অবিশ্বাসীদের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে কোরআন, হাদিসের আলোকে অনেক অজানা বিষয় খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন আরিফ আজাদের এ প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইতে। ব্যক্তিগতভাবে বইটি আমার খুব ভাল লেগেছে। ২০১৭ সালের আরিফ আজাদের প্যারডক্সিক্যাল সাজিদ ১ বের হবার পর তা প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তিতে ২০১৯ সালে তার ২য় বই বের হয় যা লেখকেরর ৩য় মৌলিক গ্রন্থ.
paradoxical sajid 1,2 pdf free Google Drive links
বই: প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ (Part 1) লেখক: আরিফ আজাদ প্রকাশ: ২০১৭ সাল প্রকাশনা:গার্ডিয়ান পাবলিকেশন
(১ম পর্ব pdf) paradoxical sajid 1 pdf link:click here
বই: প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ লেখক: আরিফ আজাদ প্রকাশ: ২০১৯ সাল প্রকাশনা: গার্ডিয়ান পাবলিকেশন
(২য় পর্ব pdf) paradoxical sajid 2 pdf link:click here
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বই ১ রিভিউ:
আমি যখন ক্লাস টেনে প্রথম দিকে পড়ি তখন আমাদের বায়োলজির নতুন এক টিচার আসেন। তিনি একদিন প্রশ্ন করলেন যে আমরা কেন স্রষ্টাকে বিশ্বাস করব, কোন প্রমানের ভিত্তিতে। তিনি আরো বললেন যে আমাদের খারাপ কাজের দায় কেন স্রষ্টা নেন না যেহেতু তিনি আমাদের ভাগ্য লিখে রাখেন। তার শেষ প্রশ্ন ছিল স্রষ্টা তো দয়ালু, তাহলে তিনি কেন আমাদেরকে জাহান্নামে পাঠাবেন? এ প্রশ্নের উত্তর সেদিন আমার কাছে ছিল না তবে এই বইটা পড়ার পর আমি প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি।
বইটির মূল চরিত্র সাজিদ নামের এক তরুণ যে অত্তন্ত যুক্তিবাদী। সে এক সময় নাস্তিক হয়ে পড়লেও যুক্তির কাছে হার মেনেই আবার স্রষ্টাতে বিশ্বাস করে। অন্যদের ধর্মের প্রতি তার যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। বিজ্ঞানের গভীর জ্ঞান, প্রখর বুদ্ধিমত্তা আর যথাযথ ধর্মীয় জ্ঞান- সব মিলে এই চরিত্রটিকে অসাধারণ করে তুলেছে।
Paradoxical Sajid এই বইয়ের কিছু প্রশ্ন তুলে ধরছি যেগুলো আমরা প্রায় ই শুনে থাকি:
তাকদির বনাম স্বাধীন ইচ্ছা:স্রষ্টা কি এখানে বিতর্কিত – স্রষ্টা যদি আমাদের ভাগ্য লিখে রাখেন তাহলে আমাদের করা সব কাজ তার নির্দেশে চলে। অর্থাৎ আমরা মন্দ কাজ করলেও সেটা স্রষ্টার নির্দেশেই করি, তাই না? আসলে এ ধারণা যে ঠিক না তা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে এখানে।
স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছেন – এটা অনেকের মনে আসা সাধারণ প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে পদার্থবিজ্ঞান আর যুক্তির সমন্বয়ে।
কুরআন কি মহানবি(সা.) এর নিজের কথা – মহানবি(সা.) এর উপর কুরআন নাজিল হওয়া কেউ নিজের চোখে সরাসরি দেখেননি। তাই দাবি উঠতেই পারে যে এ কিতাবের কথা তার নিজের। এই প্রশ্নের উত্তরে ফুটে উঠেছে সাজিদ চরিত্রের অসাধারণ মেধা।
স্রষ্টা যদি দয়ালু হন তবে জাহান্নাম কেন? – এটাও একটা সাধারণ প্রশ্ন। স্রষ্টা অবশ্যই দয়ালু তবে তিনি যে ন্যায়বিচারক তা তুলে ধরা হয়েছে এ প্রশ্নের উত্তরে।
