৫০+টি রান্না শেখার বই Pdf Download – All Ranna Recipe Pdf Books
বিভিন্ন দেশের মত আমাদের বাংলাদেশেও রানা, খাদ্য, পুষ্টি বিষয়ক বই এর কদর সবসময় আছে ও থাকবে। কারণ বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষের রুচিবোধ ও সচে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মানব জীবনযাপন প্রণালীতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। রান্না একটি শিল্প। এই বাংলার ঘরণীদের অনেক ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে। খাবার তালিকায় নানা রকম রান্নার রেসিপি এর সংযোজন ঘটেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রান্না প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে রান্না শেখানো হচ্ছে।
আর তাইতো বিভিন্ন রান্নার টিপস নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। দেশি-বিদেশি নানা পদের রান্না ও রেসিপি নিয়ে রান্না বিষয়ক pdf বইগুলোর ডাউনলোড করে নিন। সুবিখ্যাত রানা খাদ্য পুষ্টি গ্রস্থটি নতুন আঙ্গিকের কথা মনে রেখে বইগুলোতে খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। বইগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এবং অন্যান্য রান্নার ক্লাসের শিক্ষার্থীসহ রন্ধন বিদ্যায় আগ্রহী সকলের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে।
All ranna recipe book pdf free Download link:
01. রান্না খাদ্য পুষ্টি অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবিরের রান্নার বই pdf Download link: ranna khaddo pushti by Siddika Kabir recipe book pdf
02. খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বই Pdf download link: coming soon
03. টমি মিয়া’স কিচেন pdf download link: tommi miya kitchen bangla pdf
04. রসনাঃ স্পেশাল রেসিপির বই Pdf download link: special recipe bangla book pdf
05. রান্না শেখার চিট শীট Pdf download link: ranna shikhar cheat sheet pdf
06. রসবতী শংকর বাংলা রান্নার বই পিডিএফ ডাউনলোড লিংকঃ Rosobori Rannar boi pdf
বাকি বইগুলো আরও দারুণ। অন্যান্য আরও ১০টি সেরা রেসিপি বই এর লিংক নিচে আর্টিকেলের মাঝে দেওয়া হল-
Best Bengali Cooking Recipe Book Pdf free download – সকল রান্না বিষয়ক বই Pdf Download (পিডিএফ ডাউনলোড)
যুগের পরিবর্তনের সাথে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, কাজের ধারা এবং খাওয়ার রুচিরও পরিবর্তন হয়ে আসছে। রুচির মান উন্নয়নে, ভাল রান্না এবং পুষ্টিকর ও সুস্থাদু খাবার পরিবেশনে ভূমিকা রাখছে রান্নার আদর্শ রেসিপি। সৃজনশীল মানুষ রান্নাকে বই-পুস্তকের আওতায় এনে রন্ধন জ্ঞানের সীমা বিস্তৃত করেছে।
রান্নার এ বইটি পড়ে যা যা জানতে পারবেন তার সূচীপত্রঃ-
- খাদ্য প্রস্তুত
- গম আলু চাল ডাল
- শাক সবজি ফল
- সুপ তৈরি
- ডিম মাছ মাংস
- টক ঝাল মিষ্টি
- খাদ্য সংরক্ষণ
- বেকিং
- চাইনিজ ও অন্যান্য বিদেশী খাবার
- খাদ্য ও পুষ্টি
- জ্ঞাপন
- নির্দেশন পঞ্জি
- রেসিপি
- রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়
- রেসিপি বুঝার নির্দেশ
- রান্নার সরঞ্জাম ও তৈজসপত্র
- মাপার সরঞ্জাম
- কাটার সরঞ্জাম
- মিশাবার সরঞ্জাম
- বেকিং-এর সরঞ্জাম
- চুলায় রান্না করার সরঞ্জাম
- বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম
- রান্নায় মাপ ও ওজন
- মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন ও দৈর্ঘ্যের মাপ
- বিভিন্ন প্রকার মাপ ও ওজনের তালিকা
- রান্নার উপকরণ মাপার পদ্ধতি
- শুকনা খাদ্য মাপা
- তরল ও নরম খাদ্য মাপা
- রান্নার কৌশল
- খাদ্যবস্তর কাটার কৌশল
- মিশাবার কৌশল
- চলায় রান্নার কৌশল
- খাদ্য নির্বাচন ও ক্রয়
রান্নার রেসিপি নাস্তা
- ঝাল নাস্তা রেসিপি
- বাচ্চাদের নাস্তা রেসিপি
- আলুর নাস্তা রেসিপি
- ইজি নাস্তা রেসিপি
- নাস্তা রেসিপি বাংলা
- ময়দার নাস্তা রেসিপি
- ডিমের নাস্তা রেসিপি
- ঈদের নাস্তার রেসিপি
রেসিপি কি?
