ইমাম মাহদী ও দাজ্জাল pdf (bangla বই)
বইয়ের বিবরণঃ imam mahdi dajjal o mohaproloy
-
- বই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও মাহদি ও দাজ্জাল (হার্ডকভার) যা বিশ্বনবীর ভবিষ্যৎবাণী ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের আলোকে বই
- মুদ্রিত মূল্য : ৳ ৪৫০
- প্রকাশনী : পরশমণি প্রকাশন
- বিষয় : ইসলামি বিবিধ বই
রিভিউঃ ইমাম মাহদি , তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও শেষ জামানার ফেতনা
ইমাম মাহদি উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এক মহা খোশখবর, ত্রাণকর্তা, মুক্তির দূত । এক কথায় নির্যাতিত
মুসলিম উম্মাহর আসমানী রাহবার।
কিছু লোক ইমাম মাহদির আগমনকে অস্বীকার করে । তারা এই হটকারিতার ওপর অটল যে, ইমাম মাহদির ব্যাপারে কোনো সহিহ হাদিস নেই।
পক্ষান্তরে গোটা উম্মতের চৌদ্দশত বছরের মুফাসসিরিন, মুহাদ্দিসিন, ফুকাহা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এঁক্যবদ্ধ আকিদা হলো, ইমাম মাহদি শেষ জামানায় আগমন করবেন । কুফফার ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে কিতাল করে তে নবুওয়াতি পন্থায় ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন।
ইমাম মাহদির আগমনকে স্বীকারকারীদের মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন মতাদর্শী মানুষজন । কিছু লোক বিষয়কে অত্যাধিক গুরুত্ব দেয় এবং বলে এই তো চলে এলো । সুতরাং দুনিয়ার স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ রেখে ইমাম মাহদিকে নিয়েই মগ্ন হও । আবার কিছু লোকের-রিশ্বাস; এসব নিয়ে এত ব্যস্ত হওয়ার কী আছে, সে তো হাজার বছর পরের গল্প । এখনই এসব নিয়ে মাতামাতির কিছু নেই। দ্বিতীয় শ্রেণির লোকজন_ব্ষিয়টিকে গুরুত্ব দিতে সম্পূর্ণ নারাজ। শেষ জামানার ফেতনা এবং ইমাম মাইদির আলোচনা বিলকুল না করা হলেই
তাদের নিকট ভালো। তাদের কিছু লোক ইমাম মাহদির আলোচনার বিরোধীতা তো এ জন্য করে যে, এতে উম্মতের মধ্যে অলসতা এবং
উদাসীনতা সৃষ্টি হয়। আমল করতে অনাগ্রহী হয়। মানুষজন মনে করে, এখন যা কিছু করা প্রয়োজন, তা ইমাম মাহদি এসেই করবেন । তাই তাদের যুক্তিঃ ইমাম মাহদির আলোচনায় যদি এমন প্রভাব তৈরি হয়, মানুষ আমল করা থেকে বিরত হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চয়ই এমন আলোচনার চেয়ে আলোচনা না হওয়াই ভালো ।
এ দু’টো শ্রেণির মধ্যেই রয়েছে অতিরঞ্জন। কেননা, উম্মতকে জাগ্রত করা, তাদের মধ্যে উম্মতের দরদ তৈরি করা, কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উৎসাহিত করা পবিত্র কুরআনের ঘোষিত ফরজ বিধান। তাই উম্মতকে হতাশা ও নৈরাশ্য থেকে বের করে আনতে বিশ্বাসের মশাল জ্বীলানোর উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে আলোচনা ও লেখালেখি করা খুবই প্রয়োজন।
বইয়ের সংক্ষিপ্ত সূচি:
প্রথম খণ্ড
- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ : মাহদি ও দাজ্জাল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী ও হযরত মাহদির আগমন /২৩
