Others PDF Books

কাশ্মীর ও আজাদির লড়াই pdf – kasshir itihash o rajniti pdf

বইয়ের ধরণ: ভ্রমণ কাহিনী, রাজনৈতিক এনথোগ্রাফি বইটিতে কাশ্মীরের যেসব বিষয়ের অসাধারণ বিবরণ আছে:

  • *কাশ্মীরের ভূগোল
  • *জনমিতি
  • *রাজনীতি
  • *অর্থনীতি
  • *সংস্কৃতি
  • *পর্যটন ও
  • *বিরোধ ও তার নিষ্পত্তির পথ পরিক্রমা।
সুতরাং যারা কাশ্মীর সম্পর্কে জানতে চাই তাদের জন্য বইটি খুবই সহায়ক।

বইয়ের সংক্ষিপ্ত তথ্য

বইঃ কাশ্মীর ইতিহাস ও রাজনীতি
লেখকঃ
প্রকাশনীঃ
type pdf
Edition 1st Published, 2017
Number of Pages 204
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

“কাশ্মীর ইতিহাস ও রাজনীতি” বইয়ের রিভিউ

ভূস্বর্গ নামে পরিচিত এই উপত্যকা। অথচ সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই জ্বলছে। এই অঞ্চলের এক রক্তাক্ত ক্ষত কাশ্মীর। ভারত আর পাকিস্তান এই কাশ্মীরের দুই অংশ দখল করে রেখেছে। অথচ কাশ্মীরের বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্নের চাওয়া হচ্ছে স্বাধীনতা। কাশ্মীর উপত্যকার ভারত শাসিত অংশটি ‘জম্মু-কাশ্মীর’ নামে আর পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশটি ‘আজাদ কাশ্মীর’ নামে পরিচিত। জাতিসংঘ এই অঞ্চলকে অমীমাংসিত বা বিরোধীয় অঞ্চল ঘোষণা করে রেখেছে।

ভারত ও পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের দুই খণ্ডই এতকাল নামেমাত্র হলেও স্বায়ত্বশাসিত এলাকা ছিল। ভারতের সংবিধানে অন্তত সেই কথিত স্বায়ত্বশাসন, বিশেষ অধিকার ও মর্যাদার স্বীকৃতি ছিল। সে অনুযায়ী পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ ছাড়া আর সকল বিষয়ে কাশ্মীরের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবার সাংবিধানিক অধিকার ছিল। কাশ্মীরের নিজস্ব পতাকা ও পৃথক সংবিধান প্রনয়নের অধিকার ছিল। যদিও বাস্তবে এসব অধিকার খুব একটা কার্যকর করতে দেয়া হতো না। জমির অধিকার ও চাকরিতে অগ্রাধিকার সহ আরো বিশেষ কিছু অধিকার ও মর্যাদা কাগজে কলমে হলেও ছিল মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের নাগরিকদের। এর সব কিছুই কেড়ে নিল ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। ভারত শাসিত কাশ্মীরকে করা হলো আরো দু’টুকরো।

সবকিছু করা হলো সেখানে লক্ষাধিক বাড়তি সেনা মোতায়েন করে। কার্ফ্যুর মতো অবস্থা সেখানে। কাশ্মীরের রাজনীতিকরা সব আটক। সম্ভাব্য প্রতিবাদ রুখতে বেছে বেছে হত্যা, নির্যাতন, গ্রেফতারের অভিযান চলছে। ফোন, ইন্টারনেট বন্ধ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ।

এর আগেই বিজেপির প্রয়োগ করা কৌশলের মুখে কাশ্মীরের নির্বাচিত সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে সেই সরকারকে বরখাস্ত করে গভর্ণরের শাসন চালু করা হয়। এতে কাশ্মীরের সব ক্ষমতা চলে যায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। তারপর নেয়া হলো কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন কেড়ে নেয়ার চরম বিতর্কিত এই হঠকারি পদক্ষেপ। কাশ্মীরের ওপর পুরোপুরি চাপানো হলো অস্ত্রের শাসন। ভারতের বিরোধীদলগুলো এবং মানবতাবাদী নাগরিকেরাও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তারাও বলছেন, এই অদূরদর্শী হঠকারিতার ফল খুব খারাপ হবে। ভারতের বুকে একটি ফিলিস্তিন তৈরির পথ খুললো বলেও তারা মত দিয়েছেন।
কিন্তু যুক্তির ভাষা ও আগামীর সতর্ক সংকেত শোনার মতন মানসিকতা ও দূরদর্শিতা এখন বিজেপির উগ্রবাদী সরকারের নেই।
এমন করে কতদিন একটা জনগোষ্ঠীকে অবরুদ্ধ রেখে শাসন করা যাবে?
কাশ্মীরে এই নতুন রক্তক্ষরণ উপমহাদেশের সার্বিক পরিস্থিতিকেই বা কোন পথে ঠেলে দেবে?

