তাবিজ ব্যবহার করা জায়েজ কি না? জেনে নিন
যদি সরাসরি উত্তর দিতে বলেন যে, তাবিজ ব্যবহার করা যাবে কি না? তাহলে বলবো তাবিজ ব্যবহার শিরক.
নকশা বা বিভিন্ন শব্দ কাগজে লিখে ব্যবহার করা স্পষ্ট হারা*ম এভাবে ব্যবহার এর কোনো কনসেপ্ট কুরআন ও হাদীসের মূলনীতিতে ইসলামিক তাবিজ ব্যবহার পাওয়া যায় না.
ইসলামিক তাবিজ ব্যবহার এর মাসালা
১.রাসূল স. জিনের রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে উপকারী স্টেপ নিয়েছে, সেখানে দ্বর্ব (আঘাত করা ছিল)+তেলাওয়াত করা ছিল।
উপকারীতা:- জিন ও যাদুর রোগীদের শারীরিক বিভিন্ন অরগান পয়েন্টের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার জায়গায় হাত রোগী যদি হাত রেখে তেলাওয়াত করে এতেও পেশেন্ট উপশম পেয়ে থাকে।
-আবার শারীরিক বিভিন্ন জায়গায় আয়াত পড়ে রোগী যদি বারবার ফুঁক দেয় তাতেও উপকার পাওয়া যায়।
সবজায়গায় তেলাওয়াত এর গুরুত্ব বেশি। তেলাওয়াত এর ইফেক্টিভিটি ছাড়া জিন ও যাদুর সমস্যা থেকে পরিপূর্ণ সুস্থতা পাওয়া সম্ভব না।
২.আইয়ুব আ: নিজেও জিনের স্পর্শের কারনে(তথা জিনের মাস এর প্রভানে কুষ্ঠ রোগ হয়েছিল)যার ট্রিটমেন্ট পরবর্তীতে মাটির নিচ থেকে উৎসারিত প্রবাহিত পানি দিয়ে গোসল করা ছিল।
-এছাড়া হাদীসে বদনজর থেকে বাঁচার জন্য কুরআন এর আয়াত পড়া বা হাদীসের দোয়া পড়ে গোসলের কথা হাদীসে এসেছে। কোথাও কোনো আয়াত কিংবা কোনো হাদীসে দোয়া বা কুরআন এর আয়াত (খাতায় কিংবা পৃষ্ঠায় লিখার কথা আসে নি)
৩.রাসূল স. কে সালাতরত অবস্থায় এক জিন আক্রমণ করতে উদ্যত হলে তখন রাসূল সাঃ (লানা’তুল্লাহ) বলে জিনটিকে ধরে ফেলল এবং বলল যে, আমার ভাই সুলাইমান নবীর বৈশিষ্ট্য ছিল জিনদের উপর আধিপত্য করা, আর এজন্য রাসূল সাঃ তখন যেই জিনকে ধরেছিল তাকে ছেড়ে দিয়েছিল (অন্যথায় মদিনায় বেঁধে রাখতে চেয়েছিল)
-এখানেও স্পষ্ট শয়*তানকে ধরাশায়ী করতে পরিপূর্ণ কালামের চর্চা দেখা যাচ্ছে। তথা তেলাওয়াত এর গুরুত্ব সর্বত্ত দেখা যাচ্ছে
৪.সূরা ফালাক এবং নাস নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং শানে নুযুলে এবং তাফসীর গ্রন্থে স্পষ্ট বলা আছে :-
-রাসূল স. যাদুতে আক্রান্ত হলে,তখন এই দুই সূরা নাযিল হয় এবং ১১ টি আয়াত পড়লে যাদু কেটে যায় এছাড়া যারওয়ান কূপ থেকে যাদু উঠানো হয়েছিল।
-এখানেও কুরআন তেলাওয়াত গুরুত্ব বেশি এবং তথা তেলাওয়াত এর ভূমিকা বাদে জিন ও যাদুর রোগীর কখনোও সুস্থতা পাওয়া সম্ভব না।
-যাদুর বিভিন্ন বস্তু পেলে সেটা নষ্ট করতে হয় আর না পাওয়া গেলে তখন রুকইয়াহ কন্টিনিউ করতে হয়। এছাড়া প্রত্যেক যাদুকে শরীরে এক্টিভ করার জন্য খাদেম জিন থাকেই তো সেই খাদেম জিনকে কিভাবে শরীর থেকে বের করা যাবে এটাই হচ্ছে মূল ট্রিটমেন্ট। কেননা খাদেম বের না করলে সমস্যা বাড়তেই থাকবে এবং খাদেম জিনটা স্বপ্নে খাবার খাওয়াবে এবং খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে যাদু খাওয়াবে+খাদেম শরীরে প্রবের করাবে। এজন্য একজন রোগীর পরিপূর্ণ ১০০% সুস্থতার জন্য খাদেম জিন শরীর থেকে বের করা হচ্ছে মূল