- হযরত মাহৃদির আবির্ভাবের লক্ষণসমূহ /৬২
- দাজ্জালের বর্ণনা /১০৯
- বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতি ও ইসলামি আন্দোলনসমূহ /১৮৯দ্বিতীয় খণ্ড
- বারমুডা ট্রাইঅ্যাঙ্গল ও দাজ্জাল শয়তানি সমুদ্র, বারমুডা ট্রাইঅ্যাঙ্গল ও ফ্লাইংসসার /২২১
- বারমুডা ট্রাইঅ্যাঙ্গল (Bermuda Triangle) /২২৭
- ফ্লাইংসসার’স (Flying Saucers) /২৫৫
- দাজ্জালের আগেকার ফেতনাসমূহ /২৯৫
- দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের লক্ষণসমূহ /৩১
- দাজ্জালের সহযােগী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা /৩৬১
- দাজ্জাল সম্পর্কে মিস্টার নস্টারডেমৃস্-এর ভবিষ্যদ্বাণী /৩৯৫
- দাজ্জালবিষয়ক আরও কিছু প্রসঙ্গ /৪১৫
pdf book
link02
শেষ বিকালের রোদন
— আবদুন নূর,রাজস্ব কর্মকর্তা
আজ চলে যাবো,
ছেড়ে যাব সব
চুকিয়ে সব লেনা-দেনা
কাজে আসবেনা কারো মানা,
কোন উপায় নাই
কেমনে রহি তোমাদের সাথে?
যেতে হবে দূরে
কর্তার ইচ্ছাকেই
নিতে হবে বুকে ধরে,
অবজ্ঞা করিতে কেবা পারে?
এমন নিয়ম যে
আছে বিশ্ব চরাচরে!কোন একদিন মায়াময়
শেষ বিকালের
ঝাপসা আলো
আরো আরো ঝাপসা হতে হতে
আঁধিয়ারা মনে
অশ্রুভেজা চোখ মুছে
এসেছিলাম তোমাদের ঘরে
হাসির অভিনয়ে,
হয়ত, কিয়ৎকাল আগে
তোমাদেরই মত কোন বন্ধু
চলে গেছে এই ঘর
ছেড়ে অন্য ঘরে,
আবার তোমরাও পর হয়ে যাবে
ক্ষণকাল পরে।তোমাদের প্রাণের মায়ায়
তোমাদের ভালো লাগার
খাঁদহীন অনুভবে,
তোমাদের সুচিন্তায়,
তোমাদের নিটোল সানিধ্যে,
খুলেছিল মনের অর্গল,
দেখায়েছো মোরে আঁধারে
তোমাদের অনির্বাণ মশাল
তোমাদের এই অবদান
আমার মনের চোখে ভাসিবে
থাকি যদি জীবৎকাল,
তোমরা যে কত ছিলে মোর অনুরক্ত
ভাষার সসীমতায়
তাহা করিতে পারছিনা ব্যক্ত!
ঊষর চোখে বিষন্ন মুখে
দিয়েছিলে অরুণরবির হাসি,
দিয়েছিলে নতুন সুখের সওগাত,
বিষাদ হরিয়ে কত হরষে
মনে মনে বলেছি
কেউ না যেন জানে,
কেউ না যেন বুঝে,
আমি যে তোমাদেরে হৃদয়
উজারি এত ভালোবাসি।
সময়ের স্রোতে
আজি কর্মযজ্ঞ ফেলে
ভালোবাসার এই আঙিনা ছাড়িতে
বড় বেদন লাগিছে মনটায়,
চলে যদি যাই তোমাদের
চেনা মুখগুলি হাসিতে হাসিতে
মোরে হয়তো ডাকিবে
আয় আয় সখা আয়
আমাদের মাঝে আমাদের
অজস্র কাজে,
যেই কাজগুলি তুমি
করে দিতে খুব সহজে।
অসঙ্গ সময়ে
কত স্মৃতি কথা
কত রোদন ভরা কাহিনী
পড়িবে মনে,
তোমাদের আয় আয় বলা
মায়াময় হাতছানিতে
অনেক কথার
সুরগুলি বাজিবে
আমার ধমনীতে।
যখন চোখের আঁড়াল
হয়ে রহিব দূরে
তোমরাও রাখিও মোরে
জনেজনে তোমাদের
নয়নের নীড়ে।
ফুল ভেবে রাখিও মোরে
তোমাদের হৃদয় কাননে,
হয়ত সে ফুল সৌন্দর্য্য বিলাবে
সুরভি ছড়াবে সবখানে।
কোন দিন স্মৃতির মায়ায়
তোমাদের যাবোনা ভুলে,
তোমরাও ভুল করোনা
কোন বিজন সময়ে আমায় মনে আনিতে
তোমাদের স্মৃতির এ্যালবাম খুলে।
সব শেষ জানার কথা
চলার পথে হয়ত কোন
ভুল হতেও পারে
সেই ভুল দিও মোরে ক্ষমা করে,
এই স্বার্থের দুনিয়ায়
কোন গলির আঁধারে
যদি পরবাসী রহি
সত্যিই আমার কথা কি বাজিবে
সবার প্রাণে প্রাণে?
