত্বাদাদি ভূতত্বাদাদ্যাকালীতি গীয়সে।
ভয়ের আড়ালে তিনিই অভয়া, কালগ্রাসের মধ্যে তিনিই অনন্তজীবন, মৃত্যুর মধ্যে তিনিই অমৃতস্বরূপিনী।
ঠিক করলাম দেবী মহাকালীকে নিয়েই বাঁধব আমার পরের গল্প। প্রেক্ষাপটে থাকুক অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সময়বিকলন। সঙ্গে জুড়ে দিই আমার সেই পূর্বলিখিত টাইম ট্রাভেলের গল্পটি। সময়ের ঘেরাটোপ ছিড়ে বেঁচে উঠুক এক বন্ধুর প্রতি আরেক বন্ধুর ভালােবাসার গল্প, পােষ্য প্রাণীটির প্রতি এক সর্বহারা যুবকের অনিঃশেষ ভালােবাসার কাহিনি, পিতৃস্নেহবঞ্চিত এক যুবকের বাবাকে ফিরে পাওয়ার মায়াময় আখ্যান।
উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পরে তার কপালে বেশ কিছু প্রশংসাবাক্য জোটে।
বলাবাহুল্য, এর পেছনে সম্পাদক ঋজু গাঙ্গুলীর কৃতিত্ব ছিল অনেকখানি। অপ্রয়ােজনীয় অংশ বাদ দিয়ে, এবং প্রচুর মাজাঘষা করে উপন্যাসটিকে তিনি যথেষ্ট গতিশীল করে তােলেন। ইত্যবসরে পত্ৰভারতীর কর্ণধার ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় আমাকে ফোন করে বলেন যে উপন্যাসটি তিনি বই হিসেবে প্রকাশ করতে চান, কিন্তু বর্ধিত আকারে।
একদিন পত্ৰভারতীর অফিসে সেই নিয়ে একটি ছােটখাটো মিটিংও হয়ে যায়, গল্পের খামতিগুলাে উনি মার্ক করে দেন। তাঁর আদেশ মেনেই গল্পের প্রয়ােজনে আবির্ভাব ঘটে দুটি নতুন চরিত্রের। লােবসাং গিয়াৎসাে এবং মেজর রাহুল মাত্রে! উনিশ হাজারি উপন্যাসটি আড়ে বহরে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ত্রিশ হাজারে।
আপাতত সেই পরিবর্ধিত এবং পরিমার্জিত ‘পেতবথু’ আপনাদের সামনে। উপন্যাসটির পাণ্ডুলিপি পড়ে এবং মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাকে ধন্য করেছেন শ্রীমতী অনুষ্টুপ শেঠ, শ্রীময়ী মৌপিয়ালি দে সরকার এবং শ্রীময়ী তমশ্রী মণ্ডল। উপন্যাসটির ভালােমন্দের সমস্ত দায় এই মহিয়সীত্রয়ীর। আমি আপাতত কালীনামহ্রদে জীবন ভাসিয়েছি। নাম অনামের দায় তাঁর, আমি কেবলমাত্র লিখেই খালাস।