লেখক যা বলেছেন

“কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্সের শিক্ষার্থী আমি । মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক

পরিবেশে ঘুরি ফিরি । আপেল-আঙ্গুর-কমলা লেবু খাই শাকসবজির মতো প্রতিদিন! পথে- ঘাটে ১০-২০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায় ওগুলো । কেতাবে আছে বেহেশত এতই সুন্দর যে, “কোনো চোখ কখনও দেখেনি । কোনো কান কখনও শোনেনি । কোনো মন কখনও চিন্তাও করেনি । সাধারণ জ্ঞানের বইয়ে পড়েছি, কাশ্নীর হলো পৃথিবীর বেহেশত। প্রকৃত বেহেশতের রূপ ভাবনাতীত! সেখানেই আমার বসবাস । কতই না নয়নাভিরাম, বর্ণনাতীত!

বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকি। ক্লাস-পড়াশোনার পাশাপাশি ঘুরে বেড়াই গ্রাম-শহরের অলিগলি । দিন দিন বাড়ে বন্ধুবান্ধবের সংখ্যা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যাই, থাকি-খাই; জানতে চাই কেমন তাদের জীবন? ভূঁ-্বর্গের মানুষ বলে কথা! ক্রমে আমি হয়ে উঠি
বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য লোকের কাছে পরিচিত, প্রিয় । কাশ্মীরি রূপসী ললনারা নেকাবের আড়াল থেকে আমাকে দেখে, তাতে আমার মধ্যে শিহরণ বয় । আমার নাম জানে সবাই । সভা-সেমিনারে আমি কথা বলি । তাই সবাই আমাকে দেখলে চেনে, সম্মান করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে ।

হঠাৎ ছেদ পড়ে সেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় । এক রাতে সশস্ত্র ‘জঙ্গিরা আমাকে হোস্টেল থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। দূরে অজ্ঞাত স্থানে আমাকে চোখ বেঁধে আটকে রাখে । জানতে চায়, কে তুই? আমি বলি আমার নাম । বাবার নাম । জাতীয়তা । কেন কাশ্মীরে এসেছি, কবে এসেছি, কবে ফিরবো- সবকিছুই বলি । ওরা জানতে চায়, আমি মুসলমান কিনা ৷ আমি বলি হ্যা। ওদের সন্দেহ হয় । আমার কাপড় খোলা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়। আমার ধর্মীয় জ্ঞানের পরীক্ষা নেয়া হয় । তাতে আমি উত্তীর্ণ হই। এরপর আমাকে আটকে
রাখা হয় তিন দিন । রেখে দেওয়া হয় চোখ বেঁধে । কিছু খাবারও দেওয়া হয় । আমি অবশ্য সাহস হারাইনি । নিশ্চিন্তে ছিলাম এই ভেবে যে, যা হবার হবে । আল্লাহ ভরসা! তিন দিন পর সশস্ত্র এক যুবক এসে বলে, তোকে মেরে ফেলে আমাদের কোনো লাভ নেই । তোকে
ভারতীয় চর সন্দেহে আমরা ধরেছিলাম । তুই বেঁচে গেছিস। কিন্ত, এখন তোকে ছেড়ে দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন। ভারতীয় বাহিনী তোকে ধরবে । আমাদের সম্পর্কে জানতে চাইবে | এটা আমাদের জন্য অসুবিধা | যাই হোক, তোকে মারব না, ছেড়ে দেবো । আমাকে চোখ বেঁধে কিছু দূর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো । আমি ফিরে এলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ।

