পথের পাঁচালী সারাংশ Pdf Download (+Full Pdf)
- Book: পথের পাঁচালী
- Author: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
- Publisher: শাহবাজপুর প্রকাশনী
- Category: চিরায়ত উপন্যাস
- পথের পাঁচালী উপন্যাসের প্রকাশকাল: 1st Published, 2018
পথের পাঁচালী উপন্যাসের বিষয়বস্তু:
“পথের পাচালী’ ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয়। একটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম, শ্রেষ্ঠ, কালোতীর্ণ এবং পাঠক সমাজে লেখকের জনপ্রিয়তার সৌধ সৃষ্টিকারী উপন্যাস।
বাংলা উপন্যাসের ধারায় দক্ষতার বিচারে অথবা প্রিয়তায়, বঙ্কিমচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথ- শরক্চন্দ্র এবং তারাশক্কর-মানিক-বিভূতিভূষণ প্রায় এক নিঃশ্বাসে উচ্চারিত নাম । এঁদের মধ্যে বিভূতিভূষণ ব্যতিক্রম এবং বলবো সৌভাগ্যবান এ কারণে যে, প্রথম উপন্যাসেই তিনি শ্রেষ্ঠতম অর্জনটুকু অধিকারে নিলেন। অবশ্য, তার লোকপ্রিয়তার পেছনে “পথের পাচালী* সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রায়ন এবং সাফল্য কম কার্যকর ছিল না।
“পথের পাঁচালী সৌভাগ্য, এর প্রকাশের সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের বেশ কয়েকজন কৃতী পুরুষ যুক্ত ছিলেন। প্রকাশ-পূর্বে শনিবারের চিঠির আসরে তা পঠিত হওয়ায় গুণী ও পাঠক মন্তব্যও পাওয়া যেত। সাময়িকপত্র মাসিক বিচিত্রায় ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের আষাঢ় সংখ্যা থেকে “পথের পাচালী* ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হতে থাকে । বিচিত্রার সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বিভৃতিভূষণের দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে জানিয়েছেন যে, এর আগে প্রবাসী পত্রিকা কর্তৃপক্ষ উপন্যাসটি ছাপাতে চায় নি, পাগুলিপি ফেরত দিয়েছে।
প্রবাসীর সহকারী সম্পাদক ও শনিবারেরনচিঠির সম্পাদক সজনীকান্ত দাস এবং সাহিত্যিক গোপাল হালদারের আগ্রহে অব প্রতিষ্ঠিত রঞ্জন প্রকাশালয় থেকে ‘পথের পচালী” গ্র্থাকারে প্রকাশিত হয়। প্রথম প্রকাশকালে উপন্যাসটি চার পর্বে বিভক্ত ছিল; বল্লালী বালাই, আম-আীটির ভেঁপু, উড়ো পায়রা, অক্রুর সংবাদ । দ্বিতীয় প্রকাশকালে ‘পথের পাচালী’ প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তবত্তীকালীন বিশেষ ধারার উপন্যাস।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়া এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশংকা যখন মানুষের মনে উদ্বেলতার সৃষ্টি করেছে, তখন পাশ্চাত্য মতবাদ নিষ্ঠতায় আস্থা স্থাপন করে অনেকে সংকট উত্তরণের চেষ্টা করেন।
রোমাঞ্জকে কেউ কেউ বলেন বয়স্কদের রূপকথা” । বাংলায় প্রকৃত উপন্যাস, যাকে মহাকাব্যের পরিবর্তিত সমাজের শিল্পিত রূপান্তরও বলা যায়- এসেছে এ রোমাঞ্চের পথ অতিক্রম করেই। বিভূতিভূষণ দরিদ্র চরিত্রপ্ুলোর সমাবেশ ঘটিয়ে কোন দুঃখগাথা তৈরি করতে চান নি, অথবা চান নি প্রলেতারিয়েতের শ্রেণি-বিপ্রব ঘটাতে । তাঁর আয়োজন গতানুগতিক মনে হলেও লক্ষ্য ভিন্ন। তিনি যুগের অস্থিরতায় না জড়িয়ে আবহমানকালের চিরস্থায়ী, চিরসাক্ষী এবং একটি পরিপূর্ণ সত্তা নিসর্গ-প্রকৃতিকে অবলম্বন করলেন উপন্যাসে । বিভূতিভূষণের উপন্যাসে প্রকৃতি এসেছে একটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে আর মানুষগুলো রূপায়িত হয়েছে সুখ-দুঃখের পরিপূর্ণতা নিয়ে। পথের পাঁচালী পুরো পথই নিসর্গ-প্রকৃতি পরিবেষ্টিত এবং মানব-সংশ্লিষ্ট। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার অধিকাংশ উপন্যাসেই এই প্রকৃতিকে অবলম্বন করেছেন দৃঢ়ভাবে, নির্মাণ করেছেন একটি পুরো সন্তাকে। ‘পথের পাঁচালী” তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ।
