যারা মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়, বাংলাদেশ থেকে নাসায় চাকরি করতে চায়, মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চাই, তাদের জন্য নাসায় চাকরির যোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত এ পোস্ট।
আশা করি, এ টপিকে যাদের আগ্রহ আছে তারা ভাল করেই জানেন- নভোচারী অর্থ কি, নভোচারী ইংরেজি কি, আর নাসার বিজ্ঞানীদের বেতন কত, মহাকাশ বিজ্ঞানী কাদের বলে, নাসার কাজ কি এসব আগ থেকেই জানেন।
এই পোস্ট কপি করে এখানে দেওয়ার উদ্যেশ্যঃ আমি নিজেও পিজিক্স এর ১জন ছাত্র, অথচ মকাকাশ নিয়ে পড়াশোনা করতে হলে কিভাবে কি করতে হয় এসব নিয়ে আমার জ্ঞান প্রায় শুন্যের কোঠায়। আমার মত এরকম অনেকে আছে যাদের মহাকাশ নিয়ে পড়াশনার জন্য কি করতে হয় তা জানার আগ্রহ আছে, কিন্তু সঠিক গাইড পাচ্ছে না। তাদের কথা চিন্তা করেই এই পোস্ট হুবহু কপি করে এখানে দিলাম।
মহাকাশ নিয়ে পড়তে চাই, মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চাই, সুতরাং আমি কি নিয়ে পড়বো!! আসুন জেনে নেই!
(গ্রুপের অনেক সম্মানিত জ্ঞান বোদ্ধারা কমপ্লেইন করছেন ইদানীং গ্রুপটা আর আগের মতোন নেই, মহাকাশ বিষয়ক প্রশ্নের ছড়াছড়ি কিন্তু উত্তর দেয়ার কেউ নেই তবে ঠাট্টা করার মতোন অনেকেই আছেন, তাই সবার কাছে এডমিন প্যানেলের পক্ষ থেকে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আশা করি আপনাদের সহায়তা পাবো, আপনারা বিভিন্ন সাজেশন দিয়ে গ্রুপটিকে নানাভাবে সমুন্নত করার জন্য সহায়তা করবেন।)
যদিও আজকের টপিক এটা নয়, সরাসরি আজকের টপিকে ফিরে আসি। অনেক আন্টি আংকেল তাঁদের সন্তানের জন্য এবং অনেক আগ্রহী ভাই বোনেরা আমার কাছে, এবং গ্রুপের কাছে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন
কোন সাব্জেক্টে পড়লে আমি আমার স্বপ্নের মহাকাশ নিয়ে জ্ঞান আহরণ করতে পারবো?
কিভাবে আমি মহাকাশ বিষয়ক সাবজেক্ট চ্যুজ করতে পারবো ফিউচারে?
এইচএসসির পরেই কি সরাসরি মহাকাশ রিলেটেড সাবজেক্ট নিয়ে স্টাডি করা যায়??
আমার বিএসসি তে যদি কসমোলজি, এস্ট্রোনমি জাতীয় সাবজেক্ট না থাকে, তারপরেও কি আমার পক্ষে মহাকাশ বিষয়ক সাবজেক্ট নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়ার কোনো সুযোগ আছে?
নাসা, স্পেস এক্স, ISRO ইত্যাদির মতোন জায়গায় জব করতে হলে কি ধরণের সাবজেক্ট প্রয়োজন?
আশা করি আজকের এবং কালকের লেখার মধ্যে আপনাদের সকল প্রকার এরূপ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আমি আমার সীমিত জ্ঞান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
প্রথমে আমি আমার পাঠ্য সাবজেক্ট দিয়েই শুরু করি, যাকে আমরা Astronautic বলে থাকি,
এর অন্তর্ভুক্ত হলো –
Aerospace Engineering
Astro physics
Aeronautics
Space flight science & Aviation
Quantum Mechanism
astrometry
Orbital Mechanism
Astrodynamics
এছাড়া যেহেতু Aerospace Engineering হলো ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটা স্পেশালাইজড শাখা সুতরাং যাদের ইচ্ছে আছে ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও MSC তে এই সাবজেক্টে যেতে পারবেন ( যদিও বাংলাদেশে এই সাবজেক্ট গুলোর একটিও পাবেন না কোনো ভার্সিটিতে পড়তে, বেশিরভাগ সাবজেক্ট গুলোর জন্য রাশিয়া এবং US country গুলো বেস্ট)
এবার আসি Astronomy –
এর মধ্যে আছে –
stellar astronomy
solar astronomy
Galactic astronomy
Extragalactic astronomy
Astrobiology
Astrobotany
Astrochemistry or cosmochemistry
Cosmology
Planetary science
Forensic astronomy
Space archaeology
Space medicine
Space architecture
Archaeoastronomy
Astroanthropology
অর্থাৎ দেখলাম – শুধুমাত্র ফিজিক্স কেমিস্ট্রি বা বায়োলজি পড়েও এমনকি ভূতত্ত্ব, ডাটা সাইন্স, নৃতত্ত্ব এগুলো পড়েও আপনি কসমোলজি নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
আগামী পর্বে এই সাবজেক্ট গুলোর বিশ্লেষণ ও কিভাবে কোথায় পড়তে পারবেন, এছাড়া আপনি যদি সায়েন্সের স্টুডেন্ট না ও হোন তবুও কি এস্ট্রোনমি নিয়ে কাজ করতে পারবেন কিনা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলবো।