ফিরে এসে জানলাম, আমাকে নিয়ে তোলপাড় । স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খবরের কাগজে শিরোনাম হয়েছে, কাশ্মীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল থেকে বিদেশি (বাংলাদেশি) ছাত্র নিখোজ । ভারতীয় সেনাবাহিনী, জেত্যান্ডকে পুলিশ, গণমাধ্যম তন্ন তন্ন করে সন্ধান করছে আমার | বাংলাদেশেও তোলপাড় । বাংলাদেশি হাইকমিশন উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত সরকারের কাছে। ফিরে আসার পর সবাই আমার কাছে জানতে চায় কী খবর? কোথায় ছিলাম । আমি তো হতবাক! গণমাধ্যমে ফলোআপ এলো । আমার সাক্ষাৎকার নিতে হুমড়ি খাচ্ছেন সংবাদকর্মীরা । বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সামলে উঠতে পারছেন না । আমি মিডিয়ার সামনে যাচ্ছি না। এভাবে কাটলো এক দিন। পরের দিন আমাকে যেতে হলো পুলিশের সামনে । তারা জানতে চাইল সবকিছু । আমি জানাব কিনা তা নিয়ে দ্বিধাস্থিত । যারা আমাকে তুলে নিয়ে যেতে পারল তাদের তো ক্ষমতা কম নয়! তারা তো আমাকে মুকিও দিলো ।

তাহলে তাদের খবর পুলিশকে দেওয়া উচিত কিনা? পুলিশ তো আমাকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি । উদ্ধারও করতে পারেনি। এখন পুলিশকে তথ্য দেওয়ার পর যদি তারা আবার আমাকে নিয়ে যায় । পুলিশ কি আমাকে বাচাতে পারবে? এসব প্রশ্ন আমার মনে | অবশেষে ওসব প্রশ্ন লুকিয়ে যথাসম্ভব জবাব দিলাম | আমি তো বিদেশি । কারও পক্ষেও নই, বিপক্ষে নই | তেমনভাবেই বললাম | ফিরে এলাম । কিন্তু, তারপর থেকে মনের মধ্যে শুরু হলো খচখচানি | মনে হলো, আমার কোনো নিরাপত্তী নেই । যেখানে যাই, মানুষ আমাকে দেখে । ওখানে আমার শিক্ষাকাল ছিল দুই বছর । তখনও বাকি প্রায় ছয় মাস। ওই ছয় মাস এভাবেই কাটল | কোনো রকমে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরলাম ।

উপরের সব কথা কাল্পনিক । এমন কল্পনা_করেছিলাম কাশ্মীরে পৌছার আগে । এই কল্পনার পেছনে কাজ করেছে কাশ্মীর সম্পর্কে আমার পূর্বধারণা । আর সেই ধারণা আমার মধ্যে নির্মিত হয়েছিল বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও এঁতিহাসিক অবস্থার মাধ্যমে । আমার বিশ্বীস, সিংহভাগ বাংলাদেশি মানুষের মনে কাশ্মীর এভাবেই আঁকা আছে । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী কাশ্নীর যাওয়ার আগে আমাকে বলেছিলেন, “সাবধানে থেকো । তুমি তো সাংবাদিক । সবকিছুতে তোমার একটা অনুসন্ধানী মন থা না ঈকবে এটাই স্বাভাবিক । সেই অনুসন্ধানী মনটা একটু দমিয়ে রেখো । বিপদ

আসতে তো আর সময় লাগে না।’ সাংবাদিক লায়েকুজ্জামানকে যখন কাশ্মীরে যাওয়ার খবর জানালাম, তিনি বললেন, “দেখো তুমি আবার জঙ্গি-টঙ্গি হয়ে যেও [।’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আমার ফেসবুক

বন্ধু। একবার আমার এক স্ট্যাটাসে তিনি মন্তব্য করলেন, “এত জায়গা থাকতে কাশ্মীরে গিয়েছেন; জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কিনা তাইবা কে জানে?’ এই মন্তব্যগুলো উল্লেখ করে বোঝাতে চেয়েছি, কাশ্নীরকে আমরা কিভাবে দেখি । এ গ্রন্থখানি কাশ্ীরের এমন অস্বাভাবিক ও অপূর্ণ কাল্পনিক চিত্রের বিপরীতে একটি পরিপূর্ণ ও প্রত্যক্ষদর্শী চিত্র হাজির করবে বলে আমার বিশ্বাস ।

কাশ্মীর বই পিডিএফ- ডাউনলোড লিংক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!