পথের পাঁচালী চরিত্র বিশ্লেষণঃ
উপন্যাসটির প্রধান তিনটি অংশের প্রথম অংশ “বল্লালী বলাই ।” এ অংশের অনুচিন্তনের কেন্দ্রে হলেন ইন্দির ঠাকরুন। ইন্দির ঠাকরুন একটি বহমানতার স্বাক্ষী, কালের বহমানতা। সেকেলে ইন্দির ঠাকরুনের মুখে উপন্যাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রকৃতির শাশ্বত প্রবহমানতা- ঠাকুরঝির পুকুর, নিশ্চিন্পুরের ইতিহাস ইত্যাদি। ইন্দির ঠাকরুনের নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হিসেবেও এসেছে প্রকৃতি।
উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশের নামকরণেই প্রকৃতির অনুষঙ্গ “আম-আঁটির ভেপু।’ এ অংশে প্রকৃতি সবচেয়ে গভীরভাবে, বলা যায় সশরীরে হাজির হয়ে অপুকে কোলে তুলে নিয়েছে, তাকে বিকশিত করেছে ধীরে ধীরে । অপু আর প্রকৃতি হরিহর আত্মা । হয়তো সেজন্যই নিশ্চিন্দিপুর থেকে বিদায়ের সময় প্রকৃতি সমত্ত পথ তাকে চোখে চোখে রেখেছে। ট্রেনে বসেও অপু বাইরে না তাকিয়ে পারে নি। শুধু অপু নয় এ উপন্যাসে প্রতিটি চরিত্রকে প্রকৃতি ঘিরে রেখেছে গভীর মমতায়। হরিহরের অবর্তমানে প্রকৃতি এই দারিদ্র পরিবারটির আহার সংস্থান করেছে। অপুর চরিত্রে প্রকৃতি যে প্রভাব ফেলেছিল দুর্গা চরিত্রে সে তুলনায় তার খুব একটা কম প্রভাব পড়ে নি- প্রকৃতির কোলে দুর্গাও মিশেছিল। তাই নিশ্চিন্দিপুর ছেড়ে চলে-বারার সময় অপুর মনে হয়েছে: “দিদি মারা গেলেও দু’জনের খেলা করার পথে ঘাটেংবাঁশ.বনে আমতলায় সে দিদিকে যেন এতদিন কাছে কাছে পাইয়াছে।’
পথের পাঁচালী পুরো উপন্যাস শুধু চরিত্র বিন্যাস ও পরিবেশ পরিকল্পনাতেই নয়, উপন্যাসের ভাষা, বাক্য-বিন্যাস, অলঙ্কার, চিত্রধর্মিতা, চলমানতা মোটকথা গঠনশৈলীতেও প্রকৃতি নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে। বিভূতিভূষণ তার উপন্যাসে ধীর লয়ে বর্ণনাতবক ভঙ্গিতে সব কিছু বর্ণনা করেছেন, কোন কিছুই তার দৃষ্টি এড়ায় নি। বাশের পাতার শব্দ, বেগুন বিচি খেলা, গন্ধভেদলি পাতার গন্ধ- এসবেরই শব্দ-বর্ণ-গন্ধ তার অনুভবে এসছে। উপন্যাসটিতে ভাষার উপর যেমন কোন রুক্ষ কারুকাজ নেই, তেমনি নেই অলঙ্কারের আতিশয্য। জনপ্রিয়তার বিচারে উপন্যাসটি আজও ঈর্ষণীয় স্থানে, তবু কালপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে এটি কখনও-কোথাও আগু-মূল্যায়নের গঞ্জিতে আবদ্ধ এবং সেই সুত্রে “গতানুগতিক ধারার’ বলেও কথিত। নামকরণ, গঠনবিন্যাস, শব্দ-বর্ণ, চরিত্র রূপায়ন, প্রকৃতি, বিষয় বৈশিষ্টের বিচারে বাংলা সাহিত্যে ঈর্ষণীয় জনপ্রিয় নাম; বিভৃতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যার প্রায় সবটুকুই “পথের পাচালী’র অর্জন।
পথের পাঁচালী উপন্যাসের চরিত্র (মুভিতে)
- কানু বন্দ্যোপাধ্যায় – হরিহর রায়, অপু ও দুর্গার বাবা
- করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় – সর্বজয়া রায়, অপু ও দুর্গার মা
- সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় – অপূর্ব রায়, শিশু অপু
- রুঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায় – শিশু দুর্গা
- পিনাকী সেনগুপ্ত – অপূর্ব রায়, কিশোর অপু
- উমা দাশগুপ্ত – কিশোরী দুর্গা
- চুনীবালা দেবী – ইন্দির ঠাকরুন
- হরেন বন্দ্যোপাধ্যায় – মিঠাইওয়ালা
- তুলসী চক্রবর্তী – প্রসন্ন, শিক্ষক
পথের পাঁচালী pdf free download
প্রশ্নঃ পথের পাঁচালী উপন্যাসে দুর্গার মৃত্যুর কারণ কি?