সাতকাহন প্রথম,দ্বিতীয়,তৃতীয় পর্ব pdf file download (bangla পিডিএফ ডাউনলোড)
বইয়ের নাম: সাতকাহন ১ম,২য়,৩য় খন্ড
লেখক: সমরেশ মজুমদার
ক্যাটাগরি: সমকালীন উপন্যাস
ফাইল ফরম্যাট: pdf
file size: mb
মোট পৃষ্ঠা: ৪৮৪ পেজ
সাতকাহন বই রিভিউ
সমকালীন ছাত্রআন্দোলন ও রাজনৈতিক পটভূমি, সর্বভারতীয় কর্মজীবনের পরিবেশ ও প্রতিকূলতার জীবন্ত চিত্রাবলি।
সাতকাহন- একটা মেয়ের অনুপ্রেরণা যোগাতে এমন বইয়ের জুড়ি নেই। আত্মসম্মানবোধ এর ভিত শক্ত করে দেয়।
সমরেশ মজুমদারের এক সাহসী নারীর গল্প ‘সাতকাহন’।
সমরেশ মজুমদার রোমান্টিক উপন্যাস টিতে দীপাবলি শৈশবে হারিয়েছিলেন মা কে। মা মারা যাওয়ার পর বাবা তাকে অস্বীকার করে পিতৃত্ব ছেড়ে দেয়।
মাসি মেসো মশাই এর কাছেই মানুষ হয়েছে দীপাবলি।
হাসিখুশি দীপাবলি ডানপিটে স্বভাবের ছিল। পড়ালেখা শেষ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পরিবারের ইচ্ছের কাছে তার ইচ্ছে মিইয়ে যায়।
কৈশোরে রোগগ্রস্ত পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বৈধব্য গ্রহন করতে হয় বিয়ের দুইদিনেই।
চরম সাহসিকতায় একসময় সকল বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে সাফল্যের উচ্চ শিকড়ে পৌঁছায় দীপাবলি।
‘সাতকাহন’ বইটিতে দীপাবলি বাংলার লাখো দুর্ভাগা মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণার নাম।
বইটা একটা সম্পূর্ণ প্যাকেজ বলা যায়৷ তখনকার সামাজিক রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় একজন মেয়ের ছোট থেকে বড় হওয়ার পরও জীবনের উত্থান পতন থেকে শুরু করে তার মানসিকতা সহ সবকিছুর সমাহার ঘটেছে বইটিতে৷ পড়তে পড়তে বিরক্ত না হয়ে বরং অপেক্ষা করবেন পরে কী হবে সেটার জন্য৷ তবে বইটা বিশাল বলে অনেকের বোরিংও লাগে।
নায়িকা দীপাবলিকে অনেকে পছন্দ করেছে তার স্বাধীন মতামতের জন্য, অনেকে করেনি। পড়ার জন্য উপযুক্ত একটি বই এটা।
প্রিয় একটা বই। তিনবার পড়েছি। এখন তো মাঝে মাঝে নিজেকে দীপাবলি বলে মনে হয়। পড়তে বসলে খাওয়া দাওয়ার কথা মনে থাকবে না সিউর।
চোখ বন্ধ করে পড়ে ফেলেন, এক কথায় অসাধারণ 😍
“আজ সারাটা দিন সূর্যদেব উঠলো না।কাঠ-কয়লার মতো মেঘ ভূটান পাহাড় থেকে নেমে সাড়া আকাশ জুড়ে অনড় হয়ে রয়েছে সেই শেষরাত থেকে…………..”
সাতকাহনের শুরুটা হয়েছে এভাবেই।
কিছু বই!!