স্রষ্টা কেন মন্দ কাজের দায় নেন না – আমরা যদি কোনো কিছু সৃষ্টি করি এবং তা ব্যবহার করে যদি কেউ কোনো খারাপ কাজ করে তবে তার দায় নিশ্চয়ই আমরা নেব না। এই ব্যাপারটিই তুলে ধরা হয়েছে এ প্রশ্নের উত্তরে।
এই পুরো লেখাতে যদি কোনো ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই জানাবেন আর বইটা পরে দেখতে পারেন নিজের ভেতরে জমে থাকা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে।
‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-২’ রিভিউ
বই পড়া হোক বা না হোক, নতুন বইয়ের প্রতি ছোটবেলা থেকেই সবারই এক ধরনের আকর্ষণ কাজ করে। নতুন বইয়ে ভিন্ন রকম একটা ঘ্রাণ থাকে ; তবে সাজিদের ঘ্রাণ ভিন্ন ধাচের। আপনি মৌমাছির ভূমিকায় চলে যেতে পারলে সাজিদের কাছ থেকে আহরণ করে নিতে পারবেন ভিন্ন স্বাদের দুষ্প্রাপ্য কিছু মধু।
সাজিদকে শুধুমাত্র একটা “চরিত্র” হিসেবে ব্যাখ্যা করলে মোটাদাগে ভুল করা হবে। সাজিদ শুধু একটা “চরিত্র” না, সাজিদ একটা “প্লাটফর্ম”।
সংশয়ের চোরাবালিতে পড়ে আপনি দিশেহারা হয়ে গেলে সাজিদ আপনার জন্যই হাত বাড়িয়ে আছে। অন্ধকারের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবার আগে আপনিও একবার হাত বাড়িয়ে দেখুন, সাজিদ আপনাকে টেনে তুলে আলোকিত জীবনের সন্ধান দিয়ে দিবে।
আর পথভ্রষ্টদের ফিরিয়ে আনার ব্রত আপনি গ্রহণ করলে সাজিদ আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে। ঘুরে আসুন পাহাড়সম এই জ্ঞানের অধিকারীর সাথে। আর হ্যা গতবারের ধারায় এবারও সাজিদের সাথে বোনাস হিসেবে পাবেন সাজিদের বন্ধু আরিফ ভাইকে।
সাজিদের সাথে ভ্রমণের শুরুতেই আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে শস্যক্ষেত্রে (রুপক অর্থে)। যেখানে কৃষকের ভূমিকায় যেতে না পারলে আপনার পক্ষে উপমা হিসেবে শস্যক্ষেত্রের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য বুঝে এর মূল থিম ধরতে পারার সৌভাগ্য হবে না। আপনি থেকে যাবেন সেই গো-ভাগাড়েই।
এবার আপনাদের সামনে ছুড়ে দেওয়া হবে খ্রিষ্টান মিশনারীদের হিপোক্রেসিমার্কা কিছু প্রশ্ন। তবে সাজিদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনার সামনে সেগুলি খুব বেশী একটা সুবিধা করে উঠতে পারবে না। নিমিষেই চুপসে যেতে বাধ্য হবে অবান্তর প্রশ্নগুলি।
এবারে সেই পুরাতন প্রশ্ন – ইসলাম কি অমুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করে? উত্তর কি আপনার জানা? জানা থাকলেও কিছু করার নেই। আপনি সাজিদের মতো গুছিয়ে বলতে পারবেন না। আপনি এবং আরিফ ভাই শুধু শুনে যান।
চলুন ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে ঘুরে আসা যাক। সেখানে দেখা হয়ে যাবে আরিফ ভাইয়ের এক মেধাবী বন্ধুর সাথে ; যে খুব সূক্ষ্মভাবে বিভ্রান্ত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। তার এই ভ্রান্ত জ্ঞান দিয়েই সে এই সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে কুরঅানে নাকি পরস্পর বিরোধী তথ্য আছে। কিন্তু আফসোস সেখানে সাজিদ ছিলো! মাত্র কয়েক মিনিটেই সে ওই