এই প্রশ্নও উঠে এই ঘরের
সন্ধ্যাকালে মোর রোদন ভরা মনে।
—————————————————–
ইমাম মাহদি নিয়ে আরো কিছু কথা
দেখুন! নিশ্চয়ই আমরা বয়লিং ফ্রুগ সিনদ্রোমের কথা শুনে থাকব । বিষয়টা হলো, একটা ব্যাকে যদি আপনি পানিভর্তি পাত্রে রেখে তাপ দিতে থাকেন, তাহলে ব্যাঙটি পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিজের দেহের তাপমাত্রা বাড়াতে থাকে। সে লাফ দিয়ে বের হওয়ার পরিবর্তে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রেখে পানির উত্তাপ সহ্য করতে থাকে। এক পর্যায়ে এসে পানির তাপমাত্রা যখন তীব্র আকার ধারণ করে, তখন ব্যাঙটি পানির তাপমাত্রার সঙ্গে আর নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। যখন পানির তাপমাত্রার সঙ্গে তালমিলিয়ে নিজের দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে অক্ষম হয়, তখন ব্যাউটি উত্তপ্ত পানির পাত্র থেকে লাফ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ততক্ষণে সময় পেরিয়ে গেছে। এখন সে আর লাফ দিতে পারে না। কারণ, সে তার সমস্ত শক্তি পানির তাপমাত্রার সঙ্গে তালমিলাতে গিয়ে ব্যয় করে ফেলেছে। যারফলে সে গরম পানিতে সেদ্ধ হতে থাকে । এক সময় ব্যাঙটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এখানে ব্যাঙের মৃত্যুর কারণটা মূলত ফুটন্ত পানি নয়; বরং বিপদজনক পরিস্থিতির শুরুতে পরিস্থিতির ভয়াবহতা অস্বীকার করে লাফ না দিয়ে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টাটাই তারা মৃত্যুর কারণ । সবকিছু সহ্য করে নেয়ার মতো বড় ভুল তার মৃত্যুর কারণ। পাত্রের পানি গরম কেন, এ ব্যাপারে সতর্ক না হওয়া এবং সমাধানের চেষ্টা না করে পানির উত্তপ্ততার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তই তার জীবন্ত সেদ্ধ হওয়ার কারণ । সঠিক সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে না নেয়াই তার মৃত্যুর কারণ ।
খুব সম্ভব আমরাও ওই ব্যাঙের মতো দ্রুত পরিবর্তন হওয়া আমাদের চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। ভাবছিঃ এই তো টিকে আছি, টিকে যাব । মূলত আমরা সেই বয়লিং ফ্রুগ সিনদ্রোমে আক্রান্ত। যখন বুঝব; দীন ও ইমানের পরিবেশ আর নেই, তখন সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো শক্তিই আমাদের দেহ-মনে অবশিষ্ট থাকবে না।
এক ভয়ঙ্কর তুফান যে জাতির দরজায় করাঘাত করছে, উত্তাল উর্মিমালা নিজের সঙ্গে সবকিছু ভাসিয়ে নিতে আছড়ে পরছে, এমন জাতি যদি সতর্কতা অবলম্বনের পরিবর্তে তুফানকেই অস্বীকার করতে শুরু করে, তাহলে তাদের ভয়ানক পরিণতির ব্যাপারে কার সন্দেহ থাকতে পারে? বিশেষত এমন সম্পর্কে অবগত করা যদি আবেগী এবং বাড়াবাড়ি হয়, তাহলে উম্মতকে জাগানোর সময় ও পন্থা কী হবে? তুফানের আলামত দেখে তার আগমণ অস্বীকার করলে তুফান চলে যাবে? নাকি ঘরের বারান্দায় পৌছা সুনামির ঢেউ শুধু এ জন্য চলে যাবে যে, আমরা কোনো প্রস্ততি নেইনি? অথবা আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম?