রেসিপি হচ্ছে এমন একটি রান্না সম্পর্কিত তালিকা যা পড়ে অনায়াসে খাবার প্রস্তুত করা যায়। রেসিপিতে রান্নার উপকরণের মাপ এবং কিভাবে রান্না করতে হবে তা লেখা থাকে। রেসিপি দেখে রান্না করলে জিনিসের অপচয় হয় না। কতজন খেতে পারবে সেই পরিবেশন সংখ্যাও আদর্শ রেসিপিতে উল্লেখ থাকে। তাছাড়া রেসিপি দেখে নতুন খাবার রান্না করা যায়। খাবার কিভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে সে নির্দেশও রেসিপিতে দেয়া হয়।
রান্নার প্রস্তুতি – রান্না করার জন্য যেসব প্রস্তুতির প্রয়োজন:
- (১) রেসিপি পড়ে ঠিকভাবে বুঝে নিতে হবে।
- (২) রেসিপিতে যেসব উপকরণ দেয়া হয় তা ব্যবহার করতে হবে।
- (৩) উপকরণ সাবধানে এবং সঠিকভাবে মাপতে হবে।
- (৪) রেসিপিতে রান্নার যে কৌশলের উল্লেখ থাকে সে কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
- (৫) খাদ্য প্রস্তুতে উপযুক্ত পাত্র ব্যবহার করা, সঠিকতাপে রান্না করা, পানি মাপমতো দেয়া এবং হাঁড়ির মুখ খোলা রেখে বা বন্ধ করে রান্না করার বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করতে হবে।
- (৬) রান্না শেষে সময়মতো চুলা থেকে নামাতে হবে।
- (৭) রেসিপির নির্দেশ মতো খাবার ঠাণ্ডা বা গরম এবং বিভিন্ন সস ও চাটনি ইত্যাদি সহযোগে নানা উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
রেসিপি বুঝতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়গুলো সহজভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে মাপ ও ওজনের সাংকেতিক চিহ্ন, রান্নার কৌশল, রান্নার পদ্ধতি, রান্নার তৈজসপত্র, চুলা ও ওভেনের তাপ, মসলা ইত্যাদি বিষয়গুলো পড়ে বুঝে নিতে হবে। রেসিপি বুঝে ঠিক মাপে এবং ঠিক পদ্ধতিতে
রান্না করা একান্ত দরকার । তবে লবণ, চিনি এবং ঝাল ও মসলা ব্যবহারে নিজের পছন্দমতো মাপে কিছু কম বা বেশি করা যেতে পারে। চুলার তাপ বেশি বা কম হলে
পানির পরিমাণে তফাৎ হয়। এ অবস্থায় নিজের বিবেচনায় পানির পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। রেসিপিতে যে পরিমাণ দেয়া হয়েছে তার চেয়ে
দ্বিগুণ / তিনগুণ খাবার তৈরি করতে হলে উপকরণের পরিমাণগুলো ২,৩….. দিয়ে গুণ করে নিতে হবে । আবার কম করতে চাইলে ২,৩,…. দিয়ে ভাগ করতে হবে ।
রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়:
রেসিপি বুঝতে হলে খাদ্যের মাপ ও ওজন, রান্নার উপকরণ ও মসলা এবং বিনিময় বা বিকল্প খাদ্য ইত্যাদি কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে আগেই পড়ে জেনে নিতে হবে।
এ বইয়ের রেসিপি থেকে কিছু কিছু অংশ উদ্ধৃত করে বুঝিয়ে দেয়া হলো :
- ১. মাংস, টুকরা ১ কেজি
- ২. মোরগ (১১/২ কেজি) ২টি
- ৩. চিংড়িমাছ, খোসা ছাড়ানো ৮২ কাপ
- ৪ ছোলার ডাল, সিদ্ধ ১কাপ
- ৫. আলু, স্লাইস ৪টি
- ৬. আম, ফালি ২টি
- ৭. মরিচ, গুড়া ১ চা চামচ
- ৮ দারচিনি, ২ সেমি লম্বা ২ টুকরা