বিষয়।
৫. কুরআন ও হাদীসের কোথাও কুরআন এর আয়াত বা হাদীসের দোয়া খাতায় বা পৃষ্ঠায় লিখার ব্যপারে কোনো দলিল নেই।
৬.সূরা বনী ইসরাঈল এর ৮২ নম্বর আয়াতেও মহান আল্লাহ পুরো কুরআন কে শিফা ঘোষনা করেছে।এখানেও তেলাওয়াত এর গুরুত্ব অপরিসীম (সুস্থতা পাওয়ার জন্য সবথেকে বেশি তেলাওয়াত এর ভূমিকা বেশি)
-কাজেই রুকইয়াহ এর উসূল(মূলনীতির) মূল জায়গার মধ্যে থেকে কাজ করে যেতে হবে। সন্দেহ হয় এমন বিষয় উপকৃত হলেও সেটা নাজায়েয।
-সবকিছুর মূল ভিত্তি কুরআন ও হাদীস.(ফতওয়া দিতে গেলেও প্রত্যেক শাস্ত্রের মূলনীতি জেনে ফতওয়া দেওয়া লাগে)নিজের মত করে ইজতিহাদ করেই ফতওয়া দেওয়া যাবে না।
উলামারা রুকইয়াহ প্র্যাকটিস করার ক্ষেত্রে মূলনীতি দিয়েছে:-
- ১.তেলাওয়াত এর মাধ্যমে রুকইয়াহ করতে হবে।
- ২.হাদীসের দোয়া সমূহ দ্বারা রুকইয়াহ করতে হবে
- ৩.রুকইয়াহ তে তেলাওয়াত করার সময় এমন ভাষা (যেটা আরবী হবে) এছাড়া মাতৃভাষায় বা নিজ নিজ ভাষায়ও দোয়া করা যায়,দোয়া করার মূলনীতিতে নিজ ভাষায় মানুষরা দোয়া করতে পারে। তবে সর্বোত্তম দোয়া হচ্ছে সরাসরি কুরআন এবং হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহ।
- ৪.রাক্বী বা প্র্যাকটিশনার এমন শব্দমালা উচ্চারন করবে যেটার অর্থ পরিচিত হবে এবং স্পষ্ট বুঝা যাবে।
- ৫.রাক্বীকে এই বিশ্বাস করতে হবে যে, সুস্থতা আল্লাহ তায়ালাই দিবে কোনো রাক্বী রোগীকে সুস্থ করতে পারবে না।
রুকইয়াহ এর বিভিন্ন কিতাবে জাফরান কালি দ্বারা কুরআন এর আয়াত বা হাদীসের দোয়া কাগজে লিখে ওই কাগজ পানিতে চুবিয়ে ওই পানি খাওয়া জায়েয উালামরা ফতওয়া দিয়েছে..(তাই বলে মনমতো বা নিজের মত করে কাগজে কুরআন এর বিভিন্ন শব্দ বা আয়াত লিখবে আর অস্পষ্ট বিষয় যেটার বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের কোনো নির্দেশনা নেই)এভাবে অস্পষ্ট বিষয়কে নিজের মত করে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
-উসূল এর মূল পয়েন্টে থেকে এবং রুকইয়াহ এর শর্তগুলোর মধ্যে থেকে কাজ করে যেতে হবে এটাই নিরাপদ এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকার পাথেই এবং কুরআন ও হাদীসের স্পষ্ট বিষয়ের মধ্যে থাকা যাবে।
তাবিজ ব্যবহার করা যে জন্য হারাম
১.নকশা বা কোডিং এগুলো সরাসরি হারা*ম(এগুলো গনকবিদ্যার মূলনীতিতে পড়ে)
২.তাবি*জ এগুলো সরাসরি হারাম এগুলো নেওয়া যাবে না
৩.সূতা ঝুলিয়া রাখা,অস্পষ্ট বিষয় তেলাওয়াত করা অথবা অস্পষ্ট বিষয় এগুলো ব্যবহার করাও হারা*ম
-এজন্য খাতায় কুরআন এর আয়াতের শব্দ লিখা এভাবে ব্যবহার না করাই উচিৎ। এভাবে অস্পষ্ট বিষয় হয়ে যায়।
الرقية الشرعية واضح موضو لهذا شروط اصلية الرقية يجب تبع.
রুকইয়াহ শরইয়্যাহ একটি স্পষ্ট বিষয় আর এজন্য রুকইয়াহ এর মৌলিক শর্ত অনুসরণ করা উচিৎ।
Muhammad Ali