হুমায়ূন আহমেরের বৃষ্টি বিলাস উপন্যাস pdf free (eBook)
- বইয়ের নাম: “বৃষ্টি বিলাস”
লেখকের নাম: হুমায়ুন আহমেদ
ক্যাটাগরি: সমকালীন উপন্যাস
ফাইল ফরম্যাট: Pdf
file size: ২০ mb
বৃষ্টি বিলাস রিভিউ
প্রথমবারের মতো বইটির মলাটের দুটো শব্দ দেখলে পাঠকের মনে হতে পারে এই বৃষ্টি বিলাস নিঃসন্দেহে আনন্দের😊 । উপন্যাসে বৃষ্টি কী সত্যি আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছিলো 🤔? উত্তরটা রিভিউর শেষে জানতে পারবেন 🙂।
লেখক হুমায়ুন আহমেদ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের খুব সাধারণ একটি গল্পকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কলেজ পড়ুয়া রুপবতী মেয়ে শামা। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার বাবা, গৃহিনী মা, বোন এশা ও ছোট ভাই মন্টুকে নিয়েই তার ছোট্ট পৃথিবী।উপন্যাসের শুরুতে শামা কলেজ থেকে বাসায় ফিরে জানতে পারলো বিকেলে তার বিয়ের কথাবার্তা হবে এবং পাত্রপক্ষের লোকজন তাকে দেখতে আসবে।পাত্রপক্ষীয় লোকজন বিকেল শামাদের বাড়িতে আসে। তারা শামাকে পছন্দ করে। পুরো সময়টা জুড়ে পাত্র আতাউর মাথা নিচু করে ছিলো। মুটামুটিভাবে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। পাত্রপক্ষ শামাকে আংটি ও একহাজার এক টাকা দিয়ে যায়।
ইতমধ্যে শামার বাবা আবদুর রহমান সাহেব পাত্র আতাউরের বাড়ির টেলিফোন নাম্বার সংগ্রহ করে নেয়। রাতে টেলিফোন নাম্বারটি মেয়েকে দেন তিনি। শামার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে যায়, সে বাড়িওয়ালা চাচার টেলিফোন থেকে আতাউরের কাছে টেলিফোন করে। কিন্তু নিজ পরিচয় দিয়ে কথা বলেনি ছোটবোন এশার পরিচয়ে কথা বলেছে। পরদিন দুপুরে কলেজ শেষে শামা আতাউরের সাথে দেখা করবে সেটা জানায়। প্রথম দেখাতেই আতাউর শামাকে পছন্দ করে ফেলেছিলো সেদিন। আতাউর প্রথমে রাজি না হলেও পরে সে দেখা করে। তারা একসাথে কিছু সময় কাটায়।
বিকেলে আতাউরের সাথে শামা তার বান্ধুবী মীরার বাড়িতে যায়। মীরার বিয়ে উপলক্ষে তার বাড়িতে যাওয়া। বাড়ির গেটে আতাউর ও শামা যে যার মতো আলাদা হয়। মীরার বাড়িতে শামার বান্ধুবীরা তার সাথে মজা করে। এক পর্যায়ে শামাদের বাড়িওয়ালা চাচার টেলিফোনে জানান শামার বাবা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন 🤒 । শামা বাড়ি ফিরে আসে। মায়ের সাথে বিয়ে বাড়ির গল্প করে। ইদানীং শামার ছোটবোন এশা খুব যৌক্তিকভাবে যেকোনো কথা বলছিলো। মা-বাবা, বড় বোনকে তার যুক্তিতে ভরপুর কথাগুলো বুঝাতে চেষ্টা করছিলো। এশা কিন্তু রান্নায় পারদর্শী । কেন সে রান্না শিখছে সেটার প্রেক্ষাপট ও শামাকে বললো।
শামা, আতাউরের প্রতি একধরনের টান অনুভব করে 💕 । কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে আবদুর রহমান সাহেব তার বিয়ে ভেঙে দেন 💔 । সেই রাতে শামার ঘুম হয়নি। শামা কল্পনায় তার ভবিষ্যৎ সাজাতে চেষ্টা করলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও সেখানে বারবার আতাউর চলে আসছিলো। পরে আবদুর রহমান সাহেব বিয়ে ভাঙার কারণ জানালেন। পাত্র আতাউর ছিলেন মানুষিকভাবে অসুস্থ। অসুখের মাত্রা এতোটাই তীব্র তাকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখতে হয়। স্বাভাবিকভাবে কোনো বাবা এমন ছেলের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দিবেন না।ইতোমধ্যে শামার বান্ধুবী তৃণা অপর বান্ধুবী মীরার আত্নীয় আশফাকুর রহমানের সাথে শামার বিয়ে ঠিক করতে আগ্রহী হয়। শামা তবুও এশা সেজে আতাউরের সাথে টেলিফোনে কথা বলে। শামাদের বাড়িওয়ালা চাচা শামাকে খুব স্নেহ করতেন। এমনকি তিনি তার সব সম্পত্তি শামার নামে উইল করে দেন। উইলের বিষয়টি তিনি গোপন রাখেন। পাত্র আশফাক যেদিন শামাকে দেখতে আসছেন সেই দিনটা বৃষ্টিভেজা 🌧 ছিলো । এতে শামার মা খুশি হয়েছিলেন 😊। সেদিন সকালে শামা হঠাৎ করে আতাউরের বাড়ি যেতে চায় আংটি ও টাকা ফেরত দিতে । শামার মা এতে বাধা দিলেন।