- ৯ পাউরুটি, মাঝারি, ২ সেমি পুরু ২ স্লাইস
- ১০ প্রতিটি (১১/২) কেজি ওজনের ২টি ফার্মের মোরগ নেয়া বোঝায়।
রান্নার সরঞ্জাম ও তৈজসপত্র
মাপার সরঞ্জামঃ চামচ, কাপ, কিচেন স্কেল ইত্যাদি সরঞ্রাম রান্নাঘরে খাদাদ্রব্য মাপার কাজে ব্যবহৃত হয়। মাপার জনী যে কাপ ব্যবহার করা হয় তা বড় চায়ের কাপ এর সমান মাপার ১ কাপ প্রায় ২০০ গ্রাম বা ৮ আউন্গের মাপার জন্য এক সেটে ৪টি বিভিন্ন মাপের কাপ যেন ২ কাপ, ১/২ কাপ, ৯/৩ কাপ, ৯/৪ কাপ থাকে । আবার এক সেট মাপার চামচে থাকে বিভিন্ন মাপের ৬টি চামচ যেমন ১ টেবিল চামচ, ১/২ টেবিল চামচ, ১ চা চামচ, ১/২ চা চামচ, ১৪ চা চামচ এবং ১৮ চা চামচ।
রেসিপির উপকরণের মাপ কখনো লিটারে কখনো গ্রামে দেয়া থাকে। তরল দ্রব্য মাপার জন্য কাচের বা প্লাস্টিকের কাপ ব্যবহৃত হয়। এতে দাগ দেয়া থাকে বিধায় মাপার সময় দ্রব্যটি কোন দাগ পর্যন্ত নিতে হবে তা দেখা যায়।
কাটার সরঞ্জামঃ
ছুরি, বটি, কুরুনি, শিলনোড়া, পিঠার নকশা, ডোনাট কাটার কিমার মেশিন ইত্যাদি সরঞ্জাম দিয়ে খাদ্য নানাভাবে কাটা হয়, কুরানো হয় এবং বাটা হয়। নিখুঁতভাবে সুন্দর করে কাটার জন্য ছুরি, বটি ধারাল হতে হবে।
ছুরিঃ মাছ, মাংস, সবজি, পাউরুটি, কেকের জন্য ছুরি সুবিধা অনুযায়ী ভিন্ন আকার ও ভিন্ন ডিজাইনের হয়।
রান্নার টিপস
- মাছ রান্নার টিপস
- সবজি দিয়ে মাছ রান্না
- আলু দিয়ে মাছ রান্না
- রান্নার রেসিপি
- মাছ ভুনা রেসিপি
- তেলাপিয়া মাছের রেসিপি
- মাছ রান্নার ছবি
- রুই মাছ রান্না
- রুই মাছের কালিয়া রেসিপি
- ছোট মাছের রেসিপি
- মাছের ঝোল এর রেসিপি
রান্না প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
- রান্না প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঢাকা
- রান্না ট্রেনিং
- ফাস্ট ফুড প্রশিক্ষণ
- রান্নার প্রশিক্ষণ
- বাবুর্চি প্রশিক্ষণ
- শেফ প্রশিক্ষণ
রান্না বিষয়ক কোর্স – রান্না শেখার কোর্স
- ফাস্টফুড কোর্স
- রান্না শিখতে চাই
- শেফ কোর্স
- বাবুর্চি কোর্স
- ফাস্টফুড কোর্স
- রান্না শেখার কোর্স চট্টগ্রাম
ঐতিহ্যবাহী খাবার
- চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকা
- বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার
- বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার
- খুলনার ঐতিহ্যবাহী খাবার
- বাংলাদেশের আঞ্চলিক খাবার
- রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার
- বরিশালের ঐতিহ্যবাহী খাবার
- চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পণ্য
রান্না নিয়ে গল্পঃ
তিনটি শখ আমার জীবনে সহজাতভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। এক হল গান গাওয়া। গান গেয়েছি অনেক। রেডিয়ো রেকর্ড ক্যাসেট কোনও কিছুই বাদ থাকেনি। তার পিছনে প্রচুর খাটুনি, প্রচুর শিক্ষার দরকার হয়েছে। দ্বিতীয় শখ রান্না করা। তৃতীয়টি ঘর সাজানো। আমার রান্না করার শখকে কেন্দ্র করেই রান্নাঘরের সাতকাহন? বইয়ের সৃচনা।
