মানসিক রোগ ও সাইকোথেরাপি pdf (eBook)
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা শুধুমাত্র একটি মানসিক ব্যাধি।এটি আপনার শরীর, সামাজিক অবস্থান এবং সবকিছু ওলটপালট করে দিতে পারে।
- বইয়ের নাম: মানসিক রোগ ও সাইকোথেরাপি
- লেখক: ডা. দেওয়ান ওয়াহিদুন নবী
- পাবলিকেশন্স: অঙ্কুর প্রকাশনী
- ধরণ: মন, মানসিক ও কাউন্সেলিং
মানসিক রোগের বই pdf ebook লিংক: লিনক_০১ বা, Drive link০২
মানসিক রোগের নাম
- বিষণ্নতা,
- প্যানিক অ্যাটাক,
- অ্যাংজাইটি,
- বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার,
- সিজোফ্রেনিয়া, সাইকোসিস ডিজঅর্ডার,
- সাবস্টেন্স অ্যাবিউজ,
- ওসিডি, হেলথ অ্যাংজাইটি,
- পোস্ট ট্রমাটিক ট্রেস ডিজঅর্ডার,
- ফোবিয়া, কনভারশন ডিজঅর্ডার,
- পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার
মানসিক রোগ হচ্ছে এক ধরনের মনের রোগ. প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এই রোগের চিকিৎসা জন্য লাগে কাউন্সেলিং, কখনবা ওষুধ প্রয়োজন .
মানসিক রোগের চিকিৎসা একটি দলগত প্রচেষ্টা বা টিমওয়ার্ক রয়েছে যাকে বায়ো-সাইকো-সোশ্যাল বা মনো-জৈব-সামাজিক পদ্ধতি বলা হয়।
মানসিক রোগের চিকিৎসায় তিন প্রক্রিয়া নিম্নরূপঃ
- ওষুধ, যা কাজ করে রাসায়নিক পদার্থ বা নিউরোট্রান্সমিটারের ওপর,
- সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিং, যা কাজ করে জ্ঞানীয় বিকাশ (কগনিশন) ও আচরণ ও মনের গড়নের ওপর,
- সামাজিক সহায়তা, যা দেয় বাড়তি নিরাপত্তা আর বিশেষ প্রণোদনা।
মানসিক রোগের শারীরিক লক্ষণঃ
- ক্লান্তি ভাব
- হঠাৎ হঠাৎ করে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা
- পেশী ব্যথা এবং ব্যথা
- অনেকদিন ধরে নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে গুটিয়ে রাখা
- টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা
- অন্যদের সঙ্গে একেবারে কথা বলতে না চাওয়া, সবার সাথে ঝগড়া করা
- গায়েবি আওয়াজ বা কথা শুনতে পাওয়া
- অন্যদের অকারণে সন্দেহ করতে শুরু করা
- গোসল বা দাঁত মাজার মতো নিয়মিত প্রাত্যহিক কাজ করা বন্ধ করে নিজের প্রতি যত্ন না নেয়া
- যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া সেসব কাজে নিরানন্দ ও আগ্রহ কমে যাওয়া
- সামাজিক সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া
- নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা বা নিজেকে দায়ী মনে হওয়া সবকিছুতে
- সিদ্ধান্তহীনতা বা মনোযোগ কমে যাওয়া এবং খুব তীব্র হলে আত্মহত্যার চিন্তা পরিকল্পনা ও চেষ্টা করে
- অতিরিক্ত শুচিবায়ুগ্রস্থ হয়ে ওঠা
- ঘুমের সমস্যাঃ ঘুম অস্বাভাবিক কম বা বাড়তে পারে
- খাবারে অরুচি তৈরি হওয়া বা রুচি বেড়ে যাওয়া
- বাসার, অফিসের বা পেশাগত কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
- ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি
সাইকোথেরাপি খরচঃ থেরাপির গড় খরচ প্রতি সেশনে প্রায় ৫০০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কাউন্সেলিং কিভাবে করা হয়?
