পথের পাঁচালী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Pdf Download – pather panchali bengali pdf download
বইয়ের নাম: পথের পাঁচালী Pdf book download
লেখকের নাম: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদকের নাম: ড. গিয়াস শামীম
প্রকাশনী: ভাষাপ্রকাশ
ক্যাটাগরি: চিরায়ত উপন্যাস
পথের পাঁচালী উপন্যাসের সারমর্ম/ বই রিভিউ
মন ছোঁয়ে যাওয়ার মতো,বার বার পড়তে চাওয়ার মতো একটা বই পথের পাঁচালী। বিভূতিভূষণের লেখার মায়ার জালে জড়িয়ে পড়তে আমার বেশি সময় লাগেনি। গল্পের প্রতিটি চরিত্র এমন জীবন্ত মনে হয় যেনো আমার চোখের সামনেই ঘটনা গুলো ঘটছে।এই জন্যই হয়তো উনি বিভূতিভূষণ !
এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে মনে প্রগাঢ় প্রশান্তি এনে দেয়।
পথের পাঁচালী উপন্যাসের সারমর্ম বলতে গেলে এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অপু। আর দূর্গা হচ্ছে সেই অপুর বোন। দূর্গার সেই দুরন্তপনা, চাঞ্চল্যতা যেনো আমারই ছেলে বেলার প্রতিচ্ছবি।নিজের শৈশবের আনন্দ,উচ্ছ্বাস,বেদনা খুঁজে পেয়েছি, খুব স্মৃতি কাতর হয়েছি দূর্গা ও অপু চরিত্রের মাধ্যমে।
দূর্গার মৃত্যুটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়েছিলো।এক বুক হাহাকার যেনো বুকে ঘাপটি মেরে ধরেছিলো।অপুর সাথে যেনো আমিও সে কষ্ট ভাগ করে নিয়েছিলাম।খুব মায়া হতো সেই ছোট্ট অপুর জন্য।
অপু চরিত্রটা আমাকে ভীষনরকম মুগ্ধ করে। সে কি অসাধারণ অপুর ব্যক্তিত্ব! ভালোবেসে যাকেই আকড়ে ধরে একে একে সবাই চলে যায়। অপু তবুও ভেঙে পরেনা।দুঃখ,হতাশা,প্রতিকূলতা অপুর কাছে জয়ী হতে পারেনা।
আমি অপুর ব্যক্তিত্বে আকর্ষিত হয়ে গেলাম।অপু যেনো আমার মন জিতে নিলো।অপুর জন্য আরো বেশি বেশি মায়া হতে লাগলো।সে যখন এক এক করে সব হারিয়ে নিঃস্ব তখন ইচ্ছে হচ্ছিল অপুর একটা হাত আমি ধরি।কল্পনায় বোধহয় আমি তাই করে ছিলাম।
এবার অপুর কাছ থেকে আমার শেখার পালা…..!!
কারোর আপনজন সারাজীবন বেঁচে থাকেনা।মৃত্যু এবং পারিপার্শ্বিকতায় আপনজনেরা জীবন থেকে হারিয়ে যায়। চিরন্তন এই সত্যটা সহজ ভাবে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়,সেটা আমি অপুর কাছ থেকেই শিখেছি।
দুঃখ,হতাশা,সংকট,প্রতিকূলতা এগুলোর মোকাবিলা করে, জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ধরে রেখে সামনে এগিয়ে চলতে হয়।
আবেগ,অনুভূতি জীবনেরই অংশ।এগুলোকে এড়িয়ে চলা যায়না,আবার আকড়ে ধরেও বসে থাকতে হয়না।জীবনকে চলমান রাখতে হয়।
জীবনের সব পরিস্থিতিতে নিজেকে চলমান রাখার শিক্ষাটাও আমি অপুর থেকে পেয়েছি।
পথের পাঁচালী পুরো গল্প/সমালোচনা:
“পাঁচালী” এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে গীতিকাব্য। বিভূতিভূষণ অপুর জীবনের পথ যার সাথে জড়িয়ে আছে গ্রামের সংসার জীবন আর প্রকৃতি, তার পাঁচালী লিখেছেন। এই উপন্যাসে বিভূতিভূষণ বিস্তর বর্ণনা করেছেন প্রকৃতির, দৃশ্যের। এ নিয়ে নাকি অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, উপন্যাসের গতি কমে গেছে বা পড়ায় একঘেয়েমি চলে এসেছে। আমার কাছে অবশ্য এই বর্ণনা অবশ্য এবং জরুরি মনে হয়েছে। “পথের পাঁচালী” বইটা কে লেখক যেন দেখিয়েছেন একটা ঘরের মত, সেই ঘরে প্রবেশের আগে ঘরের উঠোন পেরুতে হয়। উঠোনের আলপনা বা চালকুমড়ো লতার ফুলটুকুর সৌন্দর্য তিনি পাঠকদের পুরোপুরি উপলব্ধি করিয়ে তবে গৃহ প্রবেশ করিয়েছেন।
