আদর্শ হিন্দু হোটেল Pdf – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় Pdf Download
বই: আর্দশ হিন্দু হোটেল pdf
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
ক্যাটাগরি: উপন্যাস
ফরম্যাট: free Download (ফ্রি ডাউনলোড)
প্রকাশনী: দি স্কাই পাবলিশার্স
১ম প্রকাশ: ২০১৯ সাল
মোট পেজ: ১৪৪ পৃষ্ঠা
আদর্শ হিন্দু হোটেল বই রিভিউ
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসের অন্যতম সেরা একটি, ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’। বইটি পড়া শেষ করার পর বিষয়বস্তু ও গল্পের কিছু চরিত্র আমার মনে ভীষণ গভীর ভাবে দাগ কাটে। বেশ কয়েকটি চরিত্র থাকলেও, গল্পের প্রধান চরিত্র ‘হাজারী ঠাকুর’। ইনি একজন অত্যন্ত সাদাসিধে গরিব ব্রহ্মান, যিনি নিজের স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা কে গ্রামে রেখে রানাঘাট শহরের রেল স্টেশন চত্বরে বেশ সুখ্যাত একটি হোটেলের রাঁধুনি বামুন এর কাজে যুক্ত হন।অন্যান্য মুখ্য চরিত্র গুলির মধ্যে প্রথম, পদ্ম ঝি। যিনি ওই একই হোটেলের অর্থাৎ বেঁচু চক্রবর্তীর হোটেলের হত্তাকত্তা। বাবু (চক্রবর্তী মশাই) এই পদ্ম ঝির কোনো কথা ফেলেন না। দ্বিতীয় চরিত্র কুসুম, যিনি হলেন হাজারী ঠাকুরের গ্রামের এক অভাগিনী কম বয়সী বিধবা নারী। হাজারীকে জ্যাঠামশাই সম্মধন করলেও মনে প্রানে তাকে পিতার আসনে বসিয়েছে। গ্রাম বাংলার নারী চরিত্র কত খানি মমতাময়ী, ধৈর্য শীল, বিশ্বাসী ও পরোপকারী হতে পারে তার অন্যতম নিদর্শন কুসুম।
তৃতীয় চরিত্র, অতসী। হাজারীর গ্রামের অন্যতম এক ধনী পরিবারের একমাত্র কন্যা। অত্যন্ত সরল, মায়া মমতায় টইটুম্বুর তার মন। মা লক্ষীর মত মুখের গড়ন, এবং গল্পের শেষে জানা যায় তিনি একই সাথে অভাগিনীও। এছাড়াও রয়েছে বংশী, নরেন, টেপি ইত্যাদি অসংখ্য চরিত্র। বিংশ শতাব্দীর মানুষের মনুষ্যত্বের সাথে তুলনা করে এ উপন্যাস পড়লে, লেখকের লেখনীর মাধুর্য কে ছোট করা হবে। তার যুক্তি তর্কের দিকে কিছুটা পেছনে ফিরে এগোলে উপন্যাসটির সঠিক এবং শুমধুর আস্বাদন হবে বলে আমি মনে করি।
আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাস pdf download
ডাউনলোড করার আগে বইটির ১ম কিছুটা পড়লে বইটি কেমন তা অনুধাবন করতে পারবেন…
রাণাঘাটের রেল-বাজারে বেচু চক্কত্তির হােটেল যে রাণাঘাটের আদি ও অকৃত্রিম হিন্দু-হােটেল এ-কথা হােটেলের সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা না থাকিলেও অনেকেই জানে। কয়েক বছরের মধ্যে রাণাঘাট রেলবাজারের অসম্ভব রকমের উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হােটেলটির
অবস্থা ফিরিয়া যায়। আজ দশ বৎসরের মধ্যে হােটেলের পাকা বাড়ী হইয়াছে, চারজন রসুয়ে-বামুনে রান্না করিতে করিতে হিমশিম খাইয়া যায়, এমন খদ্দেরের ভিড়।
বেচু, চক্কত্তি (বয়স পঞ্চাশের ওপর, না-ফর্সা না-কালাে দোহারা চেহারা, মাথায় কাঁচা-
পাকা চুল) হােটেলের সামনের ঘরে একটা তক্তপােশে কাঠের হাত-বাক্সের ওপর কনুয়ের ভর দিয়া বসিয়া আছে। বেলা দশটা। বনগাঁ লাইনের ট্রেন এইমাত্র আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। কিছু কিছু প্যাসেঞ্জার বাহিরের গেট দিয়া রাস্তায় পড়িতে শুরু হইয়াছে।
বেচু চক্কত্তির হােটেলের চাকর মতি রাস্তার ধারে দাঁড়াইয়া হাঁকিতেছে—এই দিকে আসুন বাবু, গরম ভাত তৈরি, মাছের ঝােল, ডাল, তরকারি ভাত-হিন্দু-হােটেল বাবু
দুইজন লােক বক্তৃতায় ভুলিয়া পাশের যদু বাঁড়ুয্যের হােটেলের লােকের সাদর আমন্ত্রণ
উপেক্ষা করিয়া বেচু চক্কত্তির হােটেলেই ঢুকিল।
-এই যে, বোঁচকা এখানে রাখুন। দাঁড়ান বাবু, টিকিট নিতে হবে এখানে কোন্ ক্লাসে
খাবেন? ফাস্ট ক্লাস না সেকেন্ ক্লাস-ফাস্ট ক্লাসে পাঁচ আনা, সেকেন্ ক্লাসে তিন আনা— এ হােটেলের নিয়ম, পয়সা দিয়া বেচু চক্কত্তির নিকট হইতে টিকিট এক টুক্রা সাদা
কাগজে-নম্বর ও শ্রেণী লেখা) কিনিয়া ভিতরে যাইতে হইবে। সেখানে একজন রসুয়ে-বামুন বসিয়া আছে, খন্দেরের টিকিট লইয়া তাহাকে নির্দিষ্ট স্থানে বসাইয়া দিবার জন্য। খাইবার জায়গা দরমার বেড়া দিয়া দুই ভাগ করা। এক দিকে ফাস্ট ক্লাস, অন্য দিকে সেকেন্ ক্লাস।
খন্দের খাইয়া চলিয়া গেলে এই সব টিকিট বেচু চক্কত্তির কাছে জমা দেওয়া হইবে—সেগুলি দেখিয়া তহবিল মিলানাে ও উদ্বৃত্ত ভাত তরকারীর পরিমাণ তদারক হইবে, রসুয়ে-বামুনেরা চুরি করিতে না পারে।
চাকর ভিতরে আসিয়া বলিল—মােটে চার জন লােক খদ্দের। দু’জন ওদের ওখানে
গেল।
বেচু চক্কত্তি বলিল—যা গে। তুই আর একটু এগিয়ে যা—শান্তিপুর আসবার সময়
হ’ল। এই গাড়ীতে দু-পাঁচটা খদ্দের থাকেই। আর ভেতরে বামুনকে বলে আয়, শান্তিপুর
আসবার আগে যেন আর ভাত না চড়ায়। এক ডেকচিতে এখন চলুক।
একটি আদর্শ হিন্দু হোটেল – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় pdf free download link: Link01 – Link02 – Link03 –Link :-6 | Link :-6 | Link :-7 | Link :-4