আজকাল “কাউলেলিং, কথাটা খুবই প্রচলিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা হচ্ছে না, মানসিক অশান্তি-উদ্বেগ, লেখাপড়ায় ছেলেমেয়ে পিছিয়ে পড়ছে, পাশ করবার পর কী করবে, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে চাইছে–সবেতেই
কাউন্সেলিং-এর সহায়তা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
সম্মুখীন হয় তখন অনেক সময় কী করবে, কী ভাবে সমস্যার মোকাবিলা করবে বুঝে উঠতে পারে না। তখন আসত্বীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব অথবা অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির পরামর্শ নিয়ে থাকে।
অনেক সময় দেখা যায় কোনো মানসিক ছন্দ, সমস্যা বা মনের দুঃখকষ্টে কোনো একজনের কাছে কথা বলার ফলে মানস্লিক ভার কিছুটা কমে যায়। আমরা মনের দিক থেকে হালকা বোধ করি। সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুখদুঃখের কথা,
মনের ব্যথা কোনো এক বিশ্বীসযোগ্য মনের কাছাকাছি মানুষকে বলে শাস্তি পাই, মনের ভার, কষ্ট কমে- অর্থাৎ সহায়তা (কাউন্সেলিং) আক্ষরিক অর্থে না হলেও আমাদের জীবনে অনেক সময় ঘটে থাকে। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে গেলে কোনো না কোনো সময়ে কাউন্সেলিং প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে যিনি পরামর্শ, সহায়তা করছেন তিনি হয়তো জানেন না যে তিনি অনেকটা কাউন্সেলর বা পরামর্শদাতার কাজ করে চলেছেন। কিন্তু সত্যিকারের মনোবিজ্ঞানভিত্তিক সহায়তা (কাউন্সেলিং) একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি এবং এ বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি এই পদ্ধতির মাধ্যমে সহায়তা করে থাকেন। প্রকৃত অর্থে কাউন্সেলিং কিন্তু উপদেশ, পরামর্শ বা প্রস্তাব অথবা পথ-নির্দেশ নয়। একে সহায়তা বলা যেতে পারে।
কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তি তাঁর পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উপদেশ, নির্দেশ, পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যাকে উপদেশ বা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সে তা মেনে চলবে ভাবা হলেও সব সময় বাস্তবে তা ঘটতে নাও পারে। এর জন্য উপদেশ বা নির্দেশ অনেক সময় সফল হয় না। স্কুলে শিক্ষক একটি অমনোযোগী ছাত্রকে নিয়মিত স্কুলের পড়া করতে বললেন।
সাইকোথেরাপি কিভাবে দেওয়া হয়
একেক জনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের সাইকোথেরাপি কার্যকরী ভূমিকা রাখে:
- ১। জ্ঞানভিত্তিক আচরণীয় থেরাপি (সিভিটি)- এই থেরাপিতে একজন থেরাপিস্ট রোগীর সেই চিন্তাধারাগুলো খুঁজে বের করবেন যা তার ব্যবহার, আচরণ এবং নিজের প্রতি বিশ্বাসে খারাপ প্রভাব ফেলছে।
- ২। সাইকোডাইনামিক থেরাপিঃ এটি সাইকোথেরাপির একটি ধরন যেখানে রোগীর অতীত থেকে শুরু বর্তমান জীবন পুরোটাই থেরাপিস্ট অনুসন্ধান করবেন এবং দিনের পর দিন কীভাবে রোগীর মনের পরিবর্তন হয়েছে, কীভাবে রোগী তা পার করেছেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।
- ৩। লাইট থেরাপি- কৃত্রিম আলোর সাহায্যে ডিপ্রেশনের চিকিৎসা করার যে উপায় তাকেই লাইট থেরাপি বলা হয়।
- ৪। ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপি (ইসিটি)/ শক থেরাপি- যাদের ডিপ্রেশন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তাদের চিকিৎসায় ইসিটি ব্যবহার করা হয়। এই থেরাপিতে রোগীর মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উজ্জীবিত করার জন্য তার কপালে খুব অল্প এবং নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে বৈদ্যুতিক প্রবাহ দেওয়া হয়।
- ৫। ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় মেডিটেশন থেরাপি- ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায় কাজের চাপ, ভয়, রাগ ইত্যাদি আর মেডিটেশন সাহায্য করে কীভাবে এসব অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
মানসিক রোগের প্রতিকার
আপনার মনকে পুনরুজ্জীবিত করতে নিম্নোক্ত পাঁচটি গাইডলাইন মেনে চলুনঃ
- আপনার আনন্দকে অগ্রাধিকার দিন: কী আপনাকে আনন্দ দেয় ওই কাজগুলো আবিষ্কার করুন। হোক সেটা আপনার বন্ধুর সাথে অবসরে হাঁটা। আপনাকে খুশি করে এমন ক্রিয়াকলাপগুলিতে যুক্ত থেকে নিজের মনকে সতেজ করুন।
- ভালো কাজে ব্যস্ত থাকুন: আপনার মনকে সব দিকে ঘুরতে দেবেন না। মানসিক ওভারলোড কমাতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর মানসিক অবস্থা তৈরি করে স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে এক সময়ে শুধুমাত্র একটি কাজে মনোনিবেশ করুন।
- মননশীলতার শক্তি উন্মোচন করুন: মানসিক প্রশান্তির জন্য আপনার রুটিনে মননশীলতা অন্তর্ভুক্ত করা একটি গেম-চেঞ্জার হতে পারে। মেজাজের প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করে, এটি আপনার মানসিক সুস্থতার অস্ত্রাগারে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
- হোলিস্টিক হেলথ, এলিভেটেড মাইন্ড: আপনার মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করুন। আপনার শরীরের চাহিদাগুলিকে অগ্রাধিকার দিন, পর্যাপ্ত ঘুম (অন্তত ৮ ঘন্টা) থেকে শুরু করে প্রাণবন্ত সকালের ব্যায়ামগুলিকে করা, সেগুলিকে আপনার পছন্দ এবং ক্ষমতা অনুসারে তৈরি করুন৷
- পুষ্টি ও পুষ্টি: আপনার শরীর ভালো রাখতে যত্ন সহকারে কিছু খাবার আহারে মনোবিনোশ করুন।
এই ছোট কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপগুলো আপনার মানসিক প্রশান্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।