অপু আর দূর্গার সাথে পুরো গ্রাম চষে ফেলা যাবে এই পথের পাঁচালী উপন্যাস পড়তে পড়তে। মায়ের আগলে রাখা শাসন মাখা আদর, ভাই বোনের দুষ্টুমি আর তেপান্তর পেরোনো স্বপ্ন সবকিছুই মন ছুঁয়ে যাবে। সাথে মানবজীবনের আর সমাজের বিভিন্ন বৈষম্য, কুসংস্কার, অন্যায় এর চিত্র নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইয়ে। বই পড়া শেষে মনে হবে যেন নিশ্চিন্দপুর ঘুরে বেড়িয়ে আসা হলো। গ্রাম বাংলার অতি সাধারণ অথচ অসাধারণ যেসব সৌন্দর্য সাধারণ দৃষ্টিতে ধরা পড়ার মত নয়, এই বই পড়ার পর সেগুলোর মর্ম বুঝবেন পাঠকগণ। এজন্যই বোধ হয় ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসটি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘এর থেকে শিক্ষা কিছুই হয়নি, দেখা হয়েছে অনেক- যা পূর্বে এমন করে দেখিনি’। দুঃখ আর দৈন্যের মধ্যেও জীবন যে কত পসরা সাজায় সংসারের তাগিদে! প্রকৃতি ও যেন তেমনই।
ছোট্ট কোমল হৃদয় এর অপু- দূর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়া কি যে বিরাট বিলাসিতা!!
সেই বিলাসবহুল আনন্দ তে পাঠক ও যোগ দিবে মনের অজান্তেই। তাই পথের পাঁচালী পুরো উপন্যাস pdf download করে জলদি পড়ে ফেলুন।
পথের পাঁচালী উক্তি/ ডায়লগ
এই উপন্যাসের প্রাণপ্রতিমা দুর্গা কে নিয়ে এই উপন্যাসে লেখা বিভূতিভূষণের সবচেয়ে সেরা ডায়ালগ এবং শেষ উক্তিটি হলো,
পথের পাঁচালী শেষ লাইন:
‘আকাশে নীল আস্তরণ ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে অনন্তের হাতছানি আসে পৃথিবীর বুক থেকে ছেলেমেয়েরা চঞ্চল হইয়া ছুটিয়া গিয়া অনন্ত নীলিমার মধ্যে ডুবিয়া নিজেদের হারাইয়া ফেলে পরিচিত ও গতানুগতিক পথের বহুদূর পারে কোন পথহীন পথে দুর্গার অশান্ত, চঞ্চল প্রাণের বেলায় জীবনের সেই সর্বাপেক্ষা বড় অজানার ডাক আসিয়া পৌঁছিয়াছে’
পথের পাঁচালী online reading/Pdf free ডাউনলোড লিংক: Link1 – link2 or Click here to download Pather Panchali by Bibhutibhushan Pdf
Faq
- পথের পাঁচালী উপন্যাসের প্রকাশকাল?
১৯২৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রঞ্জন প্রকাশনালয় থেকে সজনীকান্ত দাস কর্তৃক পথের পাঁচালী গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়.
2. কুঠির মাঠ দেখতে যাবার পথে কী দেখে? অপু সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিল?
উত্তর-খরগোশ।
3. এই দ্যাখো মা আমার সেই মালাটা।’—বক্তা কে? কখন সে একথা বলেছিল?
উত্তর-বক্তা হলো টুনু।
যখন টুনুও সতু দুজনে মিলিায়া দূর্গার টিনের পুতুলের বাাক্সটা ঘর হইতে বাহির করিয়া আনিয়া রোয়াকে নামাইয়া এবং টুनू একজোড়া পুতির মালা বাহির করিয়া একথা বলিয়াছিল।