অনেক রান্নাই অল্প বয়সে শিখেছিলাম আমার মায়ের কাছ থেকে। বিয়ের পর থেকেই নানা রকম পার্টি দেওয়ার দায়িত্ব আমার ঘাড়ে এসে পড়ল। রান্নার দিকে একট সহজাত ক্ষমতা থাকাতে ,সহজেই আমি নানান রকম রান্না রপ্ত করলাম। পাটিতে আমার সেই সব বান্না।খেয়ে অনেকেই বলত, “এই রান্নাটা কী করে করেছেন বলে দিন না!” আমি তাদের বিশদভাবে বলে দিলেও, পরে দেখা হলে তারা বলত, “নিশ্চয় তুমি কিছু সিক্রেট হাতে রেখে বলেছ।” তাই ভাবলাম, একটা বই লিখে ফেলি, তা হলে বারে বারে আর রেসিপি বলে দিতে হবে না। বলব, বইয়ে আছে দেখে নাও।
সুতরাং, শুরু হল রান্নার বই লেখা। গোড়াতেই বুঝে গেলাম শুধুমাত্র রান্নার ব্যাকরণ (উপকরণ ও পদ্ধতি) লিখে রান্নার বই রচনা চূড়ান্ত একঘেয়েমির কাজ। কিছু লিখে ফেলেই রেখেছিলাম, পুত্র অমিত বুদ্ধি জোগাল-_-“মা কোন রান্না খেয়ে কার কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, কে কী বলেছিল, সে সবের কত মজার গল্প তুমি আমাদের বলেছ। সেগুলো জুড়ে লিখে নাও না; তোমার তাহলে আর বোরিং লাগবে না-_ আর গন্পগুলো সবারই ইন্টারেস্টিং লাগবে।” ছেলেকে “তথান্তু” বলে গল্পচ্ছলেই রান্নার বই লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম।
রান্না নিয়ে কয়েকটি আবশ্যিক কথা আমায় লিখতেই হচ্ছে। ভাল রান্নার পিছনে একটি ব্যাপারে লক্ষ রাখতেই হবে, তা হল রান্নাঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। দামি বাসনে রান্না করলেই খেতে খুব ভাল হবে এ আমি মোটেও বিশ্বাস করি না। রান্নার বাসন নিখুঁত, পরিষ্কার রাখাও উত্তম রান্নার জন্য দরকার।
আমার বাড়িতে কাশ্মীরি লঙ্কা ঢুকেছে ১৯৬২-র শেষ ভাগে। আর সেই থেকে সে আমার সঙ্গ ছাড়েনি। কী করে ঢুকল কাশ্মীরি লঙ্কা আমার রান্নাঘরে? তার পিছনে একটা ছোট্ট গল্প আছে। আমার স্বামী তখন বিলেতের পরীক্ষায় সফল হয়েছেন এবং আমরা দু-জনে সবেমাত্র বোনে ফিরে এসেছি__সেটা ছিল ১৯৬১ সাল। তার ঠিক এক বছর পর আমাদের ছেলে হল। একটি
বাঙালি পরিবারের সঙ্গে জানাশোনা হল। ভদ্রলোকের নাম ছিল সুশীল ট্টাচার্__কোরেক্স কোম্পানিতে উচ্চ পদস্থ অফিসার ছিলেন তিনি। ছোট্ট পুত্রকে নিয়ে ওদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম একদিন বিকেলবেলায়, ভদ্রমহিলা আমাদের আপ্যায়ন করে খেতে দিলেন চায়ের সঙ্গে ফোলা ফোলা লুচি ও তরকারি। লালচে রঙের তরকারির স্বাদ ছিল অপূর্ব। ভীষণ কৌতুহল
হল জানতে যে, এরকম সুন্দর লাল লাল তরকারি-__অথচ, একটুও ঝাল না! কী করে হল? ভদ্রমহিলা আমায় জানালেন যে, কাশ্মীরি লঙ্কার রান্না দেখতে লাল, কিন্তু খেতে ঝাল হয় না। এরপর থেকেই আমার রান্নাঘরে সবসময় মজুত থাকে কাশ্মীরি লঙ্কা।