credit: স্বস্তিকা ভট্টাচার্য্য
মহাকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন কি আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব
আজ কথা বলবো মহাকাশচারী বা এস্ট্রোনট হওয়া নিয়ে।
যদিও আমি এ বিষয়ে হয়তো এখানে উপস্থিত অনেকের চাইতেই অজ্ঞ হয়ে থাকতে পারি, তাই অজ্ঞতাকে মার্জনার দৃষ্টিতে দেখবেন। তারপর তারপর ও অনেক ঘেটে ঘুটে স্টাডির একটা আংশিক ফলাফল দেখানোর চেষ্টা করছি।
আমাদের সবার এস্ট্রোনট বলতেই নাসার লোগোটা চোখের সামনে ভেসে উঠে তাই শুরুটা
NASA – National Aeronautics and Space Administration
প্রথমত দূঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, আপনাকে US এর নাগরিক হতে হবে, অন্যথায় এখানে এপ্লাই করতে পারবেন না, তবে অতিরিক্ত যোগ্য হলে অথবা উনাদের আন্ডারে ইন্টার্নিশিপ করলে এবং পাশাপাশি permanent residence এর জন্য এপ্লাই করলে, আপনি যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, ডক্টরাল ইন মেডিসিন ( সোজা ভাষায় MD) ইনভারনমেন্টাল সাইন্স এগুলোর উপর সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী হতে হবে (মাস্টার্স বা পিএইচডি) , এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হলে তো কথাই নেই।
বিশাল সংখ্যক বাঘা বাঘা ব্যক্তিরা প্রতিবছর চেষ্টা এপ্লিক্যান্ট হোন নাসার, সেখান থেকে সর্বোচ্চ যোগ্যদের প্রথম ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হয়, এবং সেখানে উত্তীর্ণ হলে কিছু সংখ্যক সুযোগ্য ব্যক্তিকে ২ ইন্টারভিউ তে ডাকা হয়, উত্তীর্ণ হলে তারপর ফিজিক্যাল লং টার্ম প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, সেখানে টিকে যাওয়াদের নিয়েই বিভিন্ন প্রোজেক্ট করা হয়।
তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় আপনার এজন্য – অসাধারণ দৃষ্টিশক্তি লাগবে, ফিজিক্যালি ও মেন্টালি ফিট হতে হবে, এবং খুব ভালো স্মৃতি শক্তি লাগবে, পাশাপাশি ইমোশন কন্ট্রোল করার মারাত্মক ক্ষমতা ও অত্যাবশকীয়। আরো অনেক পরীক্ষা আছে সেসকল পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হতে হবে।
এবার আসি কোম্পানি গুলো যেমন – SpaceX Roscosmos, The European Space Agency, China National Space Administration, JAXA, Cnes, ISRO, Asc Csa, CERN, Aerospace Technology Institute and Arianespace. এগুলোতে ও বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় সেইম। ওদের দেশের নাগরিক হওয়া আবশ্যিক।
যেমন ISRO তে হওয়ার আগে আপনার ইন্ডিয়ান নাগরিক হওয়া আবশ্যিক, ঠিক তেমনি প্রতিটি এভাবেই কাজ করে।
তারমানে আপনার ফিজিক্যালি ও মেন্টালি ফিট হওয়ার পাশাপাশি এডুকেশনালি ও এক্সিলেন্ট হতে হবে , তাই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা যাবে না, নাহলে আষাঢ়ে গল্প হয়ে রয়ে যাবে আপনার স্বপ্ন,।
এরজন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়, পাশাপাশি ফিজিক্যাল ও মেন্টাল ফিটলেস, রেগুলার ব্যায়াম করা, পাজল গেম খেলা, মেডিটেশন করা আবশ্যক , না হলে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন যে গুড়ে বালি!!
এবার বলে রাখি – আপনি যদি সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের না হোন তাহলে কি কোনো প্রকার চান্স আছে কিনা মহাকাশচারী হওয়ার!?
উত্তর হলো –
হ্যাঁ আছে, ভূতত্ত্ববিদদের ও নিয়ে যাওয়ার প্রকল্পে আছে #SpaceX এছাড়া, Environmental Science, Data Science পড়েও হওয়া সম্ভব, আর্টসের যারা ম্যাথম্যাটিকস নিয়ে পড়ছেন তারা ও পারবেন, কর্মাসে স্ট্যাট নিলেও পারবেন।
তবে আপনার অবশ্যই সায়েন্সের ধারণা থাকতে হবে তুখোড়, নাহলে সম্ভব নয়।
তাই এখন থেকেই নিজেকে গড়ে তুলুন, স্পেশালি এখনো যারা স্কুল কলেজ লেভেলে আছেন।
আগামী পর্বে মহাকাশচারী হওয়া ছাড়া ও যেসকল কাজ করার স্কোপ আছে তা নিয়ে আলোচনা করবো।
আর কি কি চাচ্ছেন জানতে তা কমেন্ট বাক্সে জানাবেন।
আরও দেখুন-
মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক বই pdf download