ইন্দুবালা ভাতের হোটেল পিডিএফ ডাউনলোড
বই: ইন্দুবালা ভাতের হোটেল pdf (পিডিএফ ডাউনলোড)
লেখক: কল্লোল লাহিড়ি
ধরণ: উপন্যাস
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৫৭
ব্যক্তিগত রেটিং: 5 start, credit: রি মি
“শুধু এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া মানুষদের ভিড় বাড়ে। পাসপোর্ট ছাপ পড়ে। বাক্স প্যাঁটরা নিয়ে ইমিগ্রেশান পার করে মানুষ।এক সময়ে যে দেশটা নিজের দেশ ছিলো সেটারই বেড়া টপকায়। প্রত্যেক বছর বৃষ্টি আসে নিয়ম করে দু দেশেই। তবুও সীমান্তের দাগ মুছে যায় না সেই জলে।ওটা ইন্দুবালার দাদুর স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়।”
“ইন্দুবালা ভাতের হোটেল” গল্পটা খুলনার কলাপোতা গ্রামের, গল্পটা দেশের সীমানা ছেড়ে এসে কলকাতার ছেনু মিত্তির লেনের দোজবরে মাতাল পুরুষের স্ত্রী হয়ে ওঠা ইন্দুবালার,গল্পটা জীবন সংগ্রামের,গল্পটা ভালোবাসা আর মায়ার, গল্পটা গ্রাম বাংলার লোভনীয় বিচিত্র সব রান্নার, সর্বোপরি গল্পটা একজন শিল্পীর।
সত্তোরোর্ধ বিধবা ইন্দুবালা ভাতের হোটেল চালায় আর এই বয়সেও নিজ হাতেই সব রান্না করে।কিন্তু একেকটা রান্নার সাথে যে কতশত স্মৃতি জড়িয়ে।ঠাম্মার কাছে হাতেখড়ি আর শাশুড়ির কাছে এসে আরো পোক্ত হওয়া সেসব রান্না।কুমড়ো ফুলের বড়া, বিউলির ডাল,ছ্যাঁচড়া, আম তেল, মালপোয়া, চিংড়ির হলুদ গালা ঝোল,চন্দ্রপুলি, কচু বাটা লোভনীয় সব পদের রান্নার পেছনে লুকোনো জ্বলজ্বলে সব স্মৃতি উঁকি মারে ক্ষণে ক্ষণে।কোনোটা মনে করিয়ে দেয় শ্বশুরবাড়িতে নিজের সাধ নিজে রান্নার কথা তো,কোনোটা নকশাল আন্দোলনের অলোকের কথা, কোনোটাতে ছোট ভাইকে মনে পড়ে, কোনোটা আবার প্রথম ভালোবাসা মনিরুলকে।ক্ষণে ক্ষণে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজে ট্রেনটাকে, যেই ট্রেনে চড়ে কলাপোতা, কপোতাক্ষ নদ, সন্ধ্যেতে পুকুরপাড়ে জোনাকি দেখার মত নির্মল আনন্দগুলো পেছনে ছেড়ে চলে এসেছিল।এই স্মৃতিকথাতে উঠে এসেছে কিছু রাজনৈতিক প্রতিচ্ছবিও।দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন, নকশাল।দেশভাগের কারণে মানুষের বিচ্ছেদ, অসহায়ত্ব।রান্নার মাঝে বারবার উঠে এসেছে পুরনো ইতিহাস। বর্তমানের ভেতরেই অতীতকে টেনে এনে বারবার স্মৃতিচারণ করা হয়েছে, তবু বুঝতে এতটুকু অসুবিধে হয়নি।বইয়ে রান্নার বর্ণনাগুলো ছিল অসাধারণ।পড়ে পড়ে মনে হচ্ছিল রান্নার সুঘ্রাণ পাচ্ছি।
যখন উপন্যাস টা শুরু করি, ভালো লাগা থেকে মনে অনেক কথার ঝুড়ি জমছিলো। ইন্দুবালার শৈশব, কৈশোর স্মৃতিতে আমি আমার ছোটবেলায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম বারবার। ভীষণ স্মৃতিকাতরতায় বিষন্নতায় আর আনন্দে যেন দুয়ে মিলে মিশে একাকার হচ্ছিলাম। কিন্তু বাধ সাধলো শেষটায় এসে।’কচু বাটা’ পদের পেছনের স্মৃতি পড়ে মনটা কেমন যেন করে ওঠলো।
খুলনার কলাপোতার ইন্দু বা ছেনু মিত্তির লেনের বিধবা ইন্দুবালার আজকের এই ইন্দুবালা হয়ে ওঠার পেছনে যে ইতিহাস, সেই ইতিহাসের একজন সাক্ষী ই বলি বা মূলধন দাতা বলি, উপন্যাসটা পড়তে পড়তে এই লছমী মাছওয়ালীর জন্য কেন যেন মায়া জন্মে গিয়েছিল।বইয়ের শেষটায় এসে মন কেমন বিচলিত বোধ করলো, কেমন বিষন্নতায় ভরে গেল শুধু তার জন্য।
বইটা আসলে একটা মায়া। ঠিক বিভূতিভূষণের “আদর্শ হিন্দু হোটেল” এর মত, পড়া শেষে মনে হল এক টুকরো মায়ার বাঁধনে আটকা পড়লাম।
Indubala vater hotel Pdf link- Link :-1 | Link :-2 | Link :-3| Link :-4| Link :-5 | Link :-6
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল পিডিএফ ডাউনলোড লিংক বের হলে আমরা এখানে যুক্ত করব.