দীর্ঘ কলেবর শেষ করেও উঠতে মন চায় না।সমরেশের চা বাগান প্রিয়।আর আমাদের প্রিয় দীপাবলিকে(সাতকাহনের মূল চরিত্র)
লেখকের বাস্তব জীবনে দেখা একটি মেয়েকেই তিনি “সাতকাহন” এর বিশাল ক্যানভাসে নিজের মতো এঁকেছেন।বর্ননা দিয়েছেন যা পাঠকের শুধু হ্নদয়ই ছুঁয়েছে তা নয়।এরচেয়েও বেশি কিছু।
মানুষ জীবন পায় একটি অথচ এরকম বইয়ের সংস্পর্শে আসলে সাথে যুক্ত হয় আরো একেকটি অতিরিক্ত জীবন।
লেখক সেই সময়ের ছাত্রআন্দোলন,রাজনৈতিক পটভূমি, সর্বভারতীয় কর্মজীবনের পরিবেশ ও প্রতিকূলতার জীবন্ত বর্ননা এঁকেছেন বইটাতে।
সাতকাহন উক্তি
“শাসন শুনতে যতই খারাপ লাগুক, যে মানুষের জীবনে শাসন মানুষ থাকে না তার মত অভাগা আর কে আছে।”
“বিজ্ঞজনেরা বলে কখনও কাউকে ভালবাসলে তাকে বিয়ে করো না । ভালবাসা হল বেনারসী শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ।”
“প্রেমের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত বোধহয় তার শেকড় মনের গভীরে ছড়িয়ে পড়ে না”।
সাতকাহন- বাংলা সাহিত্য যারা পড়েছেন, পড়ছেন- বেশিরভাগেরই পঠিত এবং সুখপাঠ্য বলে বিবেচ্য।
সাতকাহনের মত গল্পকে সাদরে গ্রহণ করতে দেখলে যেমন ভালো লাগে, তেমনি খানিক মন খারাপও হয় যখন বিভিন্ন উপন্যাসের বাঘা বাঘা চরিত্র নিয়ে আলোচনায় দীপাবলির নাম খুব একটা আসে না। কেন আসে না তার উত্তর আমার জানা নেই।
বাংলা সাহিত্যে নারী চরিত্র আলোচনায় আসার ক্ষেত্রে, অমিত-লাবণ্য, মহেন্দ্র- বিনোদিনী- এভাবে নামকতক নেয়া যায় বটে। কিন্তু সেসবেই নায়ক-নায়িকা ব্যাপারটা চলে আসে।
তখন আপনা-আপনিই প্রশ্ন জাগে, নায়ক-নায়িকা/প্রেমিক- প্রেমিকা না হলে কি নারী চরিত্র আলোচনায় আসবে না?
অথচ নারী বিপ্লবের নামধারী শতাব্দীগুলোতে অন্তত একজন আত্মসম্মানী, লড়াকু নারীর ভূমিকায় কি দীপাবলিকে দাঁড় করানো যেত না?
জানিনা কিন্তু অনেকেই হয়ত এই লেখা পড়েই যা-তা মন্তব্য করে বসবেন। নারী-পুরুষ নিয়ে তাদের আবার এলার্জির শেষ নেই।
একটু ভালোভাবে পড়লেই বুঝতে পারবেন আমার ছোট্ট আলোচনাটা নারী-পুরুষ বিষয়ক নয়। একটা চরিত্রকে গ্লোরিফাই করা- না করা নিয়ে।
সাহিত্য বিষয়ক সাধারণ আলোচনায়/ দৈনন্দিন তাত্ত্বিক বক্তব্যে দীপাবলিকে যথেষ্ট পরিমাণে বিশেষায়িত করা হয় বলে মনে করেন কি?
যদি মনে করেন এবং মনে না করেন, উভয় ক্ষেত্রেই নিজের সুচিন্তিত মতামত ও ভাবনা জানানোর অনুরোধ রাখছি।
ধন্যবাদ।
বাস্তবতা আর সাহিত্যের মিলন ঘটবে একসাথে এমন একটি বই যদি আপনি খুঁঁজে থাকেন, তবে বাংলা সাহিত্যের সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘সাতকাহন’ নিঃসন্দেহে আপনার জন্যই।
দীপাবলী বন্দোপাধ্যায় নামের নারী-চরিত্রটির মাধ্যমেই গল্পটি নিয়েছে বাস্তবরুপ, এগিয়ে গিয়েছে সমাপ্ত পর্যন্ত ।
নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মেয়েটিকে বারবার পদস্খলন করতে চেয়েছে জীবনের চোরাস্রোত । কিন্তু এসব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠেছে সে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথেই।শুধু বড় হয়ে ওঠা নয়, কর্মক্ষেত্রেও যে কতরকম বাঁধাবিপত্তি আসে তা ঔপন্যাসিক অত্যন্ত সূচারুভাবে তুলে ধরেছের প্রতিটি পরতে পরতে । বাল্যবিবাহের ধোঁকায় পড়ে যে মেয়েটির জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে নিয়েছিলো, সেই মেয়েটি যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য । পরিবার,কর্মক্ষেত্রসহ প্রত্যেকটি জায়গায় তার বলিষ্ঠতা চোখে পড়ার মতই। বিশেষ করে, “অন্যায়ের সাথে কোনো আপোষ নেই ” নীতিটি তার মধ্যে চমৎকারভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠে।
সত্যি কথা বলতে কি, দীপার চরিত্রে ডুবে গিয়ে আমি অনেক জায়গায় ইমোশনাল হয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছি। এতই ভেতরে চলে গিয়েছিলাম যে চোখ থেকে অশ্রু বের হয়ে গিয়েছিল, কন্ঠে আবেগের প্রাবল্য এসে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে কী, এমন কিছু লেখা আছে, এমন কিছু বর্ণনা আছে, এমন কিছু লেখক আছেন যারা পাঠকের মনের গহীনে ঢুকে পরেন শক্তি দিয়ে। সমরেশ বাবু তেমনই একজন লেখক।