মশলা সন্বন্ধে এত কথা লিখতে গিয়ে মায়ের একটা অপূর্ব মশলার মিশ্রণের কথা মনে পড়ে গেল। জিরা পাউডার একবার বাটিয়ে আমি কাজ চালিয়ে নিই। অথচ, আমার মায়ের রান্নার তরিবৎ-ই ছিল আলাদা। মৌরি, জিরা, ধনে, অল্প ক’টি গোলমরিচ ও কচি তেজপাতার কয়েকটি কুচি মিশিয়ে মা মশলা বাটাতেন। আর সেই মশলা দিয়ে রান্নার সুগন্ধ? বর্ণনা দেওয়া সম্ভব না।
যাক, নিজের রান্নার কথায় ফিরে আসি। অগোছালো রান্না ঘরে রীধতে আমি ভালবাসি না। আর সে কথা আমার রীধুনি মহিলার অগোচর নয়। সুতরাং, সে রান্নাঘর মোটামুটি গুছিয়ে রাখে। বাধ্যতামূলক রান্না আমার ধাতে সয় না। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হরেক রকমের রান্না করতে আমি ভালবাসি। তাই রান্নাঘরে আমার হাজিরা থাকে প্রায় রোজই।
একটি গোলাকার ঢাকাওয়ালা স্টিলের পাত্রে, ছোট ছোট ছ’টি ও মাঝখানে একটি নিয়ে মোট সাতটি কৌটো-_-তাতে রাখা থাকে হরেক রকম মশলা-এই কৌটোই হল আমার রান্নার প্রাণভোমরা। পরপর গোল করে সাজানো কৌটোগুলোয় থাকে হলুদ, লঙ্কার গুঁড়ো, পাঁচফোড়ন, আস্ত জিরা, মেথি, কালো জিরা ও সর্ধে__আর একটি থালায় থাকে সর্ষের তেল, সাদা তেল, নুন
ও একটি ছোট কৌটো ভর্তি চিনি। তা ছাড়া আধ মগ জল ও একটি সীড়াশি ছাড়া আমার রান্না এক পা এগোবে না। রান্নার রণক্ষেত্রে অন্যান্য হাতিয়ার যা দরকার হয় হাতের কাছে জুগিয়ে দেয় আমার রীধুনি।
একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য__যারা আমায় নাছোড়বান্দা হয়ে “রান্নাঘরের সাতকাহন” বইটি লিখতে বাধ্য করেছে এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে উদ্দুদ্ধ করেছে তারা হল আমার পুত্র অমিত ও পুত্রবধূ রিংকা। বাংলা ভাষায় সুপত্ডিত সুব্রত সিন্হা, যাকে আমি “ডিকশনারি” বলে সম্বোধন করি, কোনও বাংলা শব্দ নিয়ে খটকা লাগলে অভিধান না খুলে তাকেই জিজ্ঞেস করে জেনে নিয়েছি__ সেও আমায় অকুঠ্ঠিত সাহায্য করেছে। তা ছাড়া রয়েছে ধন্দ্রিলা মাইতি, যে কিনা এই বইয়ের পাখুলিপির প্রতিলিপি করে দিয়ে আমায় উপকৃত করেছে। রান্নার খুঁটিনাটি নিয়ে পরামর্শ করতে যাদের সর্বক্ষণ জ্বালিয়েছি সে দুটি ন্নেহের-খাত্রট হল আমার বোনঝি তুতুল (অনুরাধা দাস) ও বোনশোৌ-বউ রীনা পুরকায়স্থ!
আরও দু’জনের নাম আমার ভুলুলে চলবে না, এই লেখাগুলোর কপি প্রকাশকের কাছে দেবার আগে প্রুফ রিডিং-এর মতো ঝকমারির কাজে আমায় সাহায্য করেছে_ শর্বরী নন্দী ও পারমিতা ভট্টাচার্য।
পরোক্ষ ভাবে উৎসাহ দিয়ে এই বই লিখতে যারা আমায় অনুপ্রাণিত করেছে, তাদের নাম অনুক্তই রইল, কিন্তু একজনের কথা আমায় লিখতেই হচ্ছে__-অনুষ্টপ” প্রকাশনার প্রধান কর্মী আশিস ঘোষ নীরবে আমার এই বইয়ের লেখা টাইপ করে দিয়ে আমায় ঝঞ্চাটমুক্ত করেছে।
রান্নার পসরা নিয়ে আমার এই বইয়ের তরী অবশেষে তীরে এসে পৌঁছল। রান্নার প্রণালী প্রাঞ্জল ভাষায় লিখতে চেষ্টা করেছি। “রান্নাঘরের সাতকাহন” বইটির লেখা অনুযায়ী তৈরি করা খাবার খেয়ে কারুর তৃত্তি হলে আমার শ্রম সার্থক হবে। যাই হোক, পরিশেষে বলব, রান্না শেখার বই গুলো কেমন লেগেছে জানাবেন।