জ্ঞানী বেচারার মুখ চুপসানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এবারের প্রেক্ষাপট আলম ভাইয়ের টং। সেখানে বসা কিছু মাথামোটা, যাদের রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের করণীয় সম্পর্কে কোনো জ্ঞান ই নেই, তারা দাবি করে বসে যে (রাষ্ট্রপ্রধানের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে) মুহাম্মদ (স) ছিলেন অমানবিক (!) হাস্যকর না বিষয় টা! তবে হাস্যকর হলেও তাদের প্রশ্নের উত্তর টা হয়তো আপনার কাছে নেই। ভয় নেই, সাজিদ আছে।
এবারে বইপড়ুয়া পিকলু দা’র অবাক করা তথ্য। কুরঅানের দুটি আয়াত নাকি শয়তানের পক্ষ থেকে এসেছিলো এবং পরবর্তীতে নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে তা সংশোধন করা হয়!! এই তথ্য দ্বারা সে ইসলামকে একহাত নেয়ার নিদারুণ চেষ্টার পরেও সাজিদের উপস্থিতির কারণে নিজ দায়িত্বে মুখে অমাবস্যার চাঁদ নামিয়ে নিয়ে আসতে বাধ্য হয়। By the way, এই নাস্তিক বেচারা কিন্তু শয়তানের অস্তিত্বেও বিশ্বাস করে না, অথচ শয়তানের পাঠানো আয়াতে নাকি তার অগাধ বিশ্বাস!!!
ড্যানিয়েলের কথা মনে আছে? যার সাথে দেখা হয়েছিলো বার্সেলোনায়। এবারের গন্তব্য তার বাড়িতেই। ও হ্যা সে কিন্তু বাংলাদেশী! সেখানে যেয়ে এক বিব্রতকর প্রশ্নের সম্মুখে পড়তে হবে। প্রসঙ্গ – মহানবী (স) এর ১১টি বিবাহ। আপনার মাথা গরম হলেও আপনাকে এখানে শান্তই থাকতে হবে। সাজিদের যৌক্তিক আলোচনার সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যাবে নিন্দুকদের হিংস্র দাত।
সকাল সকাল আবারো এক সস্তা নাস্তিকের মোকাবিলা করতে হবে। তার আপত্তি জান্নাতের মদ নিয়ে ; অথচ সে কিন্ত জান্নাতে বিশ্বাস ই করে না! তবে আপনার ভূমিকা এখানে কেবলই “দর্শক আয়ন” এর মতো। যাই হোক সাজিদ এই বেচারাকে বুঝিয়ে ছাড়বে যে দুনিয়ার মদের সাথে জান্নাতের মদ গুলিয়ে ফেললে মাথাও মাতালদের মতোই গুলিয়ে যাবে। জান্নাতের মদ পবিত্র, নির্মল, সুপেয় এবং সুস্বাদু।
বিশ্ব রাজনীতির কলুষিত কিছু অধ্যায়ের পেছনের কাহিনী অপেক্ষা করবে আপনার জন্য। হিটলার, কার্ল মার্ক্স, লেলিন এবং স্টেলিন এর কর্মকান্ডের ভয়াবহতা হয়তো কমবেশি সবারই জানা। তবে এদের পেছনের নাটের গুরু কিন্ত ছিলো একজনই – মি. ডারউইন। বিষয়টা খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা আছে সাজিদের ডায়েরিতে।
এ পর্যায়ে সাজিদের গ্রাম থেকে ঘুরে আসা যাক। পরিচিত হওয়া যাবে তার কিছু বন্ধুদের সাথেও। হাসি ঠাড্ডার আড্ডার মধ্য দিয়েই শিখে নেয়া যাবে আরবী ভাষার এবং সূরা ফাতিহার সূক্ষ্মতা, সৌন্দর্য এবং প্রয়োজনীয়তার পাঠ। আলোচনা শেষে আপনি সুস্থ মস্তিষ্কে চিন্তা করলে কুরঅান নাজিলের জন্য আরবীর Alternative কোনো ভাষাই খুজে পাবেন না।
এবারে সাজিদের থেকে কিছুটা বিজ্ঞান শেখার পালা। সাজিদের আলোচনায় উঠে আসবে বিজ্ঞানীদের নব্য আবিষ্কৃত – সূর্যের বিলীন হয়ে যাওয়ার ভবিষ্যৎবাণী। অথচ আপনি অবাক হবেন তখন যখন জানবেন, তথ্যগুলো নিরক্ষর এক রাখাল বালকের (মহানবী স.) উপর সেই চৌদ্দশ বছর আগেই নাযিল হয়েছিলো। কিন্তু সেই কিতাব নিয়ে গবেষণার সময় কই আমাদের!?
