অভিশপ্ত ইহুদী জাতির বেঈমানীর ইতিহাস PDF – ovishopto yuhudi jatir beimanir ithihash pdf
বইঃ | অভিশপ্ত ইহুদী জাতির বেঈমানীর ইতিহাস |
লেখকঃ | এ. বি. এম. এ খালেক মজুমদার |
প্রকাশনীঃ | আধুনিক বই পাবলিকেশন |
Edition | 1st Published, 2003 |
Number of Pages | 135 |
type | |
Language | বাংলা |
ইহুদী জাতি আল্লাহ তাআলার এক অভিশপ্ত জাতি। এ জাতির অভিশপ্ততার কথা বলতে গিয়ে সূরা ফাতিহায় আল্লাহ তার বান্দাদেরকে শিখিয়েছেন তাঁর কাছে হিদায়াত চাইবার পদ্ধতি । তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন, তোমরা বলবে, “হে আন্মাহ ! আমাদেরকে তোমার সত্য সহজ-সরল পথে চলার হিদায়াত দান করো। ওইসব লোকের পথ, যে পথের পথিকদের উপর তুমি তোমার নিয়ামাত দান করেছো । ওইসব লোকদের পথে নয়, যাদের উপর তুমি অভিশাপ বর্ষণ করেছো ও যারা পথভ্রষ্ট ।”
এ অভিশাপ প্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট জাতিই হলো ইহুদী জাতি। এদের উৎপত্তির ইতিহাস এ বইতে পাওয়া যাবে । এ জাতির কাছে আল্লাহ তাঁর অনেক নবী- রাসূল পাঠিয়েছেন। যাদের উপর আল্লাহ তার অনেক নিয়ামাত বর্ষণ করেছেন। কিন্তু এ অভিশপ্ত ইহুদী জাতি আল্লাহর কোনো নিয়ামাতের প্রতি শোকর আদায় করেনি । বরং আল্লাহর নিয়ামাতকে অস্বীকার করেছে। এ জাতির কাছে প্রেরিত শত শত নবীকে অমান্য করেছে । তাদেরকে নানা পথে নানাভাবে অকথ্য নির্যাতন করেছে । অনেক নৰীকে তারা হত্যা পর্যন্ত করেছে। এর অনেক
বর্ণনা কালামে পাকেও এসেছে।
আল্লাহ তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী এ দুনিয়া বানিয়েছেন। সৃষ্টি করেছেন শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে । তীর পরিকল্পনা অনুযায়ী মানুষকে চালাবার জন্য পাঠিয়েছেন আসমানী কিতাব ও নবী-রাসূল । এক নবীর কাল শেষ হবার পর আর একজন নবী আল্লাহর তরফ থেকে মনোনীত হলে আগের নরীর শরীয়াত ও তার উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাবের হুকুম পালন শেষ হয়ে যায়। নতুন নবীর উপর
অর্পিত শরীয়াত ও তার উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাবকে মেনে চলতে হয়। পরবর্তী উন্মতগণ আগের সকল নবী ও কিতাবকে সত্য ছিলো বলে বিশ্বাস করবে। কিন্তু বনী ইসরাঈল তথা এ ইহুদী জাতি আল্লাহর এ হুকুম মানেনি। তারা নবী মূসা আলাইহিস সালামের উম্মত ছিলো। তীর কথা তারা শুনেনি। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের নবুওয়াতকে তারা মানেনি।
সর্বশেষ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও তারা মানেনি। অথচ তাদের কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের আগাম বাণী তারা পড়েছে ও জানে । ইয়াহুদী জাতির বড়ো বড়ো আলেমরাও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের কথা জানতো ও বিশ্বাস করতো । কিন্তু এরপরও তারা ইসলাম গ্রহণ করেনি । মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হিসাবে মানেনি। বরং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুসলমানদের সাথে শত্রুতা করেছে। সেই শক্রতার জের আজ পর্যন্ত চলে আসছে। ইহুদী জাতির ইতিহাস থেকে জানা যায় তারা দুনিয়ার কোথাও স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেনি । হযরত মূসা আলাইহিস সালামের কাল থেকেই তারা তাদের বেঈমানীর এ অভিশপ্ত বোঝা বহন করে এসেছে। অবশেষে তারা মদীনা হতেও বহিষ্কার হয়ে বিশ্বের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষার ঝুলি কীধে ঝুলিয়ে ঘুরেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও তারা প্রচণ্ড মার খেয়েছে হিটলারের হাতে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা ও বৃটিশদের মদদের জের ধরেই ফিলিস্তিনে ইহুদী বসতি গড়ে উঠে। আস্তে আস্তে ফিলিস্তিনের একটি অংশকে তারা একটি দেশ হিসেবেই গঠন করে । ইহুদীদের নিজস্ব আবাস ভূমি গঠনের জন্য একমাত্র এলাকা ফিলিস্তিন ছিলো না। প্রথমে আর্জেন্টিনা, কেনিয়া এমন কি ভারতও বিবেচনায় ছিলো ।
আর্জেন্টিনা ও কেনিয়ায় ইহুদীদের বসতির জন্য ভূমিও বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিলো । কেনিয়াতেই উয়াসিন জিশুয়া মালভূমীতে ইহুদীদের জন্য ৫ হাজার বর্গমাইল/প্রলাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিলো ১৯১৬ সালে । তার পরের বছরই ১৯১৭ সালে রেলকোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইহুদী বসতিস্থাপনের কথা বলা হয়। ১৯০০ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদী জনসংখ্যা ছিলো মাত্র ৫০ হাজার । আর ১৯৪৮ সালে বৃটিশ ম্যাণডেট প্রত্যাহারের সময় সেখানে ইহুদী সংখ্যা গিয়ে পৌছে ৭ লাখ ৬০ হাজার | তাদের এ সংখ্যা বৃদ্ধিতে বৃটেনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছিলো । পরবতীকালে আমেরিকা ইসরাঈলকে সব রকমের সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে।
আযাংলো আমেরিকান প্রত্যক্ষ মদদেই ইসরাঈল আজ যে কোনো ধরনের বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতা চালাতে ক্রটি করছে না । এসব বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার হালের কিছু ফটোচিত্রও বইটিতে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ইহুদী চক্রান্ত রুখার ও দাজ্জালী মূর্তি প্রতিহত করার জন্য মুসলিম বিশ্বের এক হতে হবে-_আর হবেও। পরিশেষে বিজয় মুসলিম উন্মাহর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ ভবিষ্যদ্বাণী আছে। আর আছে বলেই এ ভবিষ্যদ্বাণীকে ব্যর্থ ও বিফল করে দেবার জন্য ইহুদী জাতি তাদের দোসর খৃষ্টান জাতি হালে ব্রান্মণ্যবাদী হিন্দু সম্্রাজ্যবাদী শক্তি এদের সঙ্গে যোগ হয়েছে।
মুসলমানদের চিরশক্র এবং প্রধান শক্র হলো বর্তমান বিশ্বে একমাত্র অভিশপ্ত ইহুদী জাতি । তারা মুসলিম জাতিকে দমিয়ে রাখার, পিছিয়ে দেবার এমন কি ধ্বংস করে দেবার জন্যে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করছে না। যুগ যুগ শুধু নয়, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরেই তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে হীন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। নেপথ্যে এদেরকে শক্তি ও সহযোগিতা যুগিয়ে যাচ্ছে মুসলমানদের অপরাপর শক্র খৃষ্টান ও সমাজতন্ত্রবাদী বাম ও রামপন্থীরা। এই সেদিন ১৯৯৭ সনের জুন মাসের ২৮ তারিখে বিশ্ববাসী আবারও প্রত্যক্ষ
করলো ইহুদী জাতির আর্তজাতিক চক্রান্তে সৃস্ট ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাঈলের আরেকটি জঘন্য ও মানবতা বিরোধী কাজ। একবিংশ শতাব্দীর উধালগ্নে অভিশপ্ত ইহুদীরা মুসলমাদের হৃদয়ে হাতুড়ীর আঘাত হানলো বিশ্ব মানবতার মুক্তি রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মহা গ্রন্থ আল কুরআনের সাথে চর্ম অবমাননা ও বে আদবী কারার ধৃষ্টতা প্র্শনের মাধ্যমে ।