আমাদের এই বাস্তবতা মেনে নেয়া উচিত যে, বিপদ বুঝে এক্যবদ্ধভাবে মুকাবেলার পরিবর্তে একা একা নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ভীরু-অভ্যাস আমরা তৈরি করেছি। প্রত্যেকেই জানে হকপন্থীদের সাথে কী করা হবে। কিন্তু আমরা নিজেদের অলসতা, কাপুরুষতা এবং বিলাসিতাকে ব্যাখ্যার লেবেল লাগিয়ে স্বপ্ন ও খেয়ালের জগতে মগ্ন থাকতে চাই। পদ ও অর্থের লোভকে হেকমত ও কৌশল আখ্যা দিয়ে দীনি লেবাসের অন্তরালে দুনিয়া কুক্ষিগত করতে চাই। দীনের খেদমতের বাহানায় যুগচাহিদাকে পাশ কাটিয়ে আরও কণ্টা দিন দুনিয়া ভোগ করে যেতে চাই।
অথচ বাস্তবতা হলো, দীন ও যুগচাহিদা কারও জন্য অপেক্ষা করেনি, করবে না। কেউ না কেউ এগিয়ে আসবেই । আর আমাদের মতো আখেরাতবিমুখ উদাসীনরা বঞ্চিত থাকব উম্মাহর বিজয়ের সাক্ষ্য হওয়া থেকে। যুগে যুগে লাঞ্ছিত হতে থাকবে আর বেঘোরে জীন্ম দেবে কাফের-মুশরিকদের হাতে ।
মোটকথা, ফেতনা এবং ইমাম মাহুদির আলোচনার গুরুত দেয়া হোক অথবা না হোক, এ ক্ষেত্রে রাসুল সাল্লাল্পহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ হলো, তিনি এ বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন । নিজের প্রিয় সাহাবায়ে কেরাম রাষি.কে বারংবার স্মরণ করিয়েছেন। সাহাবায়ে কেরাম রাযি.-এর পর তাবেয়ি, তাবয়ে তাবেয়ি, মুফাসসিরিন, মুহাদ্দিসিন, ফুকাহা এবং প্রত্যেক যুগের ওলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে লেখালেখি করে গেছেন। নিজ নিজ সময়ের চাহিদার অনুযায়ী ঘটনার তুলনাও দিয়েছেন। ত্রিশোর্ধ সাহাবায়ে কেরাম থেকে ইমাম মাহদি সংক্রান্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। প্রখ্যাত হাদিস গবেষকগণ শক্তিশালী বর্ণনাসূত্রে সেগুলো বর্ণনা করেছেন। আর যেখানে স্বয়ং নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামকে সতর্ক করেছেন, সেখানে আমার সে বিষয়ে উদাসীন হই কী করে?
দেখুন, যখন ইউসুফ আলাইহিস সালাম মিশরের বাদশার দেখা স্বপ্নের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, তোমাদের ওপর সাতটি বছর অত্যন্ত কঠিন ও
দুর্ভক্ষপূর্ণ হবে। সাথে সাথে তিনি ওই সাত বছর দুর্ভিক্ষ থেকে নিরাপদ থাকার পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে আল্লাহর রহমে বাদশাহ ধ্বংসের হাত থেকে তার প্রজাদের বাচাতে পেরেছিলেন।