সাবধান! সাজিদের এই আলোচনায় তার শিক্ষক মফিজুর রহমান স্যারের প্রত্যাবর্তনের চিঠি কিন্তু আপনার চোখে প্লাবনের ডাকও দিতে পারে।
সমুদ্রভ্রমণের সময় এসে গেছে। গন্তব্য সেন্ট মার্টিন। বঙ্গোপসাগরের নোনতা জলে ভাসতে ভাসতে সাজিদের কাছ থেকে শেখা যাবে সমুদ্রবিজ্ঞান। এখানেও উঠে আসবে কুরঅানের বিস্ময়কর তথ্য।
ডেভিডের কথা মনে আছে? সে কিন্তু বাংলাদেশে আসছে। উদ্দেশ্য – খ্রিষ্টান বন্ধু এলেন এর সাথে ক্রিসমাস ডে পালন করা। কিন্তু এই অকেশনের পেছনের পুরো ইতিহাসই যে ধাপ্পাবাজিতে জর্জরিত, তা সেই বেচারার জানা ছিলো না। কি আর করার ; সত্যটা জানানোর দায়িত্ব সাজিদ ই নিজের কাধে নিয়ে নিবে।
এবারে বিপত্তি হবে ডেভিডের বন্ধু এলেন কে নিয়ে। সে প্রশ্ন করে বসবে মহানবী (স) এর পূর্বে পবিত্র কাবার অস্তিত্ব সম্পর্কে। কিন্তু তার প্রশ্নের উত্তর যে তার বাইবেলেই ছিলো, সেটা বেচারার জানা ছিলো না। সাজিদের সামনে তো তাহলে এই বেচারাকে নাকানি চুবানি খেয়ে পালাতেই হবে!
বিজ্ঞানী নিউটন কে চিনেন? আচ্ছা। ধর্মীয় স্কলার নিউটন কে চিনেন? জানতাম। চেনার কথাও না। কারণ এসব তথ্য চক্রান্তের মাধ্যমেই গোপণ রাখা হয়। সাজিদের থেকে জেনে নিন তবে ধর্মীয় স্কলার নিউটন সম্পর্কে।
বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে পরমাণুর চাইতে ক্ষুদ্র কিছুর অস্তিত্ব সম্পর্কে হয়তো জানাই ছিলো। কিন্তু কুরঅানের ছাত্র হিসেবে কি সে তথ্য আমাদের জানা ছিলো?
সাজিদ কাউকে জ্ঞানী করে কি না জানি না, তবে সাজিদ সাজিদ তৈরী করে।
ভালোবাসা রইল আরিফ আজাদ ভাইয়ের প্রতি।
লিখেছেন Ehsan Sakin ভাই।
Pdf link + লেখক আরিফ আজাদ সম্পর্কে:
তিনি চট্রগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ভার্সিটি লাইফ থেকেই তিনি লেখালেখি করা শুরু করেন ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এ দুইটি ববই ছাড়াও তার আরও অনেক বই আছে।
বইটি ভাল লাগলে জানাবেন। ডাউনলোড করতে সমস্যা হলে কিংবা আর কোনো বই এর pdf যদি দরকার পড়ে তাও জানাতে পারেন। ধন্যবাদ ।
নিচে ক্লিক করলে আরিফ আজাদের বই ডাউনলোড স্টার্ট হবে:-
ভাল লাগছে
ভালো লেগেছে
বেলা ফুরাবার আগে ,,বইটার pdf হবে কারো কছে
অসাধারণ লিখনি
খুব ভালো
ভাল লিখেছো…
অসাধারণ
মাশআল্লাহ আল্লাহ পাক আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক। আমিন