তারপর শামা বইয়ের ভেতর থেকে আতাউরের দেয়া একটা চিঠি 📨 তার মাকে পড়তে দেয়। চিঠিতে আতাউর তার মানুষিক রোগের কারণ জানায়। আতাউর জানায় ২/৩ বছর পর পর বর্ষার সময় তার এই মানুষিক সমস্যাটি সক্রিয় হয়। সে এটাও জানায় বৃষ্টির সময় কেউ যদি আতাউরের হাত ধরে বলে ভয় নেই, সে আতাউরের সাথেই আছে তাহলে হয়তো তার এই অসুখটি আর হবেনা। শামার মা চিঠি 📨 পড়ে কিছুই বললেন না।
শামা বাড়িওয়ালা চাচার গাড়িতে 🚘 করে আতাউরের বাড়ি যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। শামা তার জীবনের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলো না, সে কি আশফাককে বিয়ে করবে? না কি আতাউরের হাত ধরবে। গাড়ি চলতে শুরু করলো। শামা গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে এবং কাঁদছে 😢 । শামা শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে। বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সে৷ কি সিদ্ধান্ত নিলো শামা সেটা জানতে হলে পড়তে হবে পুরো “বৃষ্টি বিলাস” উপন্যাসটি। 😊
আশাকরছি চমৎকার কাহিনীচিত্র সম্বলিত এই উপন্যাসটি আপনার ভালো লাগবে।
বৃষ্টি বিলাস হুমায়ুন আহমেদ উক্তি
মেয়েদের সবচেয়ে মানায় ধবধবে শাদা সাড়িতে। আমাদের দেশের মেয়েরা শাদা শাড়ি পড়ে না– কারণ সাদা বিধবাদের রঙ।
(৯১ পৃষ্ঠা)
যার সাথে বিয়ে হবে তাকে একটু বাজিয়ে নিবি না? সামান্য লাউ কেনার সময়ও তো মানুষ লাউ-এ চিমটি দিয়ে দেখে, টোকা দিয়ে দেখে। তুই টোকা দিবি না?
ধাধা: মাকড়শা জাল বুনে অন্য পোকা শিকার করে।
কথা হচ্ছে, মাকড়সা নিজেও তো একটা পোকা। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, সে নিজের জালে আটকে পড়ে না কেন?
মাকড়শার ধাধার উত্তরটা হল-
মাকড়শা দু রকমের সুতা দিয়ে জাল বানায়। এক রকমের সুতা থাকে আঠা লাগানো। আরেক রকমটায় আঠা থাকে না। যে সুতায় আঠা লাগানো থাকে না মাকড়শা তার উপর দিয়ে হাটে বলে সে জালে আটকে যায় না।
বৃষ্টি বিলাস উপন্যাসে আমার পঠিত যে লাইনগুলো মজা লেগেছে-
হুট করে বিয়ে ঠিক, আবার হুট করে বাতিল। বিয়ে তো আর play and dust না।
প্লে এন্ড ডাস্ট কি?
play মানে খেলা, আর dust মানে ধুলা। অর্থাৎ, প্লে এন্ড ডাস্ট হলো— খেলাধুলা।
হাটি হাটি, পা পা
R.k — রাগ কুমারী
সাদা শাড়ির সাথে নীল চুড়ি
সবুজ শাড়ির সাথে লাল চুড়ি
(৯৮ পৃষ্ঠা)
আতাউর! শামাকে লিখা শেষ চিঠি। যার সারমর্ম নিয়ে লিখা আমার এই কবিতা। একটু চেষ্টা করে দেখলাম আর কি! পড়ে দেখুন-
“নামি নামি করা বৃষ্টি
মন খারাফের ঝড় বৃষ্টি
পোক্ত শরির ঠান্ডা বাতাসের সাথে সন্ধি
বৃষ্টি হলে, ভিজতে যাব তুমুল বর্ষণ সৃষ্টি
অদ্ভুদতার ফোটা, টকটকে লাল
এক কান্নাসুরের সৃষ্টি।
আকাশে মেঘ, বদ্ধ জানালা
আমার গল্প ভয়নংকরতার এক করুণ সুরে(র সৃষ্টি) ভরা
গভীর মমতার মুহুর্ত তুমি
পাশে থাকা তুমি
গোপন বৃষ্টি বিলাস, এক অনন্যতার সৃষ্টি!
আমি খড়কুটো চেপে ধরা ডুবন্ত মানুষ
আমি টকটকে লাল স্মৃতির ভেজা অসুখ।
আমি মনে প্রাণে তোমার মত সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ।
ঝুম বৃষ্টি, তুমি আমার-
গোপন বৃষ্টি বিলাস, এক অনন্যতার সৃষ্টি!
গোপন গ্রহণযোগ্যতা, লজ্জামাখা অ-স্ব-স্তি-তা
চিঠি! আমার গল্পে তোমার দৃষ্টি।”
– Asraful Porag
brishti bilash pdf link
হুমায়ুন আহমেদের সকল বই লিস্ট: click here