তৎকালীন সময়ে উসমানীয় সম্রাজ্য ছিল মুসলিমদের প্রাণকেন্দ্র। মুসলিমদের কাছথেকে এর সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। এজন্য আমরা অনেকেই ভুল বুঝি। এই বইটি ভুল ভাঙ্গানোর জন্য যথেষ্ট হতে পরে। সত্য বলতে বইটি অসাধারণ।
book info
- বইঃ উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা
- লেখক : আইনুল হক কাসিমী
- প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী
- বিষয় : ইতিহাস ও ঐতিহ্য, ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য
review
উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা বইটিতে উঠে এসেছে উসমানিয়দের নানা গল্পগুচ্ছ। তাদের অন্দরমহল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনের নানা কাহিনী নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি, এবং এটা খুবই জনপ্রিয় একটি বই হিসেবে পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শুনেছি বইটির দ্বিতীয় খণ্ড তৈরির কাজ চলছে। এ বইটি ইতিহাসের রেফারেন্স বললেও ভুল হবে না। বইটির সফলতা কামনা করছি।
তাতারীদের আক্রমণে মুসলিম বিশ্ব থর থর করে তখন কাঁপছিল।ইসলামের নাম নিশানা পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা প্রায় নিভু নিভু হয়ে জ্বলছিল। কিন্তু ইসলাম তো নিভে যাওয়ার মতো কোনো ধর্ম নয়। ঠিক সেই সময় উসমান বিন আর্তুগ্রুল এর মাধ্যমে তুরস্কে ওসমানী খেলাফত গড়ে উঠতে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত তারা খেলাফত দাবি করেনি। বরং আব্বাসী খেলাফত এর অধীনে তারা আমির হিসেবে তাদের কার্যক্রম চালাতে থাকে।
কিন্তু যখন আব্বাসীয় খেলাফত একদল অকর্মন্য অযোগ্য খলিফার হাতে পড়ে ধ্বংসপ্রায় অবস্থা হয়ে পড়ে , তখন উসমানীয় খেলাফতের মহান সম্রাট সেলিম ওসমানী খেলাফত ঘোষণা করে। উসমানি খেলাফতের শুরুটা খুব সাদামাটাভাবেই হয়েছিল। এক বসতির আমির হতে আস্তে আস্তে একটি খেলাফত ব্যবস্থায় তার রূপ নেয়। কথিত আছে প্রত্যেক জাতির এক একটি বৈশিষ্ট্য থাকে তেমনই তুর্কি জাতির বৈশিষ্ট্য হলো তাদের দুজন কোথাও একত্রিত হলে একটি শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলে। উসমানি খেলাফতের দিকে তাকালে এমনটিই মনে হয়। উপমহাদেশের সাথে উসমানি খেলাফতের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। খিলাফত আন্দোলন কে ঘিরে উপমহাদেশে ব্রিটিশ কালে এক বিরাট আন্দোলনের সূচনা হয়।আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম খেলাফত পুনরুদ্ধারের মহান উদ্দেশ্য নিয়ে তাতে যোগদান করেছিলেন। যদিও তা পূর্ণতা লাভ করেনি বরং গাদ্দা রের কবলে পড়ে খেলাফতের দীপশিখা নিভে যায়।
উসমানী খিলাফতের ইতিহাস আমাদের প্রায় অজানাই ছিল। তবে ইদানিং দিরিলিস আর্তুগ্রুল এর মাধ্যমে ইতিহাস মানুষ অনেকটাই জানছে। আলোচ্য বইটিতে উসমানীয় খেলাফতের ইতিহাস সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। তবে এতটা সংক্ষিপ্ত নয় যে বুঝতে সমস্যা হবে বরং সাধারণের বোঝার উপযোগী করে লেখা হয়েছে। বইটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে গল্পের আকারে ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।ইতিহাস নিয়ে লেখা বই পত্রে ক্ষেত্রে এই ধারা বিরল বলা চলে। ফলে একজন সাধারণ পাঠকের কাছে পড়তে বিরক্ত লাগবে না। আপ তথ্যসূত্রের কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বই । কারণ লেখক তাতে অসংখ্য অগণিত তথ্যসূত্র উল্লেখ করেছেন। তাই বলা যায় এটি একটি সমৃদ্ধ বই। ওসমানী খেলাফত 1924 সালে এসে বিলুপ্ত হয়। তাই এখনো 100 বছর পূর্ণ হয়নি এই খেলাফতের। বইয়ের কথা বলতে গেলে লেখক এর লেখা ছিল খুবই সাবলীল ও সহজ।