৩রা জুলাই একটি দৈনিকে মুসলিম রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের একটি আলোকচিত্র ছাপা হয়েছে। তার প্রসারিত ডান হাতে একটি পোস্টার ক্যাপশনে লেখা ছিলো “ফিলিস্তিনে প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত গত মঙ্গল বার তিউনিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদেরকে একটি পোস্টার দেখান। পোস্টারে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি চরম অবমাননা করা হয়।
এলাকায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর একটি বিদ্বেষপূর্ণ ও চরম অবমাননাকর পোস্টার এঁকে আরবদের ঘরবাড়ী ও দোকান পাটে সেঁটে দিয়ে সমস্ত ফিলিস্তিন সহ সারা আরব ভূখণ্ড তথা গোট বিশ্বের মুসলমানদের মনে ঘৃণার আগুন জ্বালিয়ে দেয় । এটা বিশ্ব মুসলিমের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ইহুদী চক্রান্তের এখন সর্বশেষ পরীক্ষা। তাতিয়ানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইসরাঈলী পুলিশ জানালেও এটা প্রকৃতপক্ষে মুসলমানদের প্রতিহিংসা থেকে তাকে বাচাবার আই-ওয়াশ মাত্র।
বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের মুসলমান ও বিবেকবান মানুষ ইহুদী কুচক্রি মহলের এ ঘৃণ্য ও জঘন্য কাজের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ইসলাম ও ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য তৎপরতা বন্ধের জন্য ইসরাঈলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ও. আই. সি. সহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদেও সর্বসম্মতভাবে এ ব্যাপারে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ হয়েছে। ২৮শে জুন, ১৯৯৭, রাতে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের স্মৃতি বিজরিত ইসরাঈল দখলকৃত ফিলিস্তিনের ‘আল-খলিল’ শহরে এ জঘন্য কাজটি সংঘটিত হয়েছে। লোকজন সকালে ঘুম থেকে উঠেই এ জঘন্য ধরনের হাজার হাজার পোস্টার দেখতে পায়। মুসলমানরা. ইহুদীদের এ কুকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
শহরের দোকান পাটের দরজায় ও দেয়ালে লাগানো এক ধরনের পোস্টারে একটি শুকর ছানার ছবি রয়েছে। সেই ছবির গায়ে “মুহাম্মাদ’ শব্দটি লেখা রয়েছে। শুকরের মাথায় বাঁধা রয়েছে_আরবদের মস্তক আবরণী রুমাল। অন্য পোস্টারটিতে পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের উপর দীড়ানো আরেক শৃকরের ছবি। গোটা বিশ্ব মুসলিমের বিক্ষোভের তোড়ে ইসরাঈলী সরকার জানিয়েছে, কোনো ইহুদী মহিলা এ কাজটি করেছে। কিন্তু শুধু একজন মহিলার পক্ষে এক রাতে হাজার হাজার পোস্টার লাগানো অসম্ভব তা বুঝতে একটুও কষ্ট হবার কথা নয়।
আসলে এ নস্টামী ও বেঈমানীর মূল হোতা হচ্ছে ইহুদী জাতির এ সময়কার কুচক্রি প্রধান মন্ত্রী ‘নেতানিয়াহু’ ও তার বেঈমান সরকার। নেতানিয়াহুর সরকারের কিছু মন্ত্রী, ইহুদী সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ হীন ও জঘন্য কর্মকাণ্ডের মূল নীলনক্শা প্রণয়ন করেছে। “আল খলিল” শহরে বসবাসকারী ইহুদী গোষ্ঠী খুবই হিংস্র ও বন্য, এরা সবাই পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের আর এক শক্র দেশ আমেরিকা হতে এখানে এসে বসতিস্থাপন করেছে। সবসময় তারা সঙ্জিত থাকে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। মুসলমানদের চিরশক্র এ ইহুদী সন্ত্রাসীদের হিংস্র আক্রমণে বিশ হাজার ফিলিস্তিন মুসলমানদের জীবনযাপন দুসাধ্য হয়ে উঠেছে এ “আল খলিল” শহরে । ফিলিস্তিনী মুসলমানদের মনে জ্বালা ও বিক্ষোভ দমনে ইহুদী তথা ইসরাঈলী সৈন্যরা গুলী ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে তাদের সমাগমে | এতে একজন মুসলমান নিহত হয়েছে। শত শত মুসলমান হয়েছে আহত।