পদ্মজা উপন্যাস pdf ইলমা বেহরোজ
পদ্মজা উপন্যাস লেখক ইলমা বেহরোজ, নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস!
সরাসরি পিডিএফ ডাউনলোড লিংক-
পদ্মজা উপন্যাস রিভিউ সারসংক্ষেপ:
পদ্মজা উপন্যাসের কিছু লাইন অদ্ভুত ভাবে মুগ্ধ করে-
*তোমাকে দেখার তৃষ্ণা আমার কখনোই মিটবে না!
*তুমি চাও বা না চাও, পরপারে দেখা হলে আমি আবারও তোমার পিছু নিবো!
*আমি নিষ্ঠুর, তুমি মায়াবতী।
আমি ধ্বংস, তুমি সৃষ্টি।
আমি পাপ, তুমি পবিত্র।
এতো অমিলে কেন হলো মিলন? কেন কালো অন্তরে ছড়িয়েছিলে ফুলের সুবাস? আমাকে ধ্বংস করার কি অন্য কোনো অস্ত্র ছিলনা?
*তোমার কান্না, তোমার আর্তনাদ আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরনকে কাঁপিয়ে তোলে। মনে হয় মাথার ভিতর পোকারা কিলবিল করছে!
*আমার আঁধার জীবনের জোনাকি, সৃষ্টিকর্তাকে বলো আমাকে যেন আরেকটা সুযোগ দেয়া হয়। এই পৃথিবীতে আবার যেন পাঠানো হয়। পৃথিবীর বুকে তো জায়গা, সম্পদের অভাব নেই। আরেকটা জীবন কি পেতে পারি না? তখন আমি কঠিন পরীক্ষা দেবো।তোমাকে পেতে আগুনের উপর দিয়ে হাঁটবো, ভাঙ্গা কাঁচের ধারে পা ছিন্নভিন্ন করে হলেও তোমাকে জিতে নেবো!
~ আমার পাপের রাজত্বে তোমারআগমন ছিল ভূমিকম্পের মত..!যখন দেখি তুমি দাঁড়িয়ে আছো আমারহৃদপিন্ড থমকে যায় পদ্মবতী..!
*গত চারদিনের যন্ত্রনার একাংশ যদি তুমি অনুভব করতে , আমাকে খুন না করে বাঁচিয়ে রাখতে। আমার শাস্তি হতো আমার বেঁচে থাকা!
ফেসবুকের নব্য পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি-
হে বাঙ্গালার সোনামানিক-সোনামণিরা তোমরা যারা ফেসবুকে ঘুরঘুর করতে এতদিন ধরে। বিভিন্ন পেজে- ‘মামাতো বউ’, খালাতো বউ’, ‘বাসর রাত’, পিরিয়ডের দিনগুলোতে, ‘ঝগড়ুটে বউ’, পিচ্চি বর , ইত্যাদি শিরোনামের দু চার পর্বের রোমান্টিক গল্প পড়ে মুগ্ধ হয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পরতে বিছানায়! কখনো বা আবেগে উথলে উঠতে, কখনো ভেসে যেতে স্বপ্নে। তারপর একদিন বন্ধু/বান্ধবী নতুবা ফেসবুকের কল্যাণে পদ্মজার সাথে তোমার সাক্ষাৎ হলো। ততদিনে তোমার মতোই সদ্য গজানো ছেলেমেয়েরা পদ্মজার ঢেড়া পেটাচ্ছে ফেসবুকের অলিগলিতে। তুমি পদ্মজা তুমুল আগ্রহে গজগজ মচমচ করে খেতে শুরু করলে। তোমার মনে হলো পদ্মজা অমৃত; এটাই শ্রেষ্ঠ রচনা। ফেসবুকে এতদিন যত গল্প পড়েছো তার চেয়ে এটাই সেরা। পড়া শেষ করে তুমি কেঁন্দে দিলে। আবেগে বলে ফেললে রবীন্দ্রনাথের রচনা এর কাছে নস্যি।
দুদিন গ্রুপে ঘুরে তিনচার টা বইও সংগ্রহ করলে, তার সাথে পদ্মজার ব্ল্যাক এডিশনটাও কিনে নিলে।
এখন তুমি পুরোদস্তুর একজন পাঠক, নিজেকে মনে মনে বইপোঁকা মনে করো। সারাদিন বইয়ের গ্রুপে গ্রুপে ছুটে বেড়াও। কখনো কখনো পদ্মজার দু একটা চুম্বক লাইন সংলাপ পোস্ট করো। আজ তোমার মনে হচ্ছে পদ্মজা ই তোমার পড়া সেরা উপন্যাস। কিন্তু যদি বইপড়ার নেশাটাকে সক্রিয় রাখো মেধা ও মননের দ্বারা পাঠের একটু উচ্চস্তরে প্রবেশ করো সেদিন বুঝবে পদ্মজা ছিল একটা- অপন্যাস!!
পদ্মজার কথা মনে করে তুমি তখন দাঁত দিয়ে জিহ্বা চিপকে থুতু ফেলবে। তোমার লজ্জা মিশ্রিত হাসি পাবে সেদিন। এই আমাকেই দেখো যদিও বয়স খুব বেশি না আমার। তবুও আমি যখন সিক্স/সেভেনে পড়ি তখন হুমায়ুন আহমেদের বই প্রচুর পড়তাম। আমার মনে হতো হুমায়ুন আহমেদের চেয়ে ভালো লেখক আর নেই। পড়তাম মাঝেমধ্যে অন্যদের কিন্তু সেসব ভালো লাগতো না। আসলে সেসব রচনা পড়তে মগজের খুব পরিশ্রম হতো! তাই পড়তাম না। তারপর যখন একটু বড়ো হলাম, একটু একটু করে সাহিত্যকে বুঝতে শিখলাম তখন বুঝলাম- এতদিন যা পড়েছি তারমধ্যে খুব কম সংখ্যক পড়েছি ভালো বই! আহা আফসোস! তারপর নিজেই বুঝলাম উৎকৃষ্ট সাহিত্য ঠিক কোনগুলো। বুঝলাম আমি কোনগুলোকে সাহিত্য বলব আর কোনগুলোকে বলব না। সুখপাঠ্য বই যাকে বলে মানে পাঠককে সস্তা বিনোদন দেবার জন্য যেগুলো লেখা হয়, সেগুলো পড়া একেবারে বাদ দিলাম। বইপড়া খুবই সিরিয়াস একটা কাজ।
আমার সস্তা বিনোদনের দরকার হলে নাটক দেখি মুভি দেখি কিন্তু মানহীন সস্তা রচনা আর পড়ি না। ব্যাপার হলো প্রাথমিক স্তরের পাঠকেরা প্রথমে এসব বুঝতে পারে না। বলেও লাভ নেই। এক দুই দিনে এসব বলে বা লিখে বোঝানো যাবে না। আমাদের এলাকায় একটা কথা আছে- “নতুন নতুন চুল গজাইলে চেরাগ বাত্তি জ্বালাইয়া তা দেখে” । তোমাগো নব্য পাডক পাডিকাগণের হইছে সেই দশা!
যাইহোক বাসের মধ্যে থেকে গল্প বলার মতন সাবলীলভাবে কথাগুলো বললাম। বাস গন্তব্যস্থানে এসে পড়েছে, আমার নামতে হবে।
সবার পাঠ শুভ হোক।
___